somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ গোফরান
জামাত শিবির,ধর্মান্ধ মোল্লা ও একটি নির্দিষ্ট ধর্ম বিদ্বেষী মুক্ত ব্লগ।আপনার প্রতি আমি কেমন ব্যাবহার করব তা আপনার আচরণের উপর নির্ভর করবে।সত্য মিথ্যা যাচাই না করে অন্যের কথার উপর ভিত্তি করে যদি আমার উপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন,তাহলে আমার বন্ধু হওয়ার দরকার নেই।

মোরা এক ভাষাতে মাকে ডাকি, এক সুরে গাই গান॥ মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মোসলমান।

২০ শে জুন, ২০২২ রাত ১১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ড্রেস - আনজারা। মেক আপ জুয়েলারী স্টাইলিং ফটো শ্যূট আমার এজেন্সি।

চে গুয়েভারার প্রতি – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, " আমারও কথা ছিল ছিন্নভিন্ন লাশ ও গরম রক্তের ফোয়ারার মধ্যে বিজয়-সঙ্গীত শোনাবার-কিন্তু আমার অনবরত দেরি হয়ে যাচ্ছে! এতকাল আমি এক, আমি অপমান সয়ে মুখ নীচু করেছি, কিন্তু আমি হেরে যাই নি, আমি মেনে নিই নি, আমি ট্রেনের জানলার পাশে, নদীর নির্জন রাস্তায় , ফাঁকা মাঠের আলপথে, শ্মশানতলায় , আকাশের কাছে, বৃষ্টির কাছে, বৃক্ষের কাছে, হঠাৎ-ওঠা ঘূর্ণি ধুলোর ঝড়ের কাছে , আমার শপথ শুনিয়েছি, আমি প্রস্তুত হচ্ছি, আমি সব কিছুর নিজস্ব প্রতিশোধ নেবো।আমি আবার ফিরে আসবো" ।

দেশের কিছু মানুষের আচরণে আমারও এমন কবিতা লিখতে ইচ্ছা করে। কিন্তু কবিতা লিখতে জানি না। যদি পারতাম প্রতিদিন কবিতার মাধ্যমে এই নোংরা মানুষগুলোর দিকে ঘৃণার থু থু নিক্ষেপ করতাম। এরা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম কে মুসলিম বিশ্বের অহংকার মনে করে কিন্তু বিদ্রোহী কবির লেখা " মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মোসলমান। মুসলিম তার নয়ন-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ॥" - কবিতাটির প্রতি বিন্দু মাত্র সম্মান প্রদর্শন করেনা।

আমার একজন প্রিয় ব্লগার মোস্তফা কামাল পলাশ ভাই একবারএকবার লিখেছিলেন ‘‘সাম্প্রদায়িকতা একটা মানসিক ব্যাধি আর অসাম্প্রদায়িকতা হলো মানবিক গুণ৷ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মানব চরিত্রের উপরোক্ত দুটি মানবিক গুণাবলি মানুষ অর্জন করে শৈশব ও কৈশোরে তার বাবা-মা, ভাই-বোন ও আত্নীয়স্বজনদের কাজকর্ম দেখে; আর যৌবন বয়সে তার পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে৷'' এরপর পলাশ ভাই তাঁর শৈশবের কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘‘আমি সবসময়ই গর্ব করে সকলকে বলি, আমার শৈশবে আমি ঐভাবেই বেড়ে উঠেছি৷ ধর্মভীরু কিন্তু অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মা-বাবা, দাদা-নানাকে দেখে শিখেছি...যখন পত্রিকার পাতা খুলে দেখি শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বী হবার কারণে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে তখন ভাবি, কারা মানসিকভাবে অসুস্থ সেই মানুষ? কোন পরিবেশে তারা বেড়ে উঠেছে? তাদের বাবা-মারাই বা কোন শিক্ষা তাদের দিয়েছেন?''

-

সবাই জানেন গত দুর্গা পূজায় কোথাকার কোন পাগল মন্দিরে কোরান রেখে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাঁধাতে চেয়েছিল। এক শ্রেণীর মানুষ উভয় ধর্মেই আছে যারা এক ধর্ম অন্য ধর্মের লোকদের সহ্য পর্যন্ত করতে পারেনা। দেশের এক শ্রেণীর মানুষের একমাত্র কাজই যেন - সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করা। এরা ঘৃণ্য। হিন্দুদে পূজায় শুভেচ্ছা জানানো যাবেনা, তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়া হারাম! কতো কী ! গান শোনা যাবেনা - সিনেমা দেখা যাবেনা অথচ নিজেরা পৃথিবীর সর্ব নিকৃষ্ট পাপাচার বলৎকার করবে !
- শ্যুটটির সিনেমাটোগ্রাফি আর টি ভি লুক এড মী তে দেখানো হয়েছিল।
আমার চারজন বেস্ট ফ্রেন্ডের মধ্যে একজন হিন্দু। বিশ্বাস করুন, আমি ওদের বাসায় গেলে কোন দিন বুঝতে পারিনি ওরা হিন্দু। ওরাও কখনো বুঝতে দেয়নি ওরা হিন্দু ! হিন্দু মুসলিম আবার কিরে ! আমরা মানুষ এটাই আমাদের বড় পরিচয়। কিছু মুসলিম মোল্লা উদ্ভট ফতুয়া দেয় হিন্দুদের বিয়ে খাওয়া যাবেনা। কারণ ওখানে যে খাসি জবাই করা হয়, তা জবাই করার সময় নাকি আল্লাহর নাম নেয়া হয়না। আহাম্মক কারে বলে! তারা জবাই করার সময় আল্লাহর নাম নেয়নি তাই আমি সে মাংস খেলে শিরক করবো ! কেমনে ! আমি তো খাওয়ার সময় দোয়া পড়ছি - " বিসমিল্লাহ আলা বরকতিল্লাহ " আল্লাহর নামেই তো খেলাম ! তাহলে আমি কিভাবে শিরক করলাম। আল্লাহ কি আমার মনে কি আছে সেটা জানেন না ? নাকি আমি দোয়া পড়ছি সেটা শোনেন নি? কোরানে হিন্দু বা অন্য যে কোন ধর্মের লোকের দাওয়াতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে এরকম কোন আয়াত বা সহীহ হাদিস এরা দেখাতে পারবে !! জীবনেও না।

উলটো ইসলাম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মহান শিক্ষা আমাদের দিয়েছে। ইসলামে আছে হারাম কিছু যা ইসলামে নিষিদ্ধ এগুলো ছাড়া হালাল সব খাবার খাওয়া যাবে এবং তাদের দাওয়াতও গ্রহণ করা যাবে! আল্লাহর রসূল (সা.) অসংখ্যবার অমুসলিমদের নিজের বাড়িতে মেহমান বানিয়েছেন এবং নিজেও একজন ইহুদির দাওয়াত কবুল করেছেন। তাই ইসলামিক স্কলাররা অমুসলিমদের দাওয়াত গ্রহণ করা জায়েজ ও বৈধ বলেছেন। রসুল সঃ আমাদের কি শিখিয়েছেন আর আমরা কি করছি ? আর হিন্দু মুসলিম বিভেদ টা সৃষ্টি করলো কোন ছাগলের দল !

এক মধ্যবিত্ত পরিবারের হিন্দু ছোট বোন ,( হিন্দু ছোট বোন বলতেই আমার ঘৃণা লাগছে! হিন্দু মুসলিম আবার কী? ) ফ্যাশন ডিজাইনিং এ পড়ছে। নতুন মডেল। তার মা তাকে খুব কষ্ট করে পড়া লেখা করাচ্ছেন। মাস শেষে তার সর্ব সাকুল্যে ১০ হাজার টাকা লাগে।টুকটাক মডেলিং আর টিউশন করে সম্মানের সাথে চলে যায়। তার মুসলিম বেস্ট ফ্রেন্ড চট্টগ্রাম থাকে।মেয়ের বাড়িও চিটাগাং। ঢাকায় মেয়েদের ১ টা মেসে থাকে, একদিন রাত ১১ টায় আমাকে ফোন দিসে, - ভাইয়া আমার ২ হাজার টাকা দরকার ! সে এতো ভালো মেয়ে যে, কেন কিছু জিজ্ঞেস না করেই পাঠালাম। এর ৫ দিন পরে আমার পূজার ফটোশ্যুট ছিল।সে সময় তাকে পেমেন্ট দেয়ার সময় বলে, আমি তো ২ হাজার আগে নিসি ,বাকী ২ হাজার দিলে হবে ( তার পেমেন্ট ৪ হাজার টাকা)। আমি বলসি না ওটা পরে দিও। ও এতো ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন যে,- ঐ মুহূর্তেই সে ২০০০ টাকা এডজাস্ট করবেই।সে ২০০০ টাকা কেন নিয়েছিল জানেন? তার মুসলিম বেস্ট ফ্রেন্ড হঠাত হসপিটালে ভর্তি হয় (করোনা)! মাসের একেবারে শেষ।২০০০ টাকা বাস ভাড়া ছিলোনা। তাকে দেখতে আসার জন্য রাত ১১ টায় সে তার বাসা থেকে বের হয় ভোরে জি ই সি নেমে ডিরেক্ট হসপিটালে চলে যায়! এখানে কোন রক্তের সম্পর্ক নেই, ধর্মের সম্পর্ক নেই, প্রেমের সম্পর্ক নেই- শুধু আছে দুইজন আলাদা আলাদা ধর্মের মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক! সে র‍্যাম্পে "কমলায় নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া" গানের সাথে অসাধারণ ক্যাট ওয়াক করে। দর্শক তার হাটা দেখে নস্টালজিল হয়ে যায়।

এই নতুন প্রজন্ম সম্ভবত মোল্লাদের জন্য চিন্তার কারণ হবে!এই প্রজন্ম কুসংস্কার ভুলে, প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সভ্য ভাবে বড় হচ্ছে এবং হবে। এরাই একদিন সাম্প্রদায়িক মোল্লাদের দেশ থেকে বের করে দিয়ে সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়বে ইনশা আল্লাহ।



দেশে বন্য পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করসে ।করোনার সনাক্তের হার বেড়ে গেসে। যখনই কোন দুর্যোগ; প্রিয় দেশটির মানুষগুলোর উপর এসেছে তখনই আমরা আমাদের সম্মানিত মডারেটর কাল্পনিক ভালোবাসা ভাইয়া ও সাবেক মডারেটর আমিনুর রহমান জেনন ভাইয়া, তাঁদের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চসাপোর্ট দিয়েছেন। আসুন ধর্ম বর্ণ ভুলে মানুষ হই এবং উনার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াই

ফটো শুট ক্লথিং ব্রান্ড সাতকাহন ও আর টিভি লুক এড মি এর জন্য শুট টি করা হয়েছিল গত বছর দুর্গা পূজার আগে।পোস্টের শিরোনাম বিদ্রোহী কবির কবিতার লাইন।



গতকাল ছিল বাবা দিবস। পোস্টটি সকল বাবা হারা সন্তানদের উৎসর্গ করা হলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০২২ ভোর ৫:৩৭
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×