সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হট টপিক এর কয়েকটি নিয়ে আলোকপাত।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের বিজয় আমাদের গর্বিত করেছে। আবেগাপ্লুত করেছে।আমাদের সম্মানিত করেছে। স্বভাবগত ভাবেই আমরা খুবই আবেগী। ফুটবলে আমাদের অর্জন খুবই কম। তাই এই বিজয়ে আমাদের উল্লাস্টা একটু বেশি।
তবে সবকিছু নিয়ে বেশি বেশি করা আমাদের খুবই বাজে একটা অভ্যেস।আমাদের মতো উদ্ভট কান্ড পৃথিবীর আর কোন দেশে হয় কিনা জানিনা। সকলে লক্ষ্য করেছেন কিছু কার্টুন সবার হোম পেজে ঘুরছে। তার মধ্যে নিচের টি ১ টি।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন নারী একজন দাড়ি টুপি ওয়ালা হুজুরের দিকে ফুটবল কিক করছে। কার্টুনিস্ট হয়তো মিন করেছেন যারা চায়না নারী খেলুক ঘরে বন্দী থাকুক, বোরখা পড়ে রাস্তায় বের হোক তাদের দিকে ঘৃণা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এ ছবিটি যিনি এঁকেছেন এবং যারা শেয়ার দিচ্ছেন তাদের ক্ষোভ আমি বুঝতে পেরেছি।হুজুরগণ ধর্ম নিয়ে এবং ইসলাম নিয়ে এতো বেশি বাড়াবাড়ি করেছে যে সাধারণ মানুষের মনে এদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে। তাই এমন করেছেন। আমি পজিটিভলি নিলাম। কিন্তু এই ছবির উদ্দেশ্য যদি একটি নির্দিষ্ট ধর্মকে অসম্মান ও আলেমদের অসম্মান হয় তবে বিষয়টি আপত্তিকর। মনে রাখতে হবে নারীদের এই বিজয় কাঠমোল্লাদের বিরুদ্ধে ইসলামের বিরুদ্ধে নয়। এবার নিচের ছবিটি দেখুন।
আজ শুক্রবার কোন আল্লাহর বান্দা এই কার্টুনটি এঁকেছে। এখানে যাকে কিক করা হচ্ছে তিনি নাকি নিচের কার্টুনটি এঁকেছেন ইরানের নারীদের হিজাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ।ক্যাপশনে লিখছে যেমন কুকুর তেমন মুগুর।
কোন মানে হয় এগুলোর? পৃথিবীর আর কোন দেশের মানুষ এগুলো করছে?
এবার এই স্ক্রিনশটটি দেখুন। লিনা স্টোরি দিয়েছেঃ
ছবিটির বিষয়বস্তু হলোঃ "সৌদি-আরবে'র পবিত্র মক্কা নগরীতে অনুষ্টিত, বিশ্ব হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় ১১১ টি দেশকে হারিয়ে বাংলাদেশী হাফেজ "সালেহ আহমদ তাকরীম" তৃতীয় নাম্বারে বিজয়ী লাভ করেছে।
বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশের পতাকা এভাবেই উচু করছে প্রতিবছর আমাদের সোনার ছেলেরা। অভিনন্দন ও শুভকামনা হে প্রিয় সালেহ আহমদ তাকরীম।"
এই ছেলেটি বাংলাদেশ কে যে সম্মান এনে দিয়েছে মেয়েদের সাফ জয়ী হওয়ায় যারা উল্লাস করছেন তাদের অনেকেই এই ছোট্ট ছেলেকে এপ্রিসিয়েট করতে পারছেন না। মনে মনে পারলেও সুশীলতায় আঘাত আসবে বলে শেয়ার দিচ্ছেন না। যদিও কে কি শেয়ার দিবে,এপ্রিসিয়েট করবে তা যার যার ব্যক্তিগত পছন্দ তবে সাফ জয়ী মেয়েদের এপ্রিসিয়েট করবেন হাফেজ সাহেব কে এপ্রিসিয়েট করতে লজ্জা পাবেন অথবা হাফেজ সাহেব কে এপ্রিসিয়েট করবেন ফুটবলার মেয়েদের উরু দেখে অশ্লীল হারাম বলে ইসলাম গেলো ইসলাম গেলো বলে চিল্লাবেন এগুলো কি ঠিক!! ধর্মান্ধতা এবং একটি নির্দিষ্ট ধর্ম বিদ্বেষ করতে গিয়ে কারও অনুভূতি ও স্বাধীনতায় আঘাত করা অনুচিত।
লিনার স্টোরির আরেকটি হলো নিচের ছবিটি।
হাফেজ সাহাবের স্টোরিতে যারা লাভ রিয়েক্ট দিয়েছেন তাদের মধ্যে একজন এই ছবিতে ফিডব্যাক দিয়েছেন - 'দুই রূপ কেন? একদিকে কোরানের হাফেজ কে এপ্রিসিয়েট করছেন অন্যদিকে বেপর্দা ছবি আপলোড কেন?' এই হলো আমাদের দেশের মানুষের মানসিকতা। লিনা বা যে কেউ নিজের পছন্দ মতোই ড্রেসাপ করবে।কেউ ফ্যাশন মিডিয়ার সাথে জড়িত বা ফ্যাশন সচেতন স্টাইলিস্ট বলে কি তার হাফেজ সাহেব কে এপ্রিসিয়েট করার অধিকার নেই? মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদের ভালোবাসার অধিকার নেই? নামাজ কোরান পড়ার অধিকার নেই?কেনো এই মানসিকতা?এমন মানসিকতার অধিকারী হওয়া কি ঠিক।
ছবিতে কিছু মাদ্রাসার ছাত্রদের সাথে লিনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২৪