somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও কিছু কথাঃ

২৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও কিছু কথাঃ

বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল আছে। একজন মুসলিম হিসেবে এটা আমার জন্যও নিঃসন্দেহে খুশির এবং গৌরবের খবর। শুকুর আলহামদুলিল্লাহ।
এবার আসুন কিছু খারাপ কথা বলি। ৯৫% মুসলমানের এই দেশে আমি-আপনি কতো পার্সেন্ট মুসলমান? খটকা লাগছে? একটা গল্প শুনুন,
অনেক কাল আগে মির্জা গালিবকে এক লোক প্রশ্ন করেছিলো, হুজুর আপনি হিন্দু না মুসলমান?
মির্জা গালিব উত্তর দিলেন, আধা আধা!
লোকটির মনে খটকা লাগলো। সে বললো, হুজুর, ঠিক বুঝলাম না।
মির্জা গালিব মেুচকি হেসে বললেন, মদ খাই কিন্তু শুয়োর খাই না।

এবার উত্তরটা একমাত্র আপনিই দিতে পারবেন, আপনি কতো পার্সেন্ট মুসলামান! কারন একমাত্র আপনিই জানেন- আপনি কি খান, কি খান না, কি করেন, কি করেন না।
দেশে ধর্ম নিয়ে কোন কথা উঠলেই আপনি জ্বেহাদের ডাক দেন। আপনি তীব্র কণ্ঠে শ্লোগান দেন, টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া বাংলার মাটি আপনি রক্তে ভাসিয়ে দেবেন। আসুনতো একটু দেখি জ্বেহাদ নিয়ে ইসলাম কি বলে!
ইসলামের ভাষায় সবচেয়ে বড়ো জ্বেহাদ হলো নিজের নফসের বিরুদ্ধে জ্বেহাদ করা। নফ্স বোঝেন তো? আপনার মনের মাঝে যতো কু-প্রবৃত্তি আছে তাদেরকেই নফ্স বলে।
এবারও একমাত্র আপনিই এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন, আপনি কতো বড়ো জ্বেহাদী/মুজাহিদ! কারন একমাত্র আপনিই জানেন আপনি আপনার নফসকে কতোটা দমন করতে পেরেছেন।

কথায় কথায় দেশে রক্তের বন্যা বইয়ে দেবার হুমকি দেন। কিন্তু কার রক্ত দিয়ে দেশ ভাসাবেন বলুন তো? নিশ্চই কোন অসহায় মায়ের সন্তানের রক্ত। ২০১৩ তে হেফাজতে ইসলাম ১৩ দফা দাবী নিয়ে মতিঝিলে অবস্থান নিয়েছিলো। আমি দেখেছি কিভাবে কোমল মতি কিশোর ছাদ্রদের জোর করে, বিভ্রান্ত করে মতিঝিল নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। যারা কিনা জ্বেহাদরে মানেই বুঝেনি তখনো। সেদিন রাতে সমস্ত মতিঝিল এলাকায় সারা রাত বিদ্যুত বন্ধ করে ভোর পর্যন্ত কী অপারেশন চালানো হয়েছিলো তা জানি না। তবে কিছু পুলিশ এবং সংবাদ কর্মীর সাথে ব্যাক্তিগতভাবে কথা বলেছিলাম। তাদের বর্ণনা কিন্তু অতোটা সুখকর ছিলো না। সেই রাতের পর সারা দেশের অনেক মায়ের সন্তানই আর ঘরে ফিরে যায়নি, বাবা বলে ডাকেনি।
শুনতে খুব খারাপ লাগছে? সাবজেক্টটা একটু চেঞ্জ করি।
আপনি কথায় কথায় ধর্ষণের জন্য স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবাধ মেলামেশাপূর্ণ বেহায়া নির্লজ্জ শিক্ষা ব্যবস্থাকে দায়ী করছেন। কিন্তু আপনার মাদ্রাসার শিক্ষক কেন শুধু ছাত্রী নয়, ছাত্রকেও ধর্ষণ করে? আপনার জ্বেহাদী যৌবন শক্তির হাত থেকে একটি ছেলে শিশুও নিরাপদ নয়। কারন আপনার থুতনিতে সুন্নাতী দাড়ী আছে, গায়ে জুব্বা-আলখাল্লা আছে, মাথায় সুন্নাতী পাগড়ী আছে। কিন্তু আপনার মনে সুন্নত নেই, দিলে ঈমান নেই। তাই ঈমান প্রকাশ করতে আপনি ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’ বলে গলা ফাটান। আর ইসলাম ধর্মের পেছনে বড় বড় বাঁশঝাড় উজার করে দেন।
এদেশের পানির ড্রেনে, পার্কের ঝোপের আড়ালে অথবা ডাস্টবিনে যেসব ব্যবহৃত কনডম পড়ে থাকে ওগুলো কিন্তু আপনার- আমার মতো মুসলমানেরই কর্ম। কারন এটি একটি ইসলামি দেশ, এদেশের রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম।

কোন মেয়ে ধর্ষিতা হলে আপনি মেয়েদের চাল-চলন, পোষাক-আসাকের দোষ দেন। ইসলাম নারীকে পর্দা করতে বলেছে, তার শরীর হেফাজত করতে বলেছে। তেমনি পুরুষদেরও তো বলেছে তাদের দৃষ্টি সংযত রাখতে। আপনি নিজের দৃষ্টি কতোটুকু সংযত করে চলেন? কোন মেয়ে টাইট কাপড় পড়লে, অথবা কারো বুক থেকে ওড়না হঠাৎ সরে গেলে আপনার চোখ কেন আটকে যায় বলুন তো? এবার কি উত্তর দেবেন জানি। বলবেন, গাছে আম পাকলে ছেলে পেলেরা একটু আকটু ঢিল মেরেই থাকে। কিন্তু গাছে ঢিল কিন্তু কোন ভদ্র ছেলে দেয় না, বখাটে ছেলেরাই দেয়। আপনার ঈমানও ওই আম গাছে ঢিল ছোড়া বখাটে ছেলের মতোই।

সারা জীবন ঘুষ খেয়ে ভুড়ি ফুলিয়ে, দূর্ণীতি করে, বাসার কাজের মেয়েকে গর্ভবতী করে, শেষ জীবনে সেই ঘুষের টাকায় অথবা পেনশনের টাকায় হজ্জ করে আসেন। আর ভাবেন, আর চিন্তা নাই । মক্কা-মদীনার পবিত্র মাটিতে যেয়ে তওবা পড়ে ফেলেছি। এইবার বেহেশত নিশ্চিত! বেহেশত অতো সহজ নারে ভাই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ নিজে বলেছেন, খাস দিলে তওবা করলে তিনি শিরিক ব্যাতীত সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। কিন্তু বান্দার হক তিনি কখনো ক্ষমা করতে পারবেন না। ভাই মনে আছে তো জীবনে কতো মানুষের কতো রকম হক মেরে খেয়েছেন! অথচ ধর্মের নামে কোন কথা উঠলেই আপনার মাথা নষ্ট হয়ে যায় । আপনার রক্ত টগবগ করতে থাকে। আপনি জ্বেহাদী হয়ে ওঠেন।

ওপরের কাজগুলি আপনিই করেন সেটা একবারও বলছি না। তবে এই কাজগুলি আপনার আমার চোখের সামনেই ঘটে, ঘটছে। অথচ আমরা এর কোন প্রতিবাদ করি না। ইসলাম কি বলে? অন্যায় করা, আর অন্যায়কে পশ্রয় দেয়া কি খুব বেশি পার্থক্য? এবার বলুনতো আমাদের রাষ্ট্র ধর্ম কি?

কুরআন এবং ইসলাম রক্ষার দ্বায়িত্ব আল্লাহ নিজে নিয়েছেন। কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহ নিজে কুরআন হেফাজত করবেন। সুতরাং আপনাকে ইসলাম রক্ষা নিয়ে এতো মাতামাতি করতে হবে না।
আপনি শুধু নিজের চরিত্রটার দিকে একটু নজর দিন। ইন-শা-আল্লাহ সব বদলে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:২৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×