একটি ভারতীয় পত্রিকার খবর - "ভারত সরকারের নির্দেশনাতেই কাশ্মিরি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ভিসা দেয়া হচ্ছে না"
মৌলবাদিরা এতদিন ভারতীয় NRC বিরোধিতা করে কথিত ভারতীয় অনুপ্রবেশ বিরোধী পোষ্ট দিচ্ছিল।
ইদানিং আবার অনুপ্রবেশকারিদের জন্য দরদ উথলে পরেছে।
গোহাটিতে বাংলাদেশে মেডিক্যাল শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থী পাঠানোর কাছে নিয়োজিত একটি এডুকেশনাল কনসাল্টেন্সি ম্যানেজার (আসলে আদম পাচার দালাল) বলেন, ছেলেমেয়েরা মধ্য ডিসেম্বর থেকে দিল্লিতে কড়াকরি দেখে, কলকাতা, গৌহাটি ও এমনকি আগরতলার হোটেলগুলোতে বসে আছে। বাংলাদেশে ঢুকার জন্য।
সাধারণত কাশ্মিরি শিক্ষার্থীরা দিল্লির বাংলাদেশ হাই কমিশনে ভিসার জন্য আবেদন করে। কিন্তু NRC প্রেক্ষিতে আসাম উত্তাল হওয়ায় গোহাটি আগরতলা বাংলাদেশ কনসাল বলা হয়েছে যে মেডিকেলে ভর্তি হতে জিপিএ ৫ সমমানের ভারতীয় সনদপত্র দেখালে কেবল ভিসা দেয়া হবে। এমনিতেই ডিসেম্বর থেকে তামাবিল দিয়ে বাংলাদেশী পর্যটকদের যেতে দেয়া হচ্ছে না।
তাদের কাছে সনদ পত্র নেই বলেই দিল্লি বাংলাদেশ এম্বেসিতে না যেয়ে সহজে বেয়াইনি প্রবেশ করতে দালালদের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত দুর্বল পয়েন্ট কলকাতা, গৌহাটি ও এমনকি আগরতলায় ভিড় করছে।
আর ঢুকতে ব্যার্থ হয়ে আদম পাচারকারি দালালরা হাংবাদিকদের বলছে "ভারত সরকারের নির্দেশনাতেই কাশ্মিরি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের ভিসা দেয়া হচ্ছে না"
মমতার সমর্থনে জাসির ঘাটি পশ্চিমবঙ্গের একটি পত্রিকা South Asian Monitor এর খবরটি সরাসরি দিলাম।
বাংলাদেশে প্রবেশ করার ভিসা পেতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রায় ৩৫০ কাশ্মিরি মেডিক্যাল শিক্ষার্থী প্রায় এক মাস ধরে দিল্লি , কোলকাতা , গৌহাটি ও আগরতলায় আটকা পড়ে আছে। ভারতের অন্যান্য রাজ্যের শিক্ষার্থীরা কোনো সমস্যা ছাড়াই ভিসা পাচ্ছে।
বাংলাদেশে মেডিক্যাল শিক্ষার জন্য ছাত্রদের পাঠানোর কাজে জড়িতরা বলছে, ভিসা পেতে দীর্ঘ বিলম্বের কারণে তারা সমস্যায় পড়েছে। কারণ ওই কোর্সের জন্য অর্থ পরিশোধকারী অভিভাবকেরা এখন পরিশোধিত অর্থ ফেরত চাইছেন।
বাংলাদেশ, চীন ও অন্যান্য দেশে মেডিক্যাল শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থী পাঠানোর কাছে নিয়োজিত একটি এডুকেশনাল কনসাল্টেন্সি ম্যানেজার বলেন, ছেলেমেয়েরা মধ্য ডিসেম্বর থেকে দিল্লি, কলকাতা, গৌহাটি ও এমনকি আগরতলার হোটেলগুলোতে বসে আছে। সাধারণত কাশ্মিরি শিক্ষার্থীরা দিল্লির বাংলাদেশ হাই কমিশনে ভিসার জন্য আবেদন করে। কিন্তু চলতি বছর আমাদেরকে বলা হয়েছে যে সমমানের সনদপত্র দিলেই কেবল ভিসা দেয়া হবে।
নিজের ও তার প্রতিষ্ঠানের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি কথা বলেন। তিনি ‘খারাপ পরিণতির’ আশঙ্কায় পরিচয় প্রকাশ করতে চান না। কলকাতার হোটেল রকস্টারে এই লেখককে ওই ম্যানেজার বলেন , কিন্তু তবুও লিখুন , কারণ আমাদের শিক্ষার্থীরা বেপরোয়া।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কূটনীতিকরা ভারতের অন্যান্য রাজ্যের ছাত্রদের ভিসা দিচ্ছে। কিন্তু আমাদেরকে তারা বলছেন যে কাশ্মিরি শিক্ষার্থী নিয়ে কিছু সমস্যা আছে।
আরেকটি এডুকেশনাল কনসালটেন্সির ম্যানেজার বলেন, প্রায় ২০ জনের মতো কিছু কাশ্মিরি শিক্ষার্থীকে ভিসা দেয়া হয়েছে এবং তারা বাংলাদেশের মেডিক্যাল কলেজগুলোতে যোগ দিযেছে। ফলে আমরা ভাবছি যে ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে এমন কিছু ঘটে থাকতে পারে। হয়তো ভারত সরকারের নির্দেশনাতেই কাশ্মিরি শিক্ষার্থীদের ভিসা দেয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, গৌহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার দীর্ঘ দিনের ছুটিতে রয়েছেন। ফলে গত দুদিন ধরে আগরতলা মিশনের সহকারী হাই কমিশনার কিরিটি চাকমা রয়েছেন গৌহাটিতে।
পরিচয় প্রকাশ না করার ব্যাপারে আবারো শর্ত দিয়ে ওই ম্যানেজার বলেন, তিনি অন্যান্য শিক্ষার্থীর ভিসা পেয়েছেন। কিন্তু ১৫ জন কাশ্মিরি ছাত্রের ভিসা আবেদন আটকে আছে। এসব শিক্ষার্থী গৌহাটি থেকে আবেদন করেছিল। তাদেরকে বলা হয়েছে, দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন ভিসা দিচ্ছে না। চাকমা বলেন, এসব ভিসা ইস্যু করার এখতিয়ার তার নেই।
ওই ম্যানেজার বলেন, আমাদের অর্থ ফুরিয়ে যাচ্ছে। এসব ছেলেমেয়ে মধ্য ডিসেম্বর থেকে হোটেলে আছে। তাদের সাথে অনেক অভিভাবকও আছেন। আমরা সবাই বড় ধরনের অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছি।
ভারতে বাংলাদেশের মিশন সাধারণত শিক্ষা ভিসার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সমমানের সনদপত্র চেয়ে থাকে। এর অর্থ হলো, বাংলাদেশের সমমানের সনদপত্র তাদের দিতে হবে।
আরেকটি এডুকেশনাল কনসালটেন্সির মালিক বলেন, কিন্তু সাধারণ কাশ্মির থেকে অন্তত ৬০০ ছাত্র ও অন্যান্য রাজ্য থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বাংলাদেশে যায় মেডিক্যাল পড়াশোনা করতে। ভারতীয় সনদপত্রের মান সম্পর্কে মিশন জানে। এ কারণে তারা সমমানের সনদপত্রের ওপর জোর দেয়া থেকে বিরত থাকছে।
দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস সেক্রেটারি ফারিক হোসাইন সিনিয়র কাশ্মিরি সাংবাদিক আলতাফ হোসাইনকে (সাবেক বিবিসির) বলেন, কাশ্মিরি শিক্ষার্থীদের ভিসা না দেয়ার কোনো নীতি নেই। তিনি এই লেখককে বলেন, কারিগরি কারণে ভিসা পেতে বিলম্ব হতে পারে। তবে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়নি।
কলকাতার এক বাংলাদেশী কূটনীতিক (তিনি তার পরিচয় প্রকাশ করেননি) এই লেখককে বলেন, ধরে নেয়া হয় যে কাশ্মিরি শিক্ষার্থীরা দিল্লিতে হাই কমিশনে আবেদন করবে। আমাদের মিশনের এলাকাগত কড়াকড়ি রয়েছে। ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশ জনপ্রিয় গন্তব্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছ।
ভুটানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পেশাগতভাবে চিকিৎসক। তিনি ২০০১ সালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে গ্রাজুয়েট হন। পরে তিনি ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট-গ্রাজুয়েট ডিগ্রি নেন সার্জারিতে।
স্মাইল কনসালটেন্সির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে ভারতের কঠিন ভর্তি পরীক্ষা থাকায় কিংবা ভারতের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ফি অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি ভারতীয়দের জন্য ক্রমবর্ধমান হারে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠছে।
এতে আরো বলা হয় , বাংলাদেশের মেডিক্যাল শিক্ষার মান ভারতের সমমানের। উভয় দেশেই এমবিবিএস প্রগ্রাম চলে ইংরেজিতে। পাঠ্য বইগুলোও একই। নিজ রাজ্যে কাশ্মিরি ছাত্রদের চিকিৎসা শিক্ষা পাওয়ার সুযোগ সীমিত। এর ফলে তাদের কাছে ভারতের অন্যান্য রাজ্য ছাড়াও বাংলাদেশ হয়ে ওঠছে আকর্ষণীয় স্থান।
South Asian Monitor
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৩০