আমাজন নিয়ে আমাদের মাথাবাথা না থাকাটা খুব সিম্পল !
একটা দেশের মোট আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা দরকার, অথচ আমাদের আছে ১৭ শতাংশ !
শুধু রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েই ধ্বংস হয়েছে ৬ হাজার ১৬৩ হাজার একর বন(প্রথম-আলো) ! সুন্দরবনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ঘোষণা করা সত্ত্বেও সেখানেই আমরা রামপাল নির্মাণ করছি... সুতরাং ১৩ বছর আগের সেই ১৭ শতাংশ বনভূমি এখন কতো শতাংশে এসে ঠেকেছে জানি না !
আমরা পড়ছি, "ভাত দে হারামজাদা নইলে মানচিত্র খাবো", আমাদেরকে মানচিত্র খাওয়ানো শেখানো হয়েছে, তাইতো সুন্দরবন জাদুঘরে চলে যাক, আগামী প্রজন্ম সুন্দরবন বলতে শুধু একটা কুরিয়ার সার্ভিসকে চিনুক, তাতে আমাদের কিছু আসে-যায় না ! কাশ্মিরের মানচিত্র ঠিক থাকলো কি না, সেইটা নিয়ে আমরা রাস্তায় নামি, ফিলিস্তিনের ভুখন্ডে ঢিল পড়লে ঢাকার রাস্তা ব্যানারে ভরে যায়, মসজিদে-মসজিদে দোয়া পড়া হয়, সুন্দরবন ধ্বংস হলেও আমার মানচিত্র যেহেতু অক্ষত থাকছে সেহেতু আমাদের দোয়া-প্রতিবাদ না করলেও চলে !
হয়তো সুন্দরবন-আমাজন কোনো ধর্মীয় রাষ্ট্রের নাম নয়, আমাজন-সুন্দরবন তো আমাদের হাতে সরাসরি কিছু দিচ্ছে না, সুতরাং এসব থাকলেই কি আর না থাকলেই কি ! যারা বলছে, "আমাজন পৃথিবীর ফুসফুস, একে রক্ষা করতে হবে", তারা আসলে আমাজনের সার্বভৌমত্বের নামে গুজব ছড়াচ্ছে, এদেরকে জেলে ভরে দেওয়া উচিত !
যে জাতি শুধু মানচিত্র ভালবাসতে জানে, মানচিত্রের ভিতরের করুন অবস্থা বুঝতে চায় না, যারা এখনো বিশ্বাস করে পদ্মা সেতুতে মাথা লাগে- চাঁদে মানুষের ছবি দেখা যায়, তাদের কাছে সুন্দরবন থাকলেই কি আর না থাকলেই কি !
আমাদেরকে জাতীয়তাবাদ শেখানো হইসে, ধর্মনিরপেক্ষতা সেখানো হইসে, চেতনা ঢালা হইসে.....!
অথচ কেউ আমাদের শেখায় নি, যদি পৃথিবীতে মানুষই বাঁচতে না পারে, তবে সেই জাতীয়তাবাদ কার জন্য !
ধর্মপালন করবার মতো মানুষই যদি না থাকে তাহলে ধর্মনিরপেক্ষতা শেখানো হবে কাকে !
চেতনা ধারন করবার মতন বিবেকওয়ালা লোকই যদি না থাকে, তাহলে সেই চেতনা ছিটিয়ে লাভটা কি !
আধুনিক এলিট সভ্যরা, বন-জঙ্গলকে আদিম যুগের কালচার মনে করে, তাই বন ধংস করার জন্য এরা উঠেপড়ে লেগেছে, আর আমরাও গুটিকয়েক লোকের উপরে তার প্রতিবাদের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে আরামে গোল্ড-লিফ সিগারেট টেনে পৃথিবী উত্তপ্ত করতে পাল্লা দিচ্ছি আর যাদের উপরে প্রতিবাদের দায়িত্ব , তারাও টুইটারে একটা টুইট করে কিংবা খুব বেশি হলে একটা সংবাদ সম্মেলন ডেকেই তাদের দায়িত্ব শেষ করে ফেলছে !
এই গোটা পৃথিবীটাই যে আমাদের আর আমরা প্রত্যেকেই যে এই পৃথিবীর মানুষ, আমাদের নিজেদেরকেই এই পৃথিবী রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে, এ ধারনার বীজ বপন করার চেষ্টাও কেউ করছে না !
আমাজনের আগুনও মানবতার বিরুদ্ধে জ্বলছে !
"আমাজন জ্বললে আমাদের কী" এই ভাবনা নিয়ে খুব বেশিদিন পৃথিবীর বুকে রাজত্ত করতে পারবা না মানুষ ! যদিও পৃথিবীর বায়োলজিক্যাল পরিস্থিতি কোমায় চলে গেছে তবুও যদি তোমাদের হুশ ফেরে হয়তো একে রক্ষা করা সম্ভব !
রাত পোহাবার কতো দেরি বিবেক ?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:০৭