somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাড়পত্র

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

"হ্যালো আপা, ফাহিম ভাই মারা গেছেন।"
হয় আপা কিছুই বলছেন না, নয়তো নেটওয়ার্কে সমস্যা।
আমি আবার বললাম,"আপা, শুনেছিস ফাহিম ভাই মারা গেছেন।"
"এককথা বারবার বলছিস কেন?তাড়াতাড়ি বাসায় আয়।আসার সময় একটা কোণ আইসক্রিম নিয়ে আসিস।আয়ান বিকাল থেকে কোণ খেতে চাইছে।"

বাসায় ফিরতেই আয়ান দৌড়ে এল।
"মামা, তুমি ইগলু'র কোণ এনেছ কেন?পোলারেরটা আনতে পারলে না।ইগলু'র আইসক্রিম মজা নেই।"
রফিক ভাই মেঝেতে বসে ল্যাপটপে কিছু একটা করছেন।আপার জন্য কাজ করতে পারছেন না।আপা তার হাত ধরে, কাধে মাথা রেখে বসে আছেন। রফিক ভাই আমাকে দেখে একটু লজ্জা পেলেন। আপার মধ্যে কোন সংকোচ নেই।
"বন্যা, কাজের সময় খুব বিরক্ত কর।"
আপা হাত ছাড়লো না,কাধে মাথা রেখেই বসে রইলো।

আমাদের আব্বা মারা গিয়েছেন আমার জন্মের অনেক আগেই।আব্বা নাকি আয়েসি লোক ছিলেন।কোন কাজেই মন দিতে পারতো না।একবার আর্মি, একবার পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। শেষে আর কাজ করেননি। সারাদিন বই পড়ে কাটাতেন। আশেপাশের যত লাইব্রেরী আছে সব বই পড়া শেষ হয়ে গেল।একদিন মাঝরাতে আম্মাকে বললেন,"শাপলা, পানি খাব, ঠান্ডা পানি।তুমি আমা হাতপা বেধে রাখ, নয়তো দেখবে আমি ফাস দিয়ে মরে গেছি।আমার মাথা খারাপ, কুত্তা পাগল অবস্থা। রাবেয়া মেয়েটার জন্য কষ্ট লাগে।তুমি বুঝবা না, তুমিতো "শঙ্খনীল কারাগার" পড় নাই।আহারে! কি কষ্ট।"

আব্বা কাজ করেন না, আম্মা সংসারের হাল ধরার জন্য স্কুলের মাষ্টারি চাকরি নিলেন।আপা তখন সিক্সে পড়েন। সেদিন স্কুলে থেকে ফিরে দেখলেন, আব্বা সিলিং ফ্যানে ঝুলছে। একটা চিঠি লিখে গেছেন__
শাপলা,
আমি আত্মহত্যা করি নাই।হঠাৎ আমার মাথাটা খারাপ হয়ে গেল। রাবেয়া মেয়েটা সারাক্ষণ চোখের সামনে আসে।ওর কষ্ট সহ্য হয় না।

আমাদের আব্বা আম্মা দুজনেই সুদর্শন ছিলেন। তাদের রূপের আমি কিছুটা পেয়েছি। আপা একটুও পায়নি।আম্মা অত্যন্ত রূপবতী ছিলেন, তাই নানা ভাই তার পড়ালেখার ব্যবস্থা বাড়িতেই করলেন।শরীফ নামের এক বুদ্ধিমান এতিম ছেলেকে লজিং মাষ্টার রাখলেন। আম্মা এই লজিং মাষ্টারের সাথে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে এলেন।আপা বলে, আম্মার পোষা ময়না, সেতার, নাচের নুপুর ঘাগড়া অনেক প্রিয় ছিল। এগুলাও আনেননি। আম্মার পায়ের গোছা অবধি লম্বা চুল ছিল, আব্বা নাকি তেলও কিনে দিতে পারতেন না।তাই স্কুলে চাকরি নেয়ার সময় আম্মা চুল কেটে ফেললেন। আম্মার মাত্র দুইটা শাড়ি,তাই বাড়িওয়ালা আন্টির পুরনো বোরকা চেয়ে নিয়েছেন। সবই দুঃখের স্মৃতি। মাঝেমধ্যে সুখের স্মৃতিও বলে।চাঁদনী রাতে আম্মা গান করতেন __
"সখি ভালোবাসা কারে কয়..........."
আমার খারাপ লাগে, আমি আম্মার গান শুনতে পাইনি।

আমার জন্মের সময় আম্মা মারা গেলেন। আম্মার জন্য বাড়িওয়ালা আন্টি-আংকেল খুব কেদেছেন।আমি নাকি একটুও কাদিনি, চোখ বড়বড় করে ইতিউতি তাকিয়ে থাকতাম।বাড়িওয়ালা আংকেল আন্টি আমাদের ও বাড়িতেই থেকে যেতে বললেন, কিন্তু আপা থাকতে রাজি হয়নি।পিচ্চি আমাকে নিয়ে নানা বাড়ি চলে গেল।বড় মামা, ছোট মামা আপাকে বাড়িতে ঢুকতে দিল না।খুব জোর বৃষ্টি হয়েছিল সেদিন, আপা ওখানে দাঁড়িয়ে ভিজলো।আপা সেদিন কেমন লজ্জার মধ্যে দিয়ে গেছে ভাবলেও কান্না আসে।আমাদের আম্মা এত কষ্ট করেছেন, কিন্তু এই আলিশান বাড়িতে ফিরে আসেননি। আর আপা ওবাড়িতে বেহায়ার মত আশ্রয় চাইল!

নানাভাই সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেই মামাদের খুব বকলেন।মায়ের লাশ এনে তার মায়ের পাশেই কবর দিলেন। নিজে কবরে একটা শিউলি গাছ লাগালেন।আম্মা প্রতিদিন শিউলি ফুলের মালা বেণীতে পরতেন।
নানী বলেন, নানা ভাইয়ের একমাত্র বোন ছিলেন একদম আপার মত দেখতে। আত্মহত্যা করেছিলেন, কেন কেউ বলতে পারে না।এই জন্যই নানা ভাই আমাদের বাড়িতে জায়গা দিয়েছিলেন।আমরা আম্মার ঘরটা থাকার জন্য পেলাম।ঘরে আম্মার একটা বড় ছবি ছিল, আল্লাহ সম্ভাব্য সকল সৌন্দর্য আম্মাকে দিয়েছিলেন। আমি নাকি সারাবেলা ঐ ছবির সামনে বসে থাকতাম।আমরা ঐ বাড়িতেই বড় হয়েছি, নানা ভাই আমাদের অনেক আদর করতেন। এজন্যই হয়তো বাকিরা আমাদের দেখতে পারতো না।আমরা নানা ভাইয়ের সাথে খেতে বসতাম।উৎসবে নানা ভাই শুধু আমাদের নিয়েই কেনাকাটা করতে যেতেন।বাকিদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা।

আমরা ওবাড়িতে নানা ভাইয়ের আদরে বড় হচ্ছিলাম। সবাই আপাকে বলতো আহ্লাদী,আর আমাকে বলতো অপদার্থ। আমাকে কোন কাজ করতে বললেই নাকি আপা কেদে একাকার করে ফেলতো।ও বাড়িকে কেবল বড় মামার মেয়ে লাবণ্য আমার সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা করতো, রান্নাবাটি খেলার সময় আমার জন্য চা বানিয়ে আনতো। একবার আপাকে দু'চারটা করমচা দিয়ে বললো,"বন্যাপু, তুমি আমার সাথে মুহিবের বিয়ে দিবে?" সেই থেকে লাবণ্যর সাথেও আমার খেলা বন্ধ হয়ে গেল।

সময় দ্রুত চলে গেল।আমি নকলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে আর আপা হাজী জাল মামুদ কলেজে পড়েন।আমরা একসাথে স্কুলে যাই।নানা ভাই কাজ না থাকলে আমাদের এগিয়ে দেন।রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে রফিক ভাই, আজাদ ভাই, ইমরান ভাই।আজাদ ভাই, ইমরান ভাই আমার জন্য চকলেট নিয়ে আসতো। আমি প্রতিদিন নিতাম, আপা রাগ করলেও নিতাম।তারা দুজন আপাকে প্রেম নিবেদন করে ব্যর্থ হয়ে, আপার নাম দিলো "মা কালী"। শুধু রফিক ভাই কিছুই বলতো না।আমাকে কখনো কিছুই দেননি।

আজাদ ভাই, ইমরান ভাই আপাকে মা কালী ডাকতেন বলেই হয়তো আপা কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিল।আর নামটা আপার কলেজে আর আমার স্কুলেও দ্রুত ছড়িয়ে গেল।আপার নামের সাথে মিলিয়ে আমার নাম হল রাম।আমি খুব সুদর্শন কিনা!

নানা ভাই আমাদের জন্য লজিং মাষ্টার রাখলেন।ফাহিম ভাই।উনি সেবার মেট্রিকে সারা দেশে প্রথম হলেন।নানা বাড়ি থেকে কলেজে পড়বেন আর আমাদের দুজনকে পড়াবেন।প্রথম দিন পড়াতে বসিয়েই ফাহিম ভাই বললেন,"এমন দারুণ দেখতে একটা মেয়েকে ওরা মা কালী ডাকে কেন?তোমার নাম হওয়া উচিত কৃষ্ণকলি!"
আমি খেয়াল করেছি।ফাহিম ভাই সেদিন সারাক্ষণ আপার দিকে তাকিয়ে রইলেন। আমি যে ইচ্ছে করে একটা অংক ভুল করলাম,উনি খেয়ালই করলেন না।

এই প্রথম এই শেষ, আপা আর ফাহিম ভাইয়ের কাছে পড়তে যায়নি।আমি একাই পড়তাম।ফাহিম ভাই, সারাক্ষণ আপার কথাই জিজ্ঞেস করতেন।আমার খুব ভালো লাগতো। নানা ভাই ছাড়া আরেকজন আপাকে খুব ভালোবাসে।
আমাদের সুখের দিন দ্রুত ফুরিয়ে যায়, তেমনি সেবছর নানা ভাই মারা গেলেন। মামারা আপাকে বিয়ে দিয়ে দিল রফিক ভাইয়ের সাথে।রফিক ভাই ততদিনে ডাক্তার হয়ে গেছেন। আমি ভেবেছি আপা দ্বিমত করবে, আপা কিছুই বললো না।আমি দুএকবার ফাহিম ভাইয়ের কথা বলতে চেষ্টা করলাম। আপা আমার কথা শুনলোই না।

ফাহিম ভাই ঘোষণা দিলেন,আপাকে তার সাথে বিয়ে না দিলে উনি নেংটা হয়ে দেশে দেশে ঘুরবেন।কেউ তার কথাই শুনলো না।আমিও বিশ্বাস করলাম না, একটা বড় মানুষ নেংটা হয়ে ঘুরবেন, কেউ বিশ্বাস করবে?তিনি যদি বলতেন, আত্মহত্যা করবেন। তবে নিশ্চয়ই সবাই বিশ্বাস করতো!

আপা আমাকে আর আম্মার ছবিটা নিয়ে রফিক ভাইয়ের ভাড়াকরা বাসায় চলে এল।না এসে উপায় নেই, রফিক ভাইয়ের বাবা মা এ বিয়ে কিছুতেই মেনে নিলেন না।
আসার সময় দেখলাম, ফাহিম ভাই দাঁড়িয়ে আছেন।ধবধবে ফরশা একটা মানুষ গায়ে কিছুই নেই শুধু একটা গামছা দিয়ে লজ্জাটা ঢাকা।আপা ফিরেও তাকাল না।একটা সুদর্শন যুবক দিগম্বর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, দেখতে খারাপ লাগছে।
রফিক ভাই তার কাছে গিয়ে বলল,"ভাই কেন পাগলামি করছেন?বাড়ি যান, কাপড় পরুন।"

দুই রুমের বাসায় কোন আসবাব নেই।রফিক ভাই খুব লজ্জা পাচ্ছেন।আপাও কিছু বলছে না। আপা আমার হাত ধরে মেঝেতে বসে আছে।রফিক ভাই আমাদের নিয়ে মার্কেটে গেলেন।আমি আর রফিক ভাই এক রকম পাঞ্জাবি কিনলাম।আপার জন্য কেনা হল নীল শাড়ি।
আপা কিছুতেই শাড়ি পরবে না।আমরা জোরাজোরি করে শাড়ি পরালাম।রফিক ভাই কুচি ঠিক করে দিলেন।

আমি আর রফিক ভাই এক রকম পাঞ্জাবি পরে আপার হাত ধরে বসে রইলাম।আমি হাত ছাড়িয়ে চলে যেতে চাইলাম।আপা হাত ছাড়লো না।রফিক ভাই আপার থুতনী ধরে মুখ উঁচু করলো। আপা কান্না শুরু করলো। রফিক ভাই আমাদের জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।কিছু মানুষের হাতেও অনেক মায়া থাকে।আমরা তিনজন ভোরবেলা পর্যন্ত কাদলাম।রফিক ভাই কত ভালো, অথচ আমি ভাবতাম আজাদ ভাই, ইমরান ভাই আপাকে অনেক ভালোবাসে!

আমাদের দিন ভালোই যাচ্ছিল।শুধু জায়গা পরিবর্তন হয়েছে, আর কিছু না।আপা আমাকে নিয়েই ব্যস্ত। রফিক ভাই হাসপাতালে যাচ্ছেন, এখনো নাস্তা করেনি। এ নিয়ে তার মাথা ব্যথা নেই।আমার যে কি লজ্জা লাগতো!
এর মাঝে জন্ম নিল আয়ান।আপার ভালোবাসা দুভাগে ভাগ হয়ে গেল।আমার অপরাধবোধই একটু কমলো।আয়ান দেখতে নাকি একদম আব্বার মত, কোন কাজ মন দিয়ে করতে পারেন না।খুব বই পড়ে, এই বয়সেই "শঙ্খনীল কারাগার" দুবার পড়ে ফেলেছে।

আমাদের আনন্দ বেশিদিন থাকে না।আমাদের পুরনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিতেই হয়তো একদিন দেখা গেল, ফাহিম ভাই বাসার নিচে ঘোরাঘুরি করছেন।আপা জানালা দিয়ে একবার দেখেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলল।রফিক ভাই হাসপাতাল থেকে ফেরার সময় দেখলেন। ফাহিম ভাই আমাকে আর আপাকে ছাড়া কাউকে চিনতে পারেন না।মাথার চুল বেশ লম্বা, এত বছরে চুল দাড়ি কেটেছেন মনে হয় না।পরনে ছেড়া একটা গামছা।একটা ধবধবে ফরশা রাজকুমার মতন দেখতে একজন লোকের এমন দশা দেখে খারাপ লাগে!
আয়ানের আগ্রহের শেষ নেই।
"বাবা, উনি কে?"
"উনি তোমার মামা।"

"উনি কি পাগল?"
"না, উনি একজনকে খুব ভালোবাসেন তাই একটু সমস্যা হচ্ছে আরকি!"

"তাই!উনি কাকে ভালোবাসেন?"
"তোমার আম্মুকে।"

"আমি, তুমি, মুহিব মামা সবাইতো আম্মুকে অনেক ভালোবাসি। আমরা কবে গামছা পরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরবো?"
রফিক ভাই হাসলেন। আমরা একসাথে রাতের খাবার খেলাম।আপা আম্মা আব্বার আনন্দের কিছু ঘটনা বলল।

পরদিন সকালে রফিক ভাই ফাহিম ভাইকে বাসায় নিয়ে এলেন।আয়ান তিনি মিলে ডলেডলে গোসল করিয়েছেন,চুল দাড়ি কাটিয়ে এনেছেন। আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরে দেখি, ফাহিম ভাই খেতে বসেছেন।আমাকে দেখে হাসলেন।কি দারুণ লাগছে তাকে।একেবারে ২৪ বছরের যুবক!
আপা, আয়ান, রফিক ভাই তাকে ঘিরে বসে আছে।আমিও যোগ দিলাম।কেউ কিছু বলছে না।আপাই নীরবতা ভাঙলো।
"কেন এমন করছেন, ফাহিম ভাই?"
"আমিতো আগেই বলেছি।তোমার সাথে বিয়ে না হলে, নেংটা হয়ে দেশে দেশে ঘুরবো।"

"তা তো করছেন না।পরনে গামছাতো থাকে।"
"মানে মুখ ফশকে বলে ফেলেছি, লজ্জা লাগে।তুমি বললে তাও করবো!"

আয়ান গেঞ্জি-প্যান্ট খুলে ফেলল।বলল,"মামা, দেখ।ভালোবাসায় লজ্জা নেই।এই যে আম্মুকে আমি অনেক ভালোবাসি।এই দেখ, নেংটো হয়ে গেলাম।কই আমারতো লজ্জা করছে না!"
আপা একটু হেসে আবার কথা বলা শুরু করলো।
"তাই করুন।তবে এখান থেকে দূরে চলে যান।আপনাকে দেখলেই বিরক্ত লাগে।ভালো হয়, যদি আপনি মারা যান।"
আপা উঠে চলে গেল।

তারপরের ঘটনা আজকে সন্ধ্যায় ঘটলো। আমি ফিরতেই এলাকার লোকজন বললো, এক লোক সারাদিন নেংটা হয়ে বাসার সামনে ঘুরছিল।এখন প্রাইমারী স্কুলের পাশে মজা পুকুর পাড়ে যে পুরনো আমগাছ, তাতে ফাসি নিয়েছে। আমি দৌড়ে গেলাম, দেখি ফাহিম ভাই আমগাছ থেকে ঝুলছেন।গায়ে কিছুই নেই, গামছাটাও নেই।হাতে একটা নুপুর। নিশ্চয়ই মায়ের নুপুর, আপা হারিয়ে ফেলেছিল।কত জায়গায় না আমরা দুজন খুজেছি!

দুলাভাই কিছুই জানেন না।আমি ঘটনা বলতেই জোরকরে আপাকে ছাড়িয়ে নিচে এলেন।পুলিশ এল, লাশ নামানো হল।তিনি দ্রুতই জানাজা পড়ানোর ব্যবস্থা করলেন। এলাকার ইমাম একটু ইতস্তত করছিল, তিনি কিভাবে ম্যানেজ করলেন জানি না।চালাবন কবরস্থানে ফাহিম ভাইকে করব দেবার ব্যবস্থা করা হল।যে লোকটা এমন দুঃখী,অভিমানী একটা মেয়েকে সামলিয়ে সুখী রেখেছেন, এজন্য নিজের পরিবার ত্যাগ করতেও দ্বিধা করেননি। তার জন্য কোন কিছুই অসম্ভব না!

আপা কবর স্থানের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।মেয়েদের কবর স্থানে ঢোকা নিষেধ। লাশ করবে নামানো হচ্ছে।আপা দৌড়ে ভেতরে ঢুকে গেল, লাশ জড়িয়ে হাউমাউ কান্না জুড়ে দিল।কেউ কিছু বলছে না, এই দুঃখী মেয়েটার জন্য একটুআধটু নিয়ম ভাঙা হলে অবশ্যই আল্লাহ অখুশি হবেন না।আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল!

কেবল আয়ান একটানা কথা বলে যাচ্ছে, একবার আমাকে,একবার রফিক ভাইকে ধরছে।
"আব্বু, তুমি মাকে বল।আমরাতো আমি, আমরা মাকে মামার চেয়েও বেশি ভালোবাসবো।"
"এই মামা, তুমি মাকে বল।আমরা আছিতো।আমরাও আম্মুকে অনেক ভালোবাসি।"
ইমাম সাহেবও আফসোস করছেন,"আহারে কি কষ্ট! কি কষ্ট!"
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৪
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×