ফেনী নদি। বাংলাদেশ অংশ থেকে তোলা।
একজন শিক্ষিত মেধাবী বুয়েটিয়ান হয়েও কোন স্টাডি নেই, বাঁশের কেল্লা টাইপ পেইজ থেকে জ্ঞান আরোহন।
আবরাব একজন শিক্ষিত বুয়েটিয়ান হয়েও কিউবিক ফুট/সেকেন্ড মাপ না বুঝে ফেক নিউজে গা ভাসাইছিল।
আবরার হত্যাকান্ডের দায় ছাত্রলীগের হলেও প্রথম আলো, বিবিসি বাংলা দের ফেক নিউজ কম দায়ী নয়।
সব জানার পরও ইচ্ছাকৃত ভাবে পাঠক টানার জন্য ফেক নিউজ তথা গুজব তৈরি করে।
ফেক নিউজ ১
বিবিসি হাসিনার ছবি দিয়ে লিখেছে - গ্যাস রফতানির সিদ্ধান্ত, বাংলাদেশ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস যাবে ভারতে।(পরে তীব্র আপত্তির পর শিরনাম চেইঞ্জ করেছে)
ফেক নিউজ ২
টিভি মিডিয়া প্রথম আলো সহ পত্রিকাগুলো লিখেছে - ফেনি নদীর পানি প্রত্যাহার চুক্তি, ফেনি নদির পানি ভারতের সাবরুমে যাবে।
বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে কোন প্রাকৃতিক গ্যাস ভারতে যাচ্ছে না। যাচ্ছে এলপি গ্যাস (লিকুইড প্রপেন গ্যাস)। সিলিন্ডারে।
প্রথম আলো কমেন্ট বক্সে বা ফেবুতে অনেকে প্রশ্ন করছে ভারত নিজে আমদানি করে না কেন? ভারতের গোলাম হাসিনা বেশীদামে গ্যাস কিনে কমদামে দিচ্ছে ভারতকে!
প্রকৃত পক্ষে বাংলাদেশ সরকার কোন গ্যাস পাঠাচ্ছে না।
বাংলাদেশে ইতিমধ্যে প্রাইভেট সেক্টরে এর ভেতর অনেক বড় বড় গ্যাস অবকাঠামো গড়ে উঠেছে।
গ্যাস সিলিন্ডারে পাঠাবে/বিক্রি করবে বাংলাদেশের বেসরকারি দুটি এলপি গ্যাস ইমপোর্টার, প্রসেসর, ডিষ্ট্রিবিউটার (ওমেরা বেক্সিমকো ইত্যাদি) এরা ইম্পোর্টেড এলপিজি বোতলজাত বা সিলিন্ডারে ভরে রফতানি করতে পারবে।
করতেই হবে এমন না। করবে কর্পোরেট ব্যাবসায়ীরা। ব্যাবসায়ীরা লাভ হলে বেচবে। না হলে নাই।
আফটার অল বাংলাদেশের লাভ। ডলারে লেনদেন হবে, কর্মসংস্থান হবে, সবটাই বাংলাদেশের লাভ।
ভারতেরও লাভ, ভারত এই সিলিন্ডার শিলিগুড়ি মেঘালয় আসাম হয়ে দুর্গম পাহিড়ি রাস্তায় ৬ দিন লাগে ত্রিপুরায় সিলিন্ডার পাঠাতে। বাংলাদেশের কম্পানী একদিনেই কম খরচে পারবে। মুল ব্যাপারটা এটাই।
আর ফেনি নদির পানির ব্যাপারটা কোন মিডিয়াই কেউই সঠিক ভাবে তুলে ধরতে পারেনি। হাসিনাও সঠিক ব্যাখ্যা বুঝিয়ে বলতে পারে নি। আর হাসিনার মুখপত্র হাসান মাহামুদ একটা বেয়াদব। কথা যানে না, বডি ল্যাংগুয়েজটাই বেয়াদব। খালি বলে ফেনি নদীতে ভারতের পুর্ন অধিকার আছে, বলার পর পাবলিকের গালি খেয়েছে।
বাস্তব জিনিষটা হচ্ছে ফেনী নদি উজান অংশটা সমগ্র নদীটাই বর্ডার, নাফ নদির মত নদী মাঝে সীমান্ত রেখা। নদীর এপারে বাংলাদেশ ওপারে ভারত। কাঁটা তার নেই। উভয় দেশের কৃষকরা নদীর পানি ব্যাবহার করছে।
এটা সত্য যে নদীর পানি উভয় দেশের সমান অধিকার। আকাবাকা নদী সবটাই এপাড়ে বাংলাদেশ ওপারে ভারত।
বাংলাদেশে রামগড় শহর আগে থেকেই নদীর পানি ব্যাবহার করছে। কৃষক পাইপ লাগিয়ে সেচ দিচ্ছে। ভারতীয় কৃষকও পাইপ লাগিয়ে সেচ দিচ্ছে। উভয় পাড়ে বিজিবি বিএসএফ চৌকি আছে, সবাই বেশী সতর্ক, কারন কাঁটাতার নেই।
৮ হাজার অধিবাসি নিয়ে 'সাবরুম বাজার' পোরসভা ইচ্ছা করলে বিনা অনুমতিতেই নদীতে পানির পাইপ লাগাতে পারতো। ভদ্রতার খাতিরে অনুমতি নিয়ে করেছে। যেহেতু সরু একটি যৌথ নদী, নোম্যানস ল্যান্ডের কাছে সরকারি ভাবে পাইপ লাগাতে গেলে ভিয়েনা কনভেনশন লংঘন হয়। বিজিবি গুলি করতে পারে।
সাবরুম- রামগড় এলাকার ম্যাপটা একবার দেখলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ম্যাপ। ফেনি নদির এপাড়ে সাবরূম ওপারে রামগড়
তিস্তা আর ফেনী নদীর বিষয়টি এক পাল্লায় মাপাটাও মিথ্যা প্রচারনার অংশ।
তিস্তার বিষয়টি জটিল, একটি জলবিদ্যুত কেন্দ্রও আছে। আছে ইরিগেশন বাধ প্রকল্প। যে কারনে এটি অনেক জটিল। তবে এরপরও ভারতের সবগুলো কেন্দ্রিয় সরকার সবসময়ই এটি স্বাক্ষর করতে রাজি ছিল এবং আছে। তিস্তা নিয়ে Water Sharing Agreement বা পানি বন্টন চুক্তির ড্রাফট প্রস্তুত হয়ে স্বাক্ষরের অপেক্ষায় আছে ২০১১ সাল থেকেই। শেখ হাসিনার নিজস্য উদ্যোগেই এটি হয়েছিল। এখন শুধু সই করার অপেক্ষায়।
কিন্তু বাগরা বাধিয়েছে মমতা ব্যানার্জি।
উনি ভারতী অংশের সহ জামাত-শিবিরের প্রধান পৃষ্টপোষক। জেএমবি, আনসারুলদের মত জঙ্গিদের প্রমানীত আশ্রয় দাতা। অবস্যই টাকার বান্ডিল ও ভোটের মাধ্যমে। উনি ক্ষমতায় থাকতে তিস্তা চুক্তি হবে না, লিখে রাখতে পারেন।
ভারতের সংবিধান অনুযায়ী কেন্দ্রিয় সরকার পানি বন্টন প্রশ্নে রাজ্য সরকারের অনুমতি/সমঝোতা ছাড়া কোন আন্তর্জাতিক চুক্তি করতে পারে না। করলেও বাস্তবায়ন হবে না সমস্যা সেখানেই।
৪৭ সালে বৃটিষ আমল শেষে পুর্ববাংলা কোলকাতা বন্দর ব্যাবহার নিয়েও ফেক নিউজ চলছে।
৪৭ থেকে ৬৫ যুদ্ধের আগ পর্যন্ত পুর্ব বাংলার মানুষ অবাধে ভারতে যেতে পারতো, বন্দর, রেলওয়ে ব্যাবহার করতে পারতো ভেতর দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তান পর্যন্ত যেতে পারতো। ড ইউনুসের জীবনবৃতান্তে দেখা যায় উনি নারায়নগঞ্জ থেকে রেলওয়ের স্টিমারে গোয়ালন্দ, এরপর ট্রেনে উঠে করাচি গেছিলেন অবাধে, এলাহাবাদ বাদে ট্রেন বদলও করতে হয় নি।
বার বার বলা হচ্ছে নতজানু নতজানু !!! বাস্তবতা কি?
আওয়ামীলীগ স্বাধীনতা যুদ্ধ নেতৃত্বদান কারি বিজয়ী দল। আওয়ামীলীগের বাইরে সামরিক তত্বাবধায়ক, আধাসামরিক মিলে বহু বছর ক্ষমতায় ছিল, গত ৪৮ বছরের আওয়ামীলিগের বাইরের শক্তি ২৯ বছর বাংলাদেশে রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল।
ভারত বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্কের তূলনামুলক আলোচনা করলে লাভ লস, বার্গেইন, সীমান্ত হত্যা কমিয়ে আনা, পানি চুক্তি, বিদ্যুৎ আমদানি, বাণিজ্য বৃদ্ধি, বাণিজ্য ভারসাম্য কমিয়ে আনা, ছিটমহল উদ্ধার, সমুদ্রসীমা উদ্ধার, এই সকল বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ভাবে, তথ্য প্রমাণ নিয়ে আলোচনা করলে এই আওয়ামী বিরোধী বিএনপি-জামাত জোটের অবস্থান, অর্জন, যোগ্যতা কি?
সীমান্ত হত্যা .. ফালানী ?
পরিসংখ্যান বলছে বিএনপি/জামাতের সময়ে সীমান্তহত্যা শুধু ডাবল না টৃপল ছিল! বর্তমানে কমতে কমতে কমবেশী ১৬-১৭ জনে নেমে আসছে।
জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া বার বার ভারত সফর করে কি অর্জন করতে পেরেছে?
চিপা দিয়ে পাকিস্তান অপশক্তির টাকা খেয়ে উলফাকে আশ্রয়, জাহাজ বোঝাই অস্ত্রসরবরাহ, কন্টেনার বোঝাই জাল টাকা, পাকি মদদে পুরোটা মেয়াদ ভারতের সাথে গুতোগুতি করে কাটিয়েছে। জামাতকে ব্যাঙ্ক, বিমা, ডেভেলপার, হাউজিং ব্যাবসা দিয়ে দানবে পরিনত করেছে
অন্যদিকে, আওয়ামীলিগ নাকি দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে! ৭১ এর সময়ে বাংলাদেশের প্রপাগান্ডা ছিল চরম ভারত বিরোধী! সেটি আজও বহাল আছে! বঙ্গবন্ধু মাত্র ৩ মাসের মধ্যের ভারতীয় সেনার প্রত্যাবর্তন করাতে সক্ষম হয়েছিল! এমন ঘটনা বিশ্বের অন্য কোথায় নজিরবিহীন। বঙ্গবন্ধুর ভারত মৈত্রী চুক্তিকে ছাগুরা বলত, গোলামী চুক্তি! অথচ, সেই ২৫ বছরের চুক্তিতে কোন বিপদ হয় নি। কেউ বাতিল করেনি! এর ৯৬ সালের পরে পার্বত্য শান্তি চুক্তি, গঙ্গা পানি চুক্তি, ছিটমহল উ দ্ধার, সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তি, বিদ্যুৎ আমদানি, ৩ পয়েন্টে স্থল ফাইবার অপটিক কানেকশান, (বর্তমানে সাবমেরিন লাইন কাটা পড়লেও সমস্যা হয় না)। সরাসরি রেলওয়ে কানেকশান।
এসব কোন সরকারের আমলে হয়েছে?
ভারতের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখলে আমাদের সমস্যাটা কি?
বিএনপি-জামাত সরকার পাকিস্তানের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আমাদের কি লাভ হয়েছে? দেশের কোন অর্জনটা হয়েছে শুনি?
ভারতের সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বোঝাপড়া শেখ হাসিনার সেরা অর্জন।
এখন সেই রাজনৈতিক অবস্থানকে অর্থনৈতিক দিক থেকে আরো লাভজনক করতে হলে বাংলাদেশের বার্গেইনিং ক্যাপাসিটি বাড়ানোর বিকল্প নেই!
ছোট দেশ হওয়াতে বাংলাদেশ এখনো কিছুটা ডাউন হিলে আছে, ভারত অনেক শক্ত অবকাঠামো এখানেই অসমতা তৈরী হচ্ছে!
শক্ত অবকাঠামো দক্ষ শিক্ষিত পেশাদারি সেটআপ যতদিন না তৈরি হচ্ছে ততদিন হয়তো অপেক্ষা লাগবে! তবে, শেখ হাসিনা থাকাকালীন অবসর প্রাপ্ত নৌবাহিনীর একজন দক্ষ ব্যক্তি ব্যাবহার করে অতি জটিল সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি সফল হয়েছে, কঠিন ছিটমহল সমস্যা নিষ্পত্তির সুফল নগদে পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশের বড় সমস্যা সমস্যা হলো কথিত শুশীল সুজন কুজন ইউনুস সিপিডির কিছু হস্তি ড. ফাজিল নজরুল মতো একদল অর্গানিক ফাজিল আছে যারা ভাতা পেয়েই খুশী। বছরের পর বছর বলে যাচ্ছে ভারতকে সব দিয়ে দিল, খেয়ে ফেললো ইত্যাদি গান গেয়ে। বাংলাদেশের বার্গেনিং ক্যাপাসিটি বাড়ানোর জন্য কি কি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সেসব স্টাডি না করে .. বলে শুধু ছাগু সুরে বলে ভারত সব নিয়ে গেল .. দেশ শেষ হয়ে গেল।
তবে সেই মহলের ড. জাফরুল্লা আমার দেখা অসীম মেধাবী দেশপ্রেমিক। টাকা খেলেও বিবেকটা এখনো সবটা বিক্রি করেনি মনে হয়। হাসিনার উচিত ড. জাফরুল্লাকে ব্যাবহার করা।
আবরাররের খুনিদের মত মেধাবী আমাদের দরকার নেই।
শুশীল সুজন কুজন সিপিডির হস্তি টাইপ মেধাবীও আমাদের কাজে আসবেনা আবরাররের ফিলোসফার শিবির বাঁশের কেল্লা ভিত্তিক মেধাবীও আমাদের দরকার নেই।
আরো কিছু বলার ছিল। পরে যোগ করবো।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:৫৩