"ঐ ব্যাটা স্টুপিড"
"তুই ব্যাটা স্টুপিড"
"তুই.. তুই স্টুপিড"
"তুই আবাল"
"তুই বড় আবাল"
"ঐ তুই আমারে চিনোস?"
"তুই আমারে চিনোস?"
"না চিনি না তুই ক্যাডা?"
"আমিও তোরে চিনি না, তুই ক্যাডা?"
"মুখ সামলাইয়া কথা বল"
"তুই মুখ সামলাইয়া কথা বল"
নাহ দু'জনের কেউই মুখ সামলান নি। বাধ্য হয়ে আমরা এগিয়ে গেলাম দু'জনকে সামলাতে। সামান্য ব্যাংকের লাইনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে মুহূর্তের মধ্যে দুই ভদ্রলোক খিস্তিখেউর শুরু করে দিয়েছেন। একজন আরেকজনের কলার খামচে ধরেছেন।... মোবাইলের বাটন টিপে দুজনই তাদের দল-বল ব্যাংকে আসতে বললেন। আজ একজন আরেকজনের জাত চিনিয়েই ছাড়বেন।
একজন পাঞ্জাবির উপর কোটি পরা। আরেকজন স্যুট পরিহিত। দুজনের মাথার চুলই পরিপাটি করে আঁচড়ানো। হাতে সুন্দর চামড়ার ব্যাগ।
পোশাকই না-কি মানুষের অনেক পরিচয় বহন করে। আসলেই কি তাই? পোশাকের মুখোশ দিয়ে ভেতরটা কি ঢাকা যায় কখনো?
অবস্থা বেগতিক দেখে ব্যাংকের দারোয়ান বন্ধুক হাতে করে পজিশন নিয়ে বাঁশি ফুঁকতে লাগলেন। ম্যানেজার দৌড়ে এসে একজনকে বুকে টেনে নিলেন।
আরেকজনকে নিলেন সেকেন্ড ম্যানেজার।
"দ্যাখেন, শালা আমার কোটের বোতাম ছিঁড়ে ফেলছে"
"দ্যাখেন, শালা আমার পাঞ্জাবির বোতাম ছিঁড়ে ফেলছে। এই যে দ্যাখেন শালা আবালের কাণ্ড।"
আমরা দাঁড়িয়ে তামাশা-কাণ্ড দেখতে লাগলাম। কতেক দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগলো। বাংলার রসিক দর্শক কোথাও মজা নিতে ছাড়ে না।
ইতোমধ্যে দুইজনেরই বাহিনী চলে এসেছে। যারা যার দল তার পক্ষ নিয়ে চিৎকার করে অন্যজনকে বলতে লাগল, "ঐ তুই উনারে চিনোস না? চিনোস না উনারে? থাকোস কই?"
বস্তুত। কেউই কাউকে চিনে না। আমরাও চিনি নি দুজনের একজনকে। কেন না, মানুষের পরিচয় তার "গায়ে" লেখা থাকে না...। থাকে আচরণে...।