somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাগদরনামা 01

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ সকাল ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ডাগদর সাব নির্বাচনে খাড়াইয়া জয়লাভ করিয়াছেন।

তাঁহার দলের নাম বান্দরিক শক্তি। যখন দলের আকিকা করিয়াছিলেন, সকলেই খাবি খাইয়াছিলো। বান্দরিক শক্তি! তবে কি ডাগদর সাব গোপনে বান্দরের তেল সেবন করিয়া বিশেষ শক্তি লভিলেন নাকি?

তবে তাঁহার ভক্ত এক অধ্যাপক আসিয়া সব জল করিলেন। "বন্দর হইতে বান্দরিক। যেমন জগত হইতে জাগতিক। কলস হইতে কালসিক। বলদ হইতে বালদিক। ইত্যাদি।"

লোকজন মুখের হাঁ বুজাইয়া কহিলো, "হাঁ, এইরূপ তো হইতেই পারে। কিন্তু বন্দর লইয়া অত টানা হ্যাঁচড়া ক্যানো?"

ডাগদর সাব একগাল হাসিয়া কহিলেন, "আমার শৈশব আর কৈশোর কাটিয়াছে বন্দরে বন্দরে বান্দরামি করিয়া। মানে বন্দর আর আমি, দুই হরিহরাত্মা। দুইজনে দুইজনার। বন্দর না থাকিলে আমি আজ থাকিতে পারিতাম না। তেমনি আমি না থাকিলে বন্দরও আর থাকিতে পারিবে না। তাই আমার জীবন যৌবন সবই আমি বন্দরের জন্য উজাড় করিবো। আমার এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগাবে বন্দর। আমি বন্দরকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি যোগাবো। তাই আমার দলের নাম বান্দরিক শক্তি। আপনারা দলে দলে আসুন।"

হাটেমাঠেঘাটে তখন বান্দরিক শক্তির নামে বিপুল প্রচারণা ঘটিলো। ডাগদর সাব কহিলেন, "আপনারা পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায়, ""ডাগদরের দেওয়ানাগোষ্ঠী"" গঠন করুন। যাহারা ডাগদরের জন্য সুশীল রাজনীতি করবে। দুনর্ীতি করবে না। সন্ত্রাস করবে না। কথা কাটাকাটি করবে না। তারা হবে সুশীল। ক্ষুদ্রসূচিকার দাম নিয়মিত কলাটামূলাটাকচুটা বেচিয়া শোধ করিবে। তাহাদের বাড়ির চাল কষ্ট করিয়া খুলিয়া আনিতে হইবে না। তাহারা সব নগদে জোগাইবে। এইরূপে দেশ আগাইয়া যাইবে। হাত লাগান ভাইসব।"

বান্দরিক শক্তির নামে বিপুল রব উঠিলো। কেহ বুঝিয়া হে না বুঝিয়া নারা দিতে লাগিলো ডাগদর সাবের নামে।

ছাগুরাম একদিন পথ ধরিয়া যাইতেছিলো, সে কী ভাবিয়া ডাগদর সাবকে ধরিয়া বসিলো, বান্দরিক শক্তির প্রতীক করিতে হইবে ছাগল।

ডাগদর সাব হাসিয়া খুন। বলিলেন, ছাগল তো গত সরকারের উন্নয়নের প্রতীক। আমি উহা লইবো কোন শোকে?

ছাগুরাম প্রচুর আর্গুমেন্ট করিতে উদ্যত হইলো, বুদ্ধির অভাবে করিতে পারিলো না, বিকল্প উপায় হিসেবে লাদি ছাড়িয়া ভ্যা ভ্যা করিতে লাগিলো।

ডাগদর সাব হাসিয়া কহিলেন, তাছাড়া আমেরিকায় বড় দুই পার্টি হাতি আর গাধা মার্কা লইয়া বড় পেরেশানিতে আছে। সকলে তাহাদের লইয়া কার্টুন আঁকে। ছাগল লইয়া শেষে বিপদে পড়ি আর কি।

ছাগুরাম তখন জেদ ধরিলো, ছাগল মার্কা না লইলে কাঁটাল পাতাকে মার্কা করিতে হইবে।

কথাটি ডাগদর সাবের মনপূত হইলো। তিনি কহিলেন, বাহ, বেশ। কাঁটাল পাতার মধ্যে সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির ইঙ্গিত রহিয়াছে। তাছাড়া বান্দরিক শক্তিও বৃদ্ধি পায় কাঁটাল পাতা খাইলে। ব্রাভো। উত্তম প্রস্তাব ছাগুরাম। আইস, তুমি আমার দলে সব্জিবিষয়ক পরামর্শদাতারূপে কাম করিবে।

ছাগুরাম সানন্দে নাচিয়া রাজি হইলো।

জনৈক সুশীল বাধা দিয়া কহিলো, ডাগদর সাব এ আপনি কী করিলেন? একটি ছাগলকে বান্দরিক শক্তিতে ঢুকাইলেন? এ কি ঠিক হইলো?

ডাগদর সাব বাধা দিয়া কহিলেন, আহ আর বিভেদ নয়। আগাইয়া যাইতে হবে। বান্দর ছাগল মানুষ খাটাস সকলকে আগাইয়া যাইতে হবে। এ জাতি পিছাইয়া থাকিতে পারে না।

বলিয়া তিনি আকর্ণবিস্তৃত একটি হাসি দিলেন। প্রবল জেল্লা বাহির হইলো। দেশসুদ্ধ লোক সে হাসিতে ভুলিয়া কাঁটাল পাতায় সীল মারিয়া আসিলো।

...

(চলিবেক)
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×