করোনায় সবাই মরে যাবে?
এতটা সহজ না।
ডায়মন্ড প্রিন্সেস ও দ্য ওয়েস্টারড্যাম এ দুটি জাহাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ
ডায়মন্ড প্রিন্সেস ৩৭০০ যাত্রী এক মাসের মত সমুদ্র যাত্রা
ডায়মন্ড প্রিন্সেস ৩৭০০ জনের ভেতর ৩৭৮ জনের করোনা টেষ্টে পজিটিভ পাওয়া যায়। মারা যায় মাত্র ২জন, পরে আরো ৪ জন মারা যায়।
জাহাজটি গত পয়লা ফেব্রুয়ারি হংকং থেকে যাত্রা শুরু করে। তখনো করোনা শুধু উহানে সীমাবদ্ধ ছিল।
দ্য ওয়েস্টারড্যামে জাহাজটি ১,৪৫৫ জন যাত্রী এবং ৮০২ জন ক্রু ছিল। দুই সপ্তাহ ধরে প্রশান্ত মহাসাগরে প্রমোদবিহার করছিল জাহাজটি। এই বিহার শেষ হয়ে যাওয়ার পর যাত্রিদের ভেতর করোনা রুগি সন্দেহে জাহাজটি কোথাও ভিড়তে না পেরে জ্বালানী ও খাদ্য সঙ্কট দেখা দেয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ২২৫৭ জনের ভেতর ২০০ ব্যক্তি সংক্রমিত হয়ে করোনা লক্ষণ ধরা পরে, কেউ মারা যায় নি
শেষ ১৫ দিন যাত্রিরা জাহাজে মাথা ঠুকলেও এরপরও পৃথিবীর কোন বন্দরে ভিড়তে দেয়া হয় নি জাহাজ দুটিকে।
জাপান, তাইওয়ান, গুয়াম থাইল্যান্ড ও ফিলিপিন্স কোন দেশই বন্দরে ভিড়তে দেয়নি জাহাজটিকে। ক্যাম্বোডিয়া অল্পকিছু দিন বহিনংগোড়ে থাকতে দিয়েছিল। তবে নামতে দেয় নি।
এরপরও জাহাজে করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের হার অতটা বিপদজনক হয় নি।
ডায়মন্ড প্রিন্সেস জাহাজের ৩৬৯৮ জন যাত্রি দু হপ্তা জাহাজ কোয়ারেন্টিন করে সবাই বাসায় ফিরেছে।
দ্য ওয়েস্টারড্যামে জাহাজটির যাত্রিরাও বাসায় ফিরেছে
জ্বর/কাসি হলেই করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা না করার পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠী।
তার মতে, অকারন অতিরিক্ত পরীক্ষা নিজের ও ভারতের বিপদ বাড়াবে।
কেননা চাহিদার তুলনায় করোনা টেষ্টিং কিট বিশ্বব্যাপি অপ্রতুল।
যদি কারও ফ্লু বা সর্দি থাকে প্রথমে নিজেকে বাসায় থেকে আইসোলেশনে থেকে করোনা লক্ষণ ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। প্রথম দিন শুধু ক্লান্তি আসবে। তৃতীয় দিন হালকা জ্বর অনুভব হবে। সঙ্গে কাশি ও গলায় সমস্যা হবে।
পঞ্চম দিন পর্যন্ত মাথায় যন্ত্রণা হবে। পেটের সমস্যাও হতে পারে। ষষ্ঠ বা সপ্তম দিনে শরীরে ব্যথা বাড়বে এবং মাথার যন্ত্রণা কমতে থাকবে। তবে পেটের সমস্যা থেকেই যাবে। অষ্টম ও নবম দিনে সব লক্ষণই চলে যাবে। তবে সর্দির প্রভাব বাড়তে থাকে। এর অর্থ আপনার
ইমিউনিটি (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা) বেড়েছে ও করোনা হলেও আপনার আর বিপদ আশঙ্কা নেই।
ডা. দেবী শেঠী আরো বলেছেন বলেছেন, এসব ক্ষেত্রেও আপনার করোনা পরীক্ষার প্রয়োজন নেই। কারণ শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে। তবে যদি অষ্টম দিনে আপনার শরীর আরও খারাপ হলেও ঘর থেকে বের হবেন না করোনা। হেল্পলাইনে ফোন করে করোনা টেষ্ট করে নিতে হবে।
আমেরিকায় কাউকে মাস্ক পরে ঘুড়ে বেড়াতে দেখি নি, নিউইয়র্ক/ডালাস/আটলান্টা/নিউজার্সি কোথাও না।
আগে শুধু বাংগালি পাড়ায় অল্প কজন পড়তো, এখন করোনা ব্যাপক ছড়িয়ে যাওয়ার পরও কেউ মাস্ক পরিধান করে না।
(কারন CDC আগেই বলেছে সাধারন মাস্ক এই ভাইরাস প্রতিরোধ করে না, বরং অন্য জীবানু জমিয়ে আরেক বিপদের কারন হয়। সাধারন মাস্ক পড়বে শুধু করোনাক্রান্ত রোগি , আর ডাক্তার-নার্সরা রোগীর কাছে আসার সময় পড়বে উচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন N95 মাস্ক)
টেষ্টিং কিট নিয়ে হইচই নেই, টেষ্ট করার বেশি দরকারও নেই।
নিউইয়র্কে বেশিরভাগ করোনা আক্রান্ত লোকদের হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে না। দম আটকে মরনাপন্ন না হওয়া পর্যন্ত। PPE ও সিট সংকটের কারনে হয়তো।
করোনা রোগিদের স্বাসকষ্ট বেশী না থাকলে বাসায় রেখেই চিকিৎসা চলছে। আইসোলেশন + হোমকয়ারেন্টিন। টেলিফোনে ট্রিটমেন্ট চলছে। অকারন টেষ্ট করাও হচ্ছে না। কারন ১৪ দিনে না মারা গেলে এমনিতেই ভাল হয়ে যাবে।
কেউ করোনা টেষ্ট করতে বেশি উতলা হলে কিছু ব্যাবস্থা আছে। সিটি নিয়ন্ত্রিত ল্যাবের সামনের রাস্তায় একটি টেবিল বিছিয়ে, গাড়ীর লাইনে গাড়ীর জানালায় ড্রাইভথ্রু অর্থাৎ গাড়ীথেকে পেশেন্ট বা কেউ নামতে পারবে না। জানালায় ড্রাইভিং লাইসেন্স/পরিচয় পত্র দেখিয়ে জানালার বাইরে হাত বাড়িয়ে রক্ত দিয়ে চলে যেতে হচ্ছে। যে প্যারামেডিক রক্ত নিচ্ছে তারও অনেকের মাস্ক দেখিনি, অনেকের থাকলেও নীচে নামানো (হাসবো?) এই টেষ্ট কি আসলেই করনা টেষ্ট? নাকি ভিন্ন রিসার্চ করছে ওরা বোঝা মুসকিল।
দুদিন পর অনলাইনে রেজাল্ট। টাকা চাচ্ছে না, হয়তো ফ্রী বা পরে বিল পাঠাবে।
এছাড়া সাধারন জ্বর সর্দিকাসি রোগিদেরও হাসপাতালের ধার কাছে আসতে দেয়া হচ্ছে না। ডাক্তারের চেম্বারেও সাধারন চিকিৎসা দেয়া বন্ধ রেখে বাসায় থেকে টেলিফোনে ট্রিটমেন্ট দেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশেও এমনটা দরকার।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:০৮