স্কুল - কলেজ , পাড়া মহল্লা ,খেলার মাঠ, বিশ্ববিদ্যালয় সবখানটাই যেন এখন কথার সরগম । মানুষের মুখে একটাই কথা নির্বাচন । আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ধার্য করেছে নির্বাচন কমিশন (সিইসি) ।এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মানুষের মনে উৎকন্ঠা ও উন্মাদনার কমতি নেই । ব্যানার , পোস্টার , ফেস্টুনে সয়লাব শহর ,বন্দর -গ্রাম । এত উৎসব আমেজ থাকার পরও জনমনে এখন একটাই প্রশ্ন নির্বাচন কি সুষ্ঠু হবে .....???? আমাদের দেশের রাজনৈতিক ইতিহাস এটা বলেনা , নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া এদেশে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হয়নি ।
বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ১০ বার জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুটি ছিল একতরফা: বিএনপি সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে গঠিত মহাজোট সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন। এ ছাড়া ১৯৮৮ সালের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অধিকাংশ দল অংশ নেয়নি। বাকি নির্বাচনগুলো মোটামুটি প্রতিযোগিতামূলক হয়েছে।সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে চারটি নির্বাচন। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্য হবে সেটাই দেখবার বিষয় ।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি সরকার না ভেঙে বা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় । কেননা আমাদের রাজনীতিতে এটির চর্চা হয়নি বলতে গেলে । যদিও যে দুইবার হয়েছিল সেটাও ছিল একতরফা নির্বাচন । তাই সরকার না ভেঙে নির্বাচন দেয়াটা প্রহসন ছাড়া কিছুই নয় । দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন বলতে গেলে পঙ্গু যদিও আমরা দৃশ্যমানভাবে দেখছি নির্বাচন কমিশন তাদের যথেষ্ট শক্তি প্রদর্শিত করছে ইদানিংকালে তারপরও দিনশেষে তারা সরকারের অধীনস্থ স্বাধীন একটা কমিশন ছাড়া কিছুই নয় ।কথাটা কেন বললাম তার ছোট একটা উদাহরণ দিই –
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন বিবৃতিতে জানিয়েছে বিএনপি নির্বাচনের আচারণ বিধি লঙ্ঘন করছে । তারা মোটর সাইকেল ও লোকজন নিয়ে শোডাউন দিয়ে মনোনয়ন ফরম কিনছে যা আইন বহির্ভুত । এখানে কমিশন অনেক দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের লোকজন যখন শোডাউন দিয়ে রাস্তা দখল নিয়ে মনোনয়ন ফরম কেনা শুরু করেছিলেন তখন তাদের কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার ছিল ।মনে রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে , তারা একটা স্বাধীন ও শক্তিশালী সংস্থা তাদের কাজ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সমান দৃষ্টিকোন দিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনা করা ।এটা অপ্রিয় সত্য যে নির্দলীয় নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা বিলোপের কারণে নির্বাচনী মাঠ সমতল রাখার ধারণায় যে বিরাট ঘাটতি পড়েছে, তা কার্যকরভাবে দূর করা যায়নি।সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে তাই জনমনে প্রশ্ন রয়েই গেছে ।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:০৬