করোনা ভাইরাস কি খুব মারত্নক? সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে? ৬ কোটি মারা যাবে?
মনে হয় না। ইতিহাস সেরকম বলে না।
নিকট অতীতে করোনা ভাইরাসের মত একই জাতের বেশী প্রাণঘাতি SARS, MERS, বা এরকম যতগুলো ভাইরাসের সংক্রমণের কথা শুনেছি, তার কয়টা সারা পৃথিবীতে বা বাংলাদেশে খুব ব্যাপকভাবে সংক্রমন করেছে?
অল্পই। SARS, MERS বা ইবোলা বাংলাদেশের দুয়ারে পাও ফেলেনি।
পুর্ব এশিয়াতে (২০০৩) করোনার চেয়ে অনেক বেশি প্রানঘাতি ভাইরাস SARS- এ আক্রান্তের মোট সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে আট হাজার আর মৃতের সংখা ৩৭ টি দেশে ৭৭৪ জন (ডেথ রেট 9.6%)
২০১২ তে কম ঘনবসতির দেশ সৌদিআরবে ছড়ানো প্রাণঘাতি মার্স ভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ২৪৯৪
আর মৃতের সংখা ২৪ টি দেশ মিলে ৮৫৮ জন।
শুধু সৌদি আরবে আক্রান্ত - 1030 মৃত 453 (ডেথ রেট 34.4% সৌদিআরবে 44%)
২০০৭-১০ সময়টাতে বার্ডফ্লু মোটামুটি ভয়াবহ ছিল। ডেঙ্গুর গ্লোবাল ডেথ রেট ৬০% বাংলাদেশে ছিল ৬৩%
ডেঙ্গু আক্রান্ত-মৃত গ্লোবাল ডেথ রেট মাত্র ১%
দুর্বল অবকাঠামো নিয়ে বাংলাদেশে ডেঙ্গু ডেথ রেট একটু বেশি ২%
বর্তমান আতঙ্ক 'করোনা ভাইরাস' আক্রান্ত-মৃত এজাবপ্ত প্রাপ্ত ডেথ রেট ২%
করোনা ভাইরাস (nCoV 2019) ভাইরাস বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে সংক্রমনের সম্ভাবনা কতটুকু?
এর উত্তর পাওয়ার জন্য একটু চিন্তা করুন।
চীনে বা চীনের যে কোন একটি প্রদেশে বা জেলায় একটা ভাইরাস ছড়ালেই সেটা সব জায়গায় সমানভাবে ছড়াবে?
সেরকম কখনোই হয় না, সেই যুগ আর নেই যে প্লেগে বসন্তে গ্রামের পর গ্রাম, প্রদেশের পর প্রদেশ উজাড় হয়ে যাবে।
মানুষ অনেক সচেতন, প্রতিটি দেশেই রাষ্ট্রিয় অবকাঠামো ও সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক উন্নত হয়েছে। বিজ্ঞানের অর্জিত জ্ঞান গ্লোবাল বিনিময়, জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থাও ব্রিজ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সকল রাষ্ট্রই সার্বক্ষনিক তথ্যবিনিময় করে যাচ্ছে। যোগাযোগ, জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রিয় সংস্থাগুলো যে কোন কঠিন ব্যাবস্থা নিতে পারে।
এছাড়া কোন কারনে জনগন বা রাষ্ট্র অব্যাবস্থার কারনে অবহেলায় বা আদিমকালের মত ভাইরাস সব যাগায় ছড়িয়ে সব মে্রে ফেলবে এমনটাও ভাবা ঠিক না।
আদিমকাল থেকে ভাইরাস আক্রমন হয়ে আসছে, কোন জাতীই সম্পুর্ন বিলুপ্ত হয় নি
ক্ষতিকর জীবানু সব মানুষের মধ্যে ব্যাপক ছড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় আবহাওয়া, ভিন্ন এলাকার মানবকুলের genetic, জিবানু প্রতিরোধ ক্ষমতা, এবং অন্যান্য environmental factor সব জায়গায় সব মহাদেশে সমান থাকেনা।
শীতপ্রধান দেশের জার্মস ট্রপিক্যাল উষ্ণ অঞ্চলে আসলে এমনিতেই দুর্বল হয়ে যাওয়ার কথা। ভিন্ন রেসের মানুষের ইমিউন সিষ্টেমও একটা ফ্যাক্টর। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কম বা বেশী জীবানু প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে, পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে ফেলে। আবার উল্টাটাও হতে পারে।
একসময় কলেরা-ডায়েরিয়াতে গ্রামের পর গ্রাম গঞ্জের পর গঞ্জ নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। এখন শুধু স্যালাইন খেয়ে বা শিরাতে দিয়ে বেঁচে যাচ্ছে। প্রাচিন আমলের ক্লাসিকেল প্লেগ মানব দেহে ইতিমধেই রেজিষ্টান্স হয়ে গেছে। ক্লাসিকেল প্লেগও বিলুপ্ত।
করোনা ভাইরাস এখনো বাংলাদেশে আসে নি। এর আগে সার্স, মার্স, ইবোলাও আসেনি।
বার্ডফ্লু এসেছিল। ডেঙ্গু আসার দরকার হয় নি। আগেও ছিল এখনো আছে।
করোনা ভাইরাস এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আসেনি। আসলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
কারো শরিরে এই ভাইরাস আছর করলেও বড় কোন ভয় নেই।
এই ভাইরাস মার্স বা বার্ডফ্লুর মত অতটা প্রানঘাতি না। চীনের বাহিরে যারা আক্রান্ত এরা কেউ মরেনি।
চিকিৎসকরা বলেছেন সঠিক তত্তাবধানে সুস্থ ব্যক্তির এই রোগে কোন ক্ষতি করতে পারে না। ৭ দিন ভুগবে। এই যা।
যাদের হাপানি বা ডায়াবেটিস আছে। বা বেশি বয়ষ্ক দুর্বল এরাই মৃত্যু ঝুকিতে।
চীনা কতৃপক্ষও বলেছে মৃতেরা সবাই বেশি বয়ষ্ক দুর্বল বা পুর্ব-রোগগ্রস্থ ।
* করোনা নিয়ে আবার পোষ্ট দিতে হল।
সামুতে একটি পোষ্ট "উইঘুরদের উপর নৃশংস নির্যাতনের কারণেই চীনাদের এই শাস্তি"
এই পোষ্টে দেখাগেল অনেক শিক্ষিত কবি সাহিত্যিক একমত হয়ে গজব সমর্থন করলেন। কষ্ট পেলাম।
রোগের প্রাদুর্ভাব গজব হয় কি করে?
তাহলে কদিন আগে রসুলের দেশ সৌদি আরবে মার্স ভাইরাসে এত উট ও মানুষ মারা গেল কিভাবে?
সৌদি আরবে উটের দুধ ও মুত্রপান থেকে এই রোগের সূত্রপাত।
সৌদি আরব সহ ২৪ টি দেশে মোট ৮৫৮ জন মারা যায়।
সৌদি আরবেই বেশী আক্রান্ত বেশী মৃত। রোগী 1030 মৃত 453 (ডেথ রেট 34.4% সৌদিতে বেশি 44%)
রোগব্যাধির জন্য গজব দায়ি না। উটও দায়ি না, সাপও দায়ি না।
শুধু জিবানু আক্রান্ত সেই উট ও সাপ বা শুধু জীবানুকে দায়ি বলা যেতে পারে।
সৃষ্টির আদি থেকেই মানবকুল ও অন্যান্য প্রাণীকুল পরস্পরের পাশাপাশি থেকেই দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়েছে। একে অন্যের খাদ্য চেইন রোগ শেয়ার করেছে। এটা নতুন কিছু নয়।
অহেতুক ধর্মান্ধতা রেসিজম আর ঘৃণা ছড়ানো ঠিক না।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ ভোর ৬:৪২