somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ গোফরান
জামাত শিবির,ধর্মান্ধ মোল্লা ও একটি নির্দিষ্ট ধর্ম বিদ্বেষী মুক্ত ব্লগ।আপনার প্রতি আমি কেমন ব্যাবহার করব তা আপনার আচরণের উপর নির্ভর করবে।সত্য মিথ্যা যাচাই না করে অন্যের কথার উপর ভিত্তি করে যদি আমার উপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন,তাহলে আমার বন্ধু হওয়ার দরকার নেই।

|| অবাক জোছনায় লুকিয়ে রেখেছি ভেজা চোখ দেখাইনি তোমায় ||

০৫ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি- পুজা- গুগল ।

এক রাতে আলো-আঁধারের স্নিগ্ধ মিতালিতে ঝলমল করে ওঠে ছিল দেশের কোন এক শহর। পৌষের কুয়াশাচ্ছন্ন চন্দ্রালোকিত গভীর রাত্রি। সমগ্র শহর নিদ্রা মগ্ন হয়তো। হয়তো কেউ কেউ জেগে আছে আমারই মতো কোন বিশেষ প্রয়োজনে। রাত জাগা আমার ভীষণ প্রিয়। আমি আয়োজন করে রাজ জাগতাম। তখন ফেসবুক কিংবা ইনস্টার অথবা ব্লগের এতো জয়জয়কার ছিলনা। পৌষ মাসে সন্ধ্যার পর থেকে কোয়াশা পড়ায় রাত ১১ টা কেও গভীর রাত মনে হয়। সে রাতের নৈসর্গিক পরিবেশে আলো-ছায়া জড়ানো পথে ঘুরে বেডিয়েছিলেম রিয়ার সাথে।

২০০৯ পর্যন্ত হয়তো কারো সাথে সম্পর্কেই জড়াইনি হয়তো রিয়াকে প্রচণ্ড ভালবাসতাম বলে। কলেজের ২ বছর ওর সাথে কখনো কথা পর্যন্ত বলিনি। লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম। আর দূর থেকে ভালবাসতাম। এইচ এস সি শেষ হওয়ার পর সে লন্ডনে চলে যায়। একদিন একটা ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাই। হুবহু ওর নাম কিন্তু কোন ছবি নেই। ইনফোতে শুধু ওর স্কুল, কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেখাচ্ছিল। নাম আর কলেজ একই দেখে বুঝে নিলাম আমার সেই রীয়া। ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করেই হাই দিলাম। কোন জবাব নেই। আবার মেসেজ দিলাম তাও কোন জবাব নেই। ৪/৫ দিন লাগাতর নক দিলাম। কোন সারা শব্দ নেই। আমার প্রচণ্ড বিশ্বাস ছিল ওকে আমি খোজে পাবই। আমার ধারণা কে সত্য করে সে ১০-১২ দিন পরে মেসেজের জবাব দিল। ফোন নাম্বার আদান প্রদান হলো। শহরের এক ধনি ব্যবসায়ীর ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমার শহরের বৈশিষ্ট্য হলও বড় ব্যবসায়ীর মেয়েকে বড় ব্যবসায়ীর ছেলেরাই বিয়ে করতে পারবে। যদিও নতুন প্রজন্ম এই নোংরা কালচার বর্তমানে অনেকটাই বদলে দিয়েছে।

ওর হাজবেন্ড বড় ব্যবসা করেন। ওকে দেয়ার মতো সময়ই নেই। প্রতিদিন ফোনে কথা হতে থাকে। ফেসবুকে কানেক্ট হওয়ার ৪/৫ বছরের মধ্যে এতো ভালো বন্ধু হয়ে-গিয়েছিলাম যে আমার মনে হতো ওর লাইফের প্রায়োরিটি লিস্টে আমি ১/২/৩ এর মধ্যে আছি। আমার জীবনে কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন গুলোর মধ্যে একটি ছিল রিয়ার সাথে রাতের শহর দেখে পুরা রাত্রি পার করা। একদিন ওকে সে স্বপ্নের কথা জানালে সেও আগ্রহ দেখায়। সমবয়সীর মধ্যে মজার ব্যাপার হলো আবেগে এবং চিন্তা চেতনায় মিল থাকে অনেক।

প্ল্যান করে ও ওর বাপের বাড়ি আসে। আর আমাদের রাতের শহর দেখার তারিখ নির্ধারিত হয়। ওকে হলুদ কালারে দারুণ দেখাতো। অনুরোধ করলাম যেন হলুদ ড্রেস পড়ে। ওয়েট করার স্থান নির্ধারিত আমাদের কলেজের নিকটবর্তী দেব পাহাড়ে। মুবিনের চায়ের দোকান আজও আছে সেখানে যেখানে আমরা কলেজ ব্রেক টাইমে চা-বার্গার, শিঙ্গাড়া খাইতাম। সে পুরনো বাহানা বান্ধবী জয়শ্রীর বাসায় থাকবে এই বাহনয় রিয়া বিকাল ৪ টায় আসে আমার সাথে মিট করতে। ফেসবুকে পুনরায় যোগাযোগ হওয়ার পর এটা আমাদের ২য় দেখা। এর আগে ১০ মিনিটের জন্য একবার দেখা হয়েছিল।

হলুদ টপসের সাথে কালো জিনস, ভেজা খোলা চুল। মিষ্টি পারফিউমের ঘ্রাণ, সে নিষ্পাপ মুখ আর মায়াবী চোখ। আমার সামনে বসা জীবনের প্রথম ক্রাশ। ওখান থেকে নেভালে রওনা দিলাম। রাত তখন ৯ টার বেশী হয়ে গেসে। শীতকালে রাত ৯ টা অনেক। রাতের সমুদ্র প্রকৃতির এক বৈচিত্র্যময় উপহার। কাঁকড়ার সাথে ছোট পিয়াজু আর কোল্ড ডিরিংস পাশে ও বসা। গাড়ির সিডি প্লেয়ার থেকে ভেসে শিরোনাম হীনের হাসিমুখ গানটি। কি এক অসাধারণ মুহূর্ত বুঝানোর ভাষা আমার নেই। ৯ টার পর নেভাল থেকে বের হয়ে গেলাম। ১০ টার বেশী মেয়ে নিয়ে ওখানে একা থাকা ঝুঁকিপূর্ণ। ডিনার এর উদ্দেশ্যে ১০ টা ৩০ এর মধ্যে পৌঁছে গেলাম নগরীর পেনিনসুলায়। রাতের পেনিনসুলার রুফটপ সত্যি দৃষ্টিনন্দন । আমি সন্ধ্যার পর প্রায়ই ওখানে বসে থাকি। আমার ভীষণ প্রিয় একটা জায়গা। প্রিয় জায়গায় প্রিয় মানুষ মুখোমুখি বসা। মনটা অনির্বচনীয় আনন্দে রোমাঞ্চিত। আমরা ডিনার করতে থাকি আর রাত বাড়তে থাকে।


কফির সাথে গিগারেট আর প্রিয় মানুষের সাথে সময় কাটানো আর রাতের পরিবেশ আমাকে নস্টালজিক করে দিচ্ছিল। আমি যেন এমন রাতে অস্পষ্ট মায়ালোকে নিমজ্জিত। রিয়াকে ডানা কাটা পরীর মতো দেখাচ্ছে। আমি একদিন রিয়াকে বলবেনা সর্তে ওর বান্ধবী করবীকে বলেছিলাম ওকে প্রচণ্ড ভালোবাসি। করবি ওকে বলে দিয়েছিল আমি জানতাম না। যদিও ও ঐ রাতে জিজ্ঞেস করতো যাকে ভালোবাসো, তাকে তা বলতে সমস্যা কোথায় ! তুমি আমাকে ভালোবাসো এটা আমি ১৬ বছর আগে থেকে জানতাম।মেয়েদের মাথার পেছনে একটা চোখ থাকে ঐ চোখ দিয়ে ওরা তাদের দিকে কে লুকিয়ে লুকিয়ে তাকাচ্ছে তা দেখতে পায়। রাত যত বাড়তে থাকে তত ওর মতি গতি পাল্টাতে লাগলো। রাত তখন ১২ টার বেশী।

ও বলল আমার ক্লান্ত লাগসে ঘুমাতে হবে। আমি বললাম পুরা রাত বাকি এখনই ঘুমাবা? চল জয়শ্রীয় বাসায় নামায় দিয়ে আসি ।
রীয়াঃ না আমরা এখানে থাকব ?
আমিঃ মানে ?
রীয়াঃ এখানে রুম বুক কর।
আমি ঠিক আছে দুইটা রুম বুক করছি।
রীয়াঃ না দুইজন এক রুমে।
আমিঃ পাগলামি কর কেন?

কোন এক অদ্ভুত কারণে একটু সাউটই করল। " যা বলছি তাই কর"

একটা রুম বুক করা হলো। ও ফ্রেশ হয়ে বিছানায় শোয়ে পড়ল আমি বারান্দায় গিয়ে সিগারেট ধরালাম। একটু পর দেখি ও এসে আমার পাশে দারাইছে। তখনো আমি বিয়ে করিনি বা কারো সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়াইনি। এত রাতে প্রিয় মানুষের এত নিকটত্বে আমার শিরা-উপশিরা দুলে ওঠে। অনন্তকালের সেই অতৃপ্ত বাসনার অশ্রুভারাতুর সুর বাজতে থাকে হৃদয়ে।চা-সিগারেট আড্ডা গানে একেবারে শেষ রাত্রি। ওর করুণ আকুতি! আমাকে একটু জড়িয়ে ধরবে? আমি ওর দিকে তাকিয়ে থাকি? কি বলছে রীয়া এগুলো ! ও কি ঘোরের মধ্যে চলে গেলো! ও আবার বললো প্লীজ - আমি বললাম এ তো পাপ । তোমায় ভালোবাসি তোমার শরীরকে নয়।

রীয়াঃ আমাকে যে পেয়েছে সে লম্পট। দেশ বিদেশে অন্য নারীর সাথে রাত কাটায়। আমাকে কষ্ট দেয় ! আমার মেয়েটা না থাকলে ওকে ডিভোর্স দিতাম। কান্নায় ভেঙে পড়ে রীয়া। আমি পুরা রাত্রি জুড়ে এই প্রথম ওকে স্পর্শ করি, চোখের পানি মুছে দিলাম। মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম। এমন সময় ভেসে আসল পবিত্র আজানের ধনি। "আসসালাতু হাইরুম মিনান নাউম" --- আমি বললাম সব কিছু হিসেব দিতে হবে যে আল্লাহর কাছে। ওকে বললাম ঘুমাও! আমি ফজরের নামাজ পড়ে আসি। চার তলায় গিয়ে নামাজ পড়লাম। রুমে এসে দেখি রীয়া ঘুমাচ্ছে। কি নিষ্পাপ ঘুমন্ত মুখ। আমি আবার নতুন করে প্রেমে পড়ি ওর।

সমাজের অনেক উঁচু লেভেলের মানুষ নিজ স্ত্রীকে ঠকিয়ে পরনারীর সাথে রাত কাটায়। এটা অমানবিক। আপনার স্ত্রীকে ভালোবাসুন। না হলে সে একদিন আপনাকে ছেড়ে চলে যাবেই। প্রসরা সাময়িক দৈহিক সুখ দিতে পারে কখনো সংসার দিতে পারেনা। মানসিক শান্তি পারেনা। অনেকের নাকি আবার মেয়ে দেখলেই ধর্ষণ করতে ইচ্ছা।কই আমার তো সেই রাতে রিয়াকে কিছুই করতে ইচ্ছা করেনি। সমস্যা মগজে মগজ ঠিক করুন।

সকালে রীয়াকে নামিয়ে দেয়ার সময় গান প্লে হলো-
অবাক জোছনাই লুকিয়ে রেখেছি, ভেজা চোখ দেখাইনি তোমায়|
আমার হৃদয় জুড়ে আবার সে না পাওয়ার কান্না।

পিয়ায় মডেলিং করা হাশিমুখ গানের মিউজিক ভিডিও টি আপনার মন ছুয়ে যাবে।


গল্পের চরিত্র কাল্পনিক। আজ গল্পের রিয়ার জন্ম দিন। তার জন্মদিন উপলক্ষে এই পোস্ট।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০২২ রাত ১২:৪০
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×