নূহ (আ.) নিজের সন্তানকে ত্যাগ করেছিলেন এক আল্লাহকে রাজী খুশি করার জন্য। কেননা রক্ত ও আত্নার সম্পর্ক কখনই তাওহীদের আগে যেতে পারে না।
সূরা কাহফে উল্লেখিত কয়েকজন যুবক বসতভিটা ছেড়ে পাহাড়ে গিয়ে লুকিয়ে ছিল জালিম ও মুশরিক শাসকের ফিতনা থেকে নিজেদেরলে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।
আছিয়া (আ.) স্বামী ফিরাউনের ফিতনা থেকে বাঁচতে নিজেকে এক আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন।
হূদ (আ.) তার মুশরিক ভাইদেরকে ফেলে একাকী অনত্র চলে গিয়ে ঈমান বাঁচিয়েছিলেন।
পিতা ইব্রাহীম (আ.) নিজের পিতা আযরকে সজ্ঞানে ত্যাগ করেছিলেন আল্লাহকে বাদ দিয়ে প্রতিমা পূজা করার জন্য। শুধু তাই নয় ইব্রাহিম (আঃ) আল্লাহকে রাজী খুশি করার জন্য নিজ পুত্র ইসমাইলের গলায় ছুড়ি চালাতেও দ্বিধান্বিত বা পিছপা হননি। কেন? কেননা তা ছিল আল্লাহ'র হুকুম। আল্লাহ'র হুকুমের সামনে আর কোন হুকুম চলেনা, আলবৎ চলেনা।।
রাসূল ﷺ এর স্ত্রী উম্মে হাবীবা (রা.) পিতা আবু সুফিয়ান মুশরিক (অপবিত্র) বলে নাবী ﷺ এর বিছানায় বসতে দেননি চাঁদর মোবারাক সরিয়ে নেওয়ার আগ পর্যন্ত।
আবু বকর আস-সিদ্দীক (রা.) - এর ছেলে জিহাদের ময়দানে মুশরিকদের পক্ষে যুদ্ধ করার পর, একদিন কথা প্রসংগে সেই কথা উঠলে তিনি পূত্রকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, "আল্লাহর কসম! যদি সেদিন তোমাকে আমি পেতাম, তাহলে আমি তোমার গর্দান নামিয়ে দিতাম।"
তপ্ত বালির বুকে বিলাল (রা.) ফেলে দিয়ে, পিঠে আঘাতের পর আঘাত হেনে মুশরিকের দল এক আল্লাহ ও তার রাসূল ﷺ উপর বিশ্বাস ত্যাগ করতে বললে, জবাব এসেছিলো "আহাদুন আহাদ" অর্থ্যাৎ এক, তিনি এক।
যুগে যুগে বেঈমানদের সাথে ঈমানদারদের অবস্থান এরকমই ছিল। পিতা, পূত্র, স্ত্রী, স্বামী, সমাজ, ভাই - সমস্ত বন্ধনের কোন দাম নেই এক আল্লাহ'র সাথে তাওহীদের বন্ধনের কাছে। রক্ত ও আত্নার সম্পর্ককেও কেঁটে ফেলতে হয় এক আল্লাহ'র রাজী খুশির জন্য। এটাই নির্জলা তাওহীদ, এটাই নির্ভেজাল ঈমান।
এটাই আল আ'লা ওয়াল বার'আ। একমাত্র আল্লাহর জন্যই কাউকে ভালবাসা,একমাত্র আল্লাহ'র জন্যই কাউকে ঘৃণা করা।।
মহান আল্লাহ্ আমাদেরকে শাইত্বন, তার দোসর, তাগুত, দাইয়্যুস, বিকৃত সমাজ, বিধর্মী কৃষ্টি-কালচার অনুকরণ ও অনুসরণের এবং ঈমানের খোলসে ঢাকা বেঈমানদের সকল ফিতনা থেকে রক্ষা করুন, সেই সাথে সকল পরিস্থিতিতে একমাত্র তার উপরেই ভরসা রাখার তৌফিক দিন এবং দ্বীনের উপরে অটল রাখার ব্যবস্থা করুন।
"রব্বানা আফিরগ য়ালাইনা সবরাও ওয়াতাওয়াফফানা মুসলিমিন।"
হে আমার প্রতিপালক! আমাদের উপর ধৈর্য্য ঢেলে দাও আর মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দিও।"
আমীন (সঃ)।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:১১