somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজব দুনিয়া, আজব প্রাণী

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজব এই দুনিয়াতে যে সৃষ্টিকর্তা কত আজব আজব প্রাণী সৃষ্টি করে রেখেছেন তার ইয়ত্তা নেই। কতটুকুই বা জানি আমরা? সম্প্রতি আবিষ্কার হওয়া বেশ ক'টি প্রাণীর মধ্যে আমি গোটা পাঁচেক তুলে আনলাম আপনাদের দৃষ্টিগোচরে। খুব বেশী হাংকি পাংকি না করে সরাসরি চলে যাচ্ছি সচিত্র বর্ণনায়। পড়ে দেখুন ভালো লাগে কিনা।




পাখিভূক গোলিয়াথঃ

জনাব জাতে একজন মাকড়সা। ট্যারানটুলার জাতভাই বলা চলে। ট্যারানটুলার এ পর্যন্ত যত প্রজাতির দেখা মিলেছে তার মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়। আর এ কারণেই বুঝি নাম গোলিয়াথ। গর্তবাসী এ দানোটি অফিসিয়ালী ২০০৬ সালে গায়ানাতে আবিষ্কৃত হয়েছে। মূলতঃ অমেরুদন্ডী প্রাণী, গিরগিটি আর বিষধর সাপ খেয়ে বেঁচে থাকলেও ছোট আকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী আর পাখিতেও ইনার রুচি আছে। গোলিয়াথের সবচাইতে বড় ঝামেলাপূর্ণ ব্যাপার হলো এরা চুলের মতন একধরণের আঁঠালো তন্তু নির্গত করে, সমস্যা সেখানে নয়। সমস্যা হলো তন্তুগুলো মানুষের চোখের জন্য সংবেদনশীল আর প্রায় অদৃশ্য তন্তুগুলো বিস্ময়করভাবে চোখের সাথে সেঁটে থাকতে পারঙ্গম। গোলিয়াথের বিষটাও তুলনামূলক ভাবে একটু হালকা ধরনের। গায়ে লাগলে ঘন্টাখানেক জ্বালাপোড়া করা ছাড়া খুব বেশী ক্ষতি করে না। পরিপূর্ণ মাকড়সা ৬ আউন্স পর্যন্ত হয় বলে জানা গেছে; আল্লাহ মালুম, আরো বড় হলে আমাদের কার কপালে কি দূর্গতি ছিলো।




ইয়েতি কাঁকড়াঃ

লোমশ এই ভদ্রলোকের প্রথম সাক্ষাৎ মেলে ২০০৫ সালে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে। সমুদ্রের হাইড্রোথার্মাল ভেন্টের আশেপাশেই এনার বিচরণ। দশপেয়ে জীবটির পুরো শরীরটাই ঈষৎ সোনালী রেশমী লোমে আবৃত। আদর করেই এর নাম দেয়া হয় "ইয়েতি কাঁকড়া" (দেখতেও ইয়েতির মতনই অবশ্য)। লম্বায় ছ'ইঞ্চির ওপরে যায়না এর কোনটিই। জীববিজ্ঞানীদের মতে এই কাঁকড়ার লোমশ শরীরে রয়েছে ফিলামেন্টাস ব্যাকটেরিয়া যা এদের ভেন্টের মাধ্যমে জলে আসা বিষগুলোকে ডি-টক্সিফাই করতে সাহায্য করে। এদের কেউ কেউ অবশ্য এমন ধারণাও করেন যে এই ব্যাকটেরিয়াই ভদ্রলোকটির খাদ্য, আবার অনেকেই মানেন ইনার গোশত ছাড়া মুখে কিছু রোচে না। চলতে থাকুক জীববিজ্ঞানীদের বিতর্ক। ইনার সম্পর্কে আমরা এখনও তেমন কিছু জানি না।




ওয়াল্টারের দুষ্ট ডুইকারঃ

দেখতে যদিও বেজায় ছোট, দুরন্তপনায় কিন্তু এর জুড়ি মেলা ভার। জ্বী হ্যাঁ, মোটে ষোল ইঞ্চি লম্বা আর ছ' কিলো ওজনের ডুইকার হরিণের কথাই বলা হচ্ছে। পেছনের পা দু'টো সামনের তুলনায় লম্বা আর তাতে ভর করেই বিশাল তেপান্তরের মাঠ দাবড়িয়ে বেড়ায় দুষ্টু খোকা ডুইকার। আর সব জাতভাইদের মতন কিন্তু সে ঘাস-পাতা খায় না। ছ্যাঁ ! ওসব খেয়ে কি হবে? ডুইকারের পছন্দ গাছপাকা রসালো জাম কিংবা বেরী জাতীয় ফল। ২০১০ সালে এ ডুইকারের এ প্রজাতি আবিষ্কৃত হয় আফ্রিকার দাহোমে গ্যাপে। এখন পাওয়া যাচ্ছে টোগো, বেনিন আর নাইজেরিয়াতেও।




পিনোকিও ঘ্যাঙর ঘ্যাঙঃ

ইন্দোনেশিয়ার ফুজা মাউন্টেনের গহীণ অরণ্যে এই নেকো বদমাশকে পাওয়া গেছে। খানিকটা কাকতালীয়ভাবেই অবশ্য বলা চলে। দিনমান লাফালাফি করে ক্লান্ত ঘ্যাঙর এক রিসার্চ ক্যাম্পের চালের বস্তার ওপর মুখ ব্যাদান করে বসেছিলো। নট নড়ন-চড়ন, নট কিচ্ছু। বিজ্ঞানীরা ততক্ষণে যা বোঝার বুঝে নিয়েছেন। ২০১০ সালের নতুন আবিষ্কার হিসেবে নাম লেখানো হয়ে গেছে ইনার। পিনোকিও নামটা সম্ভবত এসেছে তার লম্বা নাকের জন্যেই (কানে কানে বলে রাখি, এটা পুরুষদেরই আছে। ব্যাঙ আপামণিরা কিন্তু নাক-কাটাদের দলে)। অবশ্য নাক বলবো কিনা তাও বুঝতে পারছি না, কেউ কেউ একে শুড় বলেও দাবী করেন। মিলন ঋতুতে সঙ্গিনীকে ডাকবার সময় এই নাক কিন্তু দাঁড়িয়ে যায় আর ইরেক্ট করে (অ্যাহেম! আমাদের ইয়ের মতন আর কি!) সাধে কি আর একে বদমাশ বলি?




লাল-দেঁড়ে টিটিঃ

না, ট্রেনের টিটি নয়। ইনি লাল দাঁড়ি বিশিষ্ট পুঁচকে শাখামৃগ। গাছের টিটি বললে হয়ত আপত্তি করবে না কেউ। আমরা যখন ২০০৮ সালে কলম্বিয়ান রেইন-ফরেস্টে প্রথম দেখতে পেলাম ওকে, তখন অবশ্য সবকিছু আমাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। আমরাই ওদের বেঁচে থাকবার জন্য যা যা প্রয়োজন তা উজাড় করে ফেলেছি। ওদের সংখ্যা এসে ঠেকেছে মাত্তর আড়াইশো-তে। চোখের জল মুছবেন না। আরও কাহিনী বাকি আছে। মানুষের সাথে এদের অদ্ভুত মিল রয়েছে। চেহারায় নয় অবশ্য (আপনাদের কারো কারো সাথে যদি মিল থেকে থাকে সে দোষ আমার নয় কিন্তু)। মানুষের মতনই এরা একজন সঙ্গি অথবা সঙ্গিনীর সাথেই গোটা জীবনটা পার করে দেয়। বাচ্চা-কাচ্চার দেখভাল বাবা টিটিই করে (হবু মা হওয়া আপামণিরা ভাইজানদের এই তথ্য জানাতে পারেন)। প্রায়শই দেখা যায় গাছের ডালে লেজে-লেজে ধরাধরি করে কপোত-কপোতির মতন জোড়ায় জোড়ায় টিটিরা বসে আছে। শিক্ষা নেন নব্য প্রেমিক-প্রেমিকারা। শিখতে পয়সা লাগে না।




তথ্যসূত্রঃ লিস্টভার্স

উৎসর্গঃ সোনালী ডানার চিল
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:১০
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×