somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বই রিভিউ- সোনালি স্বপ্নের অপমৃত্যু

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বইয়ের নাম: সোনালি স্বপ্নের অপমৃত্যু
লেখক: এম রহমান লতিফ (ব্লগ নিক ল)
প্রকাশ কাল: ২০১৯
প্রকাশক:সিদ্দিক আহমেদ, পায়রা প্রকাশ, বন্দর বাজার, সিলেট।
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৫৬
মূল্য: দেশে ১৬০ টাকা, বাইরে ২ ডলার।



সোনালি স্বপ্নের অপমৃত্যু বইটিতে লেখকের দুটি ছোট গল্প স্থান পেয়েছে। একজন লেখকের লেখা তার জীবনের দর্পন। লেখকের জন্ম বৃহত্তর সিলেটে এবং কর্ম লন্ডনে। গল্প দুটির মূল চরিত্র গুলোও এই স্থানদুটি ঘিরে আবর্তিত হয়েছে। দ্বিতীয় গল্পে অবশ্য এর সাথে মধ্যপ্রাচ্যও যোগ হয়েছে। বিদেশের আকাশে টাকা ওড়ে এই মানসিকতার লোকদেরকে পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে বইটি টেক্সট বই হিসাবে পড়িয়ে পরীক্ষা নিতে পারলে ভাল হতো। লেখক একজন পজিটিভ মানসিকতার মানুষ যিনি মানুষের মানবিক দিকটির দিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন। দুটি গল্পেই লেখক একাধিক পরোপকারি নিঃস্বার্থ চরিত্র ভালো ভাবে একেছেন।

আধুনিক মানুষের জীবনের জটিলতা আমি এ বইয়ে খুঁজে পাইনি। চরিত্র গুলো বড় সরল। বোদ্ধা পাঠক এই লেখা কতখানি গ্রহন করবে সে বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে। প্রথম গল্পে কামালের ভুল বুঝে ঠিক পথে ফিরে আসার ঘটনা আমার কাছে বাস্তব সম্মত মনে হয় নি। তবে লেখকের এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা অনেক বেশি, কাজেই এরকম ঘটনা ঘটতেও পারে। চাচার মোটিভেটিং স্পিচে সাইকো রোগির ভালো হবার ঘটনা পুরাতন দিনের বাংলা সিনেমার কাহিনীকে হার মানায়। দ্বিতীয় গল্পে অক্ষম স্বামীকে রেখে কাজের লোক কে নিয়ে বৃটিশ পাসপোর্টধারি মহিলার পালিয়ে যাবার ঘটনা লিখতে গেলে অনন্য কল্পনাশক্তি লাগে। ব্রিটেনের মতো দেশে স্বামীকে তালাক দিয়ে অন্য কারো সাথে ঘর করার জন্য কোন মহিলাকে ঘর ছেড়ে পালাতে হবে কেন তা বোধগম্য না।

ব্ইটির প্রচ্ছদ ভালো, কাগজের মান ও ভালো। পৃন্টার্স লাইনে লেখা আছে "প্রকাশ কাল: একুশে গ্রন্থ মেলা ২০১৯"। কাল আর স্থানের পার্থক্য যারা জানে না তারাও প্রকাশক হচ্ছে। তৃতীয় প্রচ্ছদে লেখক পরিচিতির স্থানে লেখা " ...কিন্তু তাঁর ভিতরে সাহিত্যের সকল শাখা প্রশাখা বিরাজমান থাকায় তিনি কবিতা , গল্প ও উপন্যাসেও সমান পারদর্শী।" সম্পাদকের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দেখানো প্রয়োজন না লেখকের শল্য চিকিৎসক দেখানো প্রয়োজন বুঝে উঠতে পারি নি। উৎসর্গ পত্রে লেখা "একমাত্র ছোট্ট বোন যে আজ বরফশীতল দেশ কানাডা । "


এরকম অসংখ্য অসংলগ্ন বাক্য রয়েছে পাতায় পাতায়। বইটির সম্পাদকের মাতৃভাষা বাংলা বলে আমার মনে হয় নি। একটি দুটি বানান বিভ্রাট আমার কাছে বড় ব্যাপার না, কিন্তু পাতায় পাতায় বারে বারে তা থাকলে পাঠক হোচট খাবেই।

বইটির বাধাই ভালো না, সেলাই মাঝ বরাবর না যেয়ে ধারের অনেক খানি খেয়ে নিয়েছে। আঠার অপব্যবহারের কারনে প্রথমের দুটি পাতা জোড়া লেগে আছে। ওভারঅল প্রিন্ট কোয়ালিটি ভালো হলেও তৃতীয় পৃষ্ঠার এক জায়গায় প্রিন্ট দেখে মনে হয় রাবার স্ট্যাম্প মারা।




আমার রেটিংঃ ৩/১০ (প্রচ্ছদের জন্য ১, কাগজের জন্য ১, যন্ত্রনা ৫৬ পৃষ্ঠায় সীমাবদ্ধ রাখায় ১ ।

যারা বইটি সংগ্রহে রাখতে চান রকমারি থেকে সংগ্রহ করতে পারেন, পায়রার স্টল (স্টল নম্বর ৩৩৭) আমি রিকমেন্ড করবো না। ভিড় না থাকা সত্তেও বইটি ওখান থেকে কিনতে অনেক সময় লেগেছে। স্টলে যারা ছিল তাদের আন্তরিক বা চটপটে মনে হয় নি। অথবা তারা ক্লান্ত ছিল।

ব্লগার জনাব এম রহমান লতিফ (নিক ল) গত ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ব্লগার কাওসার চৌধুরীর 'বায়োস্কোপ' এর উপর পরিচিতিমূলক কিছু কথা লিখেন। ওখানে ৪৬টা মন্তব্য এসেছিল, উনি ৪৬টার জবাবই দিয়েছেন। আমি একটা মন্তব্য করার প্রেক্ষিতে উনি আমাকে ওনার বইয়ের একটা রিভিউ করতে লিখেছিলেন। মেলায় ওনার একটা কবিতার বই আর একটা গল্প সংকলন বের হয়েছে। কবিতা থেকে আপাতত দূরে আছি। গল্পের বইটা গতকাল হাতে পাবার পড়েছি এবং তার পর এই রিভিউ।

২৪ ফেব্রুয়ারি, রাত ১১:১০- সংশুদ্ধিঃ জনাব খায়রুল আহসান, বিদ্রোহী ভৃগু, এবং ভুয়া মফিজ ভাইদের ধন্যবাদ। উপরের ইটালিক লেখার প্যারার শেষের বাক্যে একটি শব্দ বাদ পড়ে গেছে। 'গল্পের বইটা গতকাল হাতে পাবার পড়েছি এবং তার পর এ রিভিউ' এর স্থানে 'গল্পের বইটা গতকাল হাতে পাবার পরে পড়েছি এবং তার পর এ রিভিউ' হবে। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ধন্যবাদ।


সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:০৮
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×