somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১.সুতি চাদরের কেমিক্যাল জঙ্গল আর শিকার কাহিনী

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যেদিন এই ঘটনা ঘটার কথা সেদিন আকাশটা মেঘ কালো থাকার কথা। কথা ছিলো শীত শীত মেঘলা হাওয়ায় ভেসে যাবে, সেই আলো যা খনিজ সুর্যের পেটের ভেতর থেকে এই মাত্র জন্ম নিলো, সেই আলো রশ্মির রেখায় রেখায় জড়ানো থাকবে স্যাঁতস্যাঁতে জরায়ুর আঠালো তরল। ফলে সেদিন তাপমাত্রা থাকার কথা ছিলো পাহাড়ী নদীর পানির মত তরল আর স্বচ্ছ আর বরফের ঘামের মত লবণাক্ত, প্রবাহমান। পুরো শহর তোলপাড় করে উড়ে যাবে হাওয়া, সেই বাতাস, সেই পবন যে পবনে বসে ঈশ্বর দেখছেন জন্ম হচ্ছে মানুষ-সঙ্গিনীর, ঘুমের ভেতর স্বপ্ন দেখবে কেউ । আর তার স্বপ্ন ভেঙে যাবে বিস্ময়ের দমফাটানো শব্দে। নিরালা মাঠের ভেতর হাজারে হাজার সাপের খোলশ, তার ভেতর ছড়ানো আছে পাখি খাদ্য দানা। হাজারে হাজারে পাখি, নীল পাখি তবু উড়ে নামছে খাদ্যাভাস বসত। নীল পাখি নামে কেননা এই ঘাস-বন আর এই পাখিবোধক উত্তোরাধিকার তাকে নামিয়ে ফেলে ডানার শব্দে। আর ওত পেতে থাকা বন বেড়াল ঠিক শুনতে পাচ্ছে হৃদয়ের প্রান ভ্রমরার ডাক। তাকেও ঝাপিয়ে পড়তে হবে, সে জানেনা রক্ত অনুরাগ। আর তখনই লক্ষ লক্ষ পাখি উড়াল দেবে, অথচ পড়ে থাকবে একা একটা পাখি, তার পালক, রক্ত, বাঁচার অর্থহীনতা আর সেই সমস্ত পড়ে থাকা সাদা খোলস। এমনই তো কথা ছিলো।

ঐতো আমার বিছানার কাভারে আঁকা ফুল আর ঘাসের কেমিক্যাল বনে পরে আছে নিরীহ একটা দীঘল চুল, বাতাসে উড়ছে, উড়ে যেতে চাইছে বিশুদ্ধ সতীত্বের কাছে। যেনো এই মাত্র একটা কালো মহিষ তার রক্তের শেষ বিন্দু দিয়ে লড়ে পরে আছে, ধীরে ধীরে ওর রক্তে বাসা বেঁধে নিচ্ছে মরুদেশের শীতভোর, আমাদের কাক ডাকা হেমন্ত কালে। একটা চুল উড়তে উড়তে ফিরতে চাচ্ছে ঐ চুল জঙ্গলের দিকে, আবার হারিয়ে যেতে চাচ্ছে কালো মহিষদের বিস্তৃত দৌড়ের ভেতর। আজ মাত্র একটা চুলের স্মুতি পরে রইলো আমার কেমিক্যাল জঙ্গলে। যিনি ঈশ্বর তিনি হয়তো খেয়াল করেছেন কিভাবে একপাল কালো মহিষের দল থেকে ছিটকে পড়ে আছে মাত্র একটা যুবতী মহিষ আর কিভাবে তার পতন হয় এই সুতোর ফুল আর ঘাসের বনে। তিনিই হয়তো দেখে থাকবেন, কেনান তিনি ছাড়া আমাদের দেখার মত কোনো তৃতীয় কালো চোখ ছিলো না । তাহলে ঈশ্বর আছে কেনানা যে কারো মনে হতে পারে তিনিই দেখে থাকবেন কখন প্রাণীটি ছিটকে পরে ছিলো গোত্র থেকে। ঈশ্বর কি আছেন? যেহেতু আজ বাতাসে মেহেগুনী ফল ফাটার শব্দ শুনেছিলাম সেহেতু তিনি নেই। যেহেতু ঐ শরীরী আগুনের আঙুলের মেহেদী রঙ এত কিছুর পরও মুছে গেলো না সেহেতু ঈশ্বর নেই। যেহেতু আমরা এর পর দেখতে পেয়েছিলাম এই মাত্র আমরা স্বর্গচ্যুত, কেনান সেই দৃশ্য ভেসে উঠেছিলো, আমরা পিছন ফিরে মাত্র একবার স্বর্গের নন্দন কানন দেখে লাফিয়ে পড়েছিলাম পৃথিবীর দিকে। তারপর আজ আমাদের দেখা হলো ইডেনের পথে, একে বলা যায় শিকারের মাঠ। যেহেতু এত কিছুর পর আমরা অনুভব করেছিলাম সেই দিনটিকে যে দিন দুজন মানুষ অনুভব করেছিলো প্রথম নগ্নতা। এতো কিছুর পরও আমরা যেহেতু চোখে দেখেছিলাম সেহেতু ঈশ্বর নেই। আমাদের কারোই চোখ ছিলো না। ফলে এই দৃশ্য কি ঘটে গেছে আমাদের অন্তরালে ঈশ্বরের মায়াবী মঞ্চের পর্দার উপর উলম্ব বরাবর? না, ওটা ছিলো আমার সুতির ফুলের বিছানা। তবে কেন দেখেছি একটা মহিষ পড়ে আছে এভাবে একা একা। আমার চোখের ভেতর লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মহিষের নগ্ন চুল, আর তাদের খসিয়ে ফেলানোর সুতীক্ষ বাসনা। আমি বসে আছি একা মৃত মহিষের পাশে আমার সনির্মিত বনবাসে, দেখছি একটা ভুলে ঝরে পরা চুল উড়েতে চাচ্ছে আমার মাথার চারপাশে। আমি কি একে উড়তে দিবো? তবে উড়ুক। উড়ে উড়ে ঘুরে ঘরে কথা বরতে চাচ্ছে মহিষ। আমি কি তাকে কথা বলতে দিবো? তবে বলুক।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:১০
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×