somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রতন ফটো স্টুডিও (পর্ব ২)

১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(৫)
" ইয়ে, রতনকে দেখছি না। কোথায় গিয়েছে বলতে পার?", ওর দোকানের ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলাম।
" না, বলে যায়নি। শুধু বলল বাইরে যাচ্ছি, ঘন্টাখানেকের মধ্যে চলে আসবে বলেছে ।"
" ও, আচ্ছা।"
" আপনি বসেন। অনেকক্ষণ তো হয়ে গেল। মনে হয় চলে আসবে।", ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল ছেলেটা।
আমি আরো ঘন্টাখানেক বসে থেকে চলে আসলাম। কিন্তু রতনের কোন পাত্তাই পাওয়া গেল না। মোবাইলটাও বন্ধ। কি হয়েছে কে জানে! কদিন থেকে দেখছি, ওর কি যেন হয়েছে। জিজ্ঞেস করলে কিছু বলেও না। প্রেমে-ট্রেমে পড়েছে কিনা কে জানে! ভাবগতিক দেখেতো, সেইরকম মনে হয়। এখন ওর সুসময়। দুধের মাছি আর ভ্রমরের আনাগোনা বাড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। তা হোক, কিন্তু পিছলে না পড়লেই হয়।
এতকিছু ভাবতে ভাবতে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বাজার পেরিয়ে যেতেই রতনের দাদুর সাথে দেখা হয়ে গেল।
" আদাব, কেমন আছেন?", বললাম আমি।
" এইতো আছি, বাবা, কোন রকম। তা তোমার কি খবর?", হাঁপাতে হাঁপাতে বলল রতনের দাদু।
" হুম, চলছে ভালই। কিন্তু আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন! এত হন্তদন্ত হয়ে কোথায় চললেন?", আমি বললাম।
" আর বল না, রতনকে খুঁজতে? মোবাইলে পাচ্ছি না অনেকক্ষণ। " টেনশনে বুড়োটার কপালে অনেক ভাঁজ পড়ল।
"আমিওতো দোকানে অনেকটা সময় বসে আসলাম। কোন পাত্তাই নাই ছেলেটার।" ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললাম আমি।
" ওর কি হয়েছে বলতো, বাবা। আজকালকার ছোকরা, জিজ্ঞেস করলে কিছুই বলে না। "
" নাতির বিয়ে দিন, সব ঠিক হয়ে যাবে।" হেসে জবাব দিলাম।
" কিসব বলছো! ঠাট্টা করছ কেন?" বিরক্ত হয়ে বলল রতনের দাদু।
" কিছু মনে করবেন না। আমার মনে হয়, আপনার নাতি... ", বলতে না বলতে সাইকেল চালিয়ে ওকে আসতে দেখলাম।
" কিরে.. এমন চোরের মত মুখ করে কোত্থেকে আসছিস" রতনের দিকে তাকিয়ে ধমকের সুরে বলল ওর দাদু।
" একটু কাজ ছিল"...বলে আমার দিকে তাকিয়ে নতুন বড় একটা কাজের অর্ডারের প্রসঙ্গ তুলে কথা ঘুরানোর চেষ্টা করল রতন।
" ওর সাথে কথা বলে দেখ তো বাবা, কি হয়েছে। আমার কিছু সুবিধার ঠেকছে না। শেষ কালে তীরে এসে আবার তরী না ডুবে যায়।" বলে বিরক্ত হয়ে বাড়ির পথে হাঁটা ধরল বুড়ো মানুষটা।
বেশি কিছু না বলে আমিও ওই দিনের মত চলে আসলাম কিছু উপদেশ দিয়ে। বুঝলাম ভালো লাগলনা সেগুলো।
এর দুই দিন পর রতনকে আমার বাসায় ডেকে আনলাম।
জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে। সব যেন শেয়ার করে। বুঝালাম, যা কিছুই করে না কেন ভালো মন্দ ভেবে যেন সিদ্ধান্ত নেয়।
তারপরও স্বীকার না করাতে ভালোমতো চেপে ধরতেই থলের বিড়াল বের হলো। যা ভেবেছিলাম তাই হয়েছে। রতন প্রেমে পড়েছে। তাও আবার সরকার বাড়ির মেয়ে। প্রেমে পড়েছে পড়ুক। কিন্তু এই জায়গায় একটা ভুল চাল চেলে ফেলেছে। অত বড় বাড়ির মেয়ের সাথে সম্পর্ক কখনোই ঠিকবে না। বললাম, সে পথ থেকে সরে আসতে। বিভিন্নভাবে বুঝানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু যা বুঝলাম, অল্প দিনের ভেতর জল অনেকদূর গড়িয়েছে। রতন বেশ সিরিয়াস এই রিলেশন নিয়ে। প্রেম যেমন অন্ধ, ঠিক তেমনি প্রেমের মরা জলে ডুবেও না। রতনের এখন ঠিক তেমন অবস্থা। এত যত্নে গড়া স্বপ্নটা এত তাড়াতাড়ি ভুল গতিপথে বাঁক নিবে ভাবাই যায় না।
যে ভয়টা পেয়েছিলাম, তাই হতে চলল। স্টুডিও চালাতে অনিয়মিত হয়ে পড়ল রতন। এক সময় দোকানে বসাও কমিয়ে দিল। দোকানের ছেলেটা দেখলে দেখল, না দেখলে নাই। স্বাভাবিক ভাবেই ইনকাম পড়তে থাকল। রতনকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে হেসেই উড়িয়ে দিত। কিছুই হবে না, এমনই মনোভাব তার। আত্মবিশ্বাসী রতন অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়ল। উদ্যোগী রতন হয়ে গেল প্রেমিক রতন।
সবকিছুই খুব দ্রুত ঘটতে লাগল। যে বিষয়টা আমার কাছে অদ্ভুত লাগল, তা হলো, আরো কত লোকই তো প্রেমে পড়ছে। সাথে চাকরি-বাকরি, ব্যবসা করছে। কারওতো এত কম সময়ে এত তাড়াতাড়ি অধঃগতি ঘটছে না। রতনের ক্ষেত্রে কেন এমন হচ্ছে! নাকি আমার নিজের কাছেই শুধু মনে হচ্ছে, রতনের প্রতি দুর্বলতার কারণে। কি জানি! এখনকার প্রেমগুলো মনে হয় এমনিই হয়। গড়তে দুইদিন, ভাঙতে একদিন টাইপ। প্রেমের বিষয়টা অনেক সেনসেটিভ আর একান্ত ব্যক্তিগত। তারপরও চোখের সামনে ছেলেটার ক্ষতি হচ্ছে, সেটা মেনে নিতে পারছিলাম না। এ ব্যাপারে আরো কয়েকবার বলাতে আমার প্রতি তার যথেষ্ট রাগ পুঞ্জীভূত হল এবং মুখে কিছু না বললেও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে লাগল। আমিও তারপর মৌনব্রত অবলম্বন করলাম। আর সময়ের অপেক্ষায় থাকলাম।
কিছুদিন না যেতেই ভ্রমরের গুঞ্জন বাসি হতে শুরু করল। মাটি শুকনো হয়ে তাতে ফাটল ধরা আরম্ভ হল। প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে ধরা পড়ে হাবুডুবু খেতে খেতে যখন গভীর ঘোরে থাকা মোহ কাটতে আরম্ভ করল; তখন সম্বিত ফিরে আসলেও দেরি হয়ে গেল। দোকানে অনেক ধার দেনা হয়ে গেছে।
একদিন রতন আমার কাছে আসল অপরাধী মুখ নিয়ে। শুধু তা নয় চোখে মুখে কয়েক দিনের নিদ্রাহীনতার স্পষ্ট ছাপও রয়েছে। এসে অনেকক্ষণ অবধি দাঁড়িয়ে থাকল। আমিও কোন কথা না বলে আমার কাজ করে যাচ্ছিলাম। ওর দিকে তাকিয়েও না তাকার ভান করে রইলাম। কিছুই বললাম না। রাগ অভিমানের পালা চলল বেশ কিছুক্ষণ। এরপর তাতে ইস্তফা দিয়ে আমিই প্রথম মুখ খুললাম। ওর মায়াবী মুখটার দিকে তাকিয়ে আমার মনের জমাট বাঁধা বরফগুলো সব গলিয়ে ফেললাম। রতন ও তার দুইহাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে আবেগে দু'চোখ ভাসিয়ে বুঝিয়ে দিল, সে তার ভুল বুঝতে পেরেছে। এরপর তার কাছ থেকে যা শুনলাম, তাতে আমার আরো একবার আক্কেলগুড়ুম হয়ে গেল। আর বুঝলাম,রতনের সাথে আমার এই কয়দিনে দূরত্ব তৈরি করাটা খুব ভুল হয়েছে। ও ছোট মানুষ ভুল করতেই পারে। কিন্তু আমার দূরে সরে থাকাটা ঠিক হয়নি। যাক, তারপরও যে সময়টার জন্য অপেক্ষা করছিলাম সেটা এসেই গেল।
সরকার বাড়ির মেয়ে রিনা সরকার (ছদ্মনাম) প্রেমের ফাঁদ পেতেছিল রতনের সাথে। তাও আবার ওর বাবার নির্দেশ মেনে। দোকানে বারকয়েক যাওয়া আসার সুবাদে রতনেরও দুর্বলতা তৈরি হয়েছিল ওর প্রতি। সেইটার সুযোগটাই কাজে লাগাতে চেয়েছিল সরকার মশায়। জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতা ছিল রতনের বাবার সাথে। যদিও রতন সেসব কিছুই জানত না। আর আশপাশের বাকি দোকানগুলোও পেরে উঠছিল না রতনের সাথে। সেগুলোর মালিক হল এলাকার চেয়ারম্যানের ভাই। তার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু সরকার মশায়। এছাড়াও বাজারের বেশ কয়েকজন দোকানের মালিকও তাদের চেয়ে এত কমবয়সী রতনের দ্রুত উন্নতি সহ্য করতে পারছিল না। তাই এই চক্রান্তে তাদেরও সম্মতি ছিল।
একসময় রিনাকে রতন যতই বিয়ের কথা বলত, সে ততই সেটা এড়িয়ে যেতে লাগল। নানান অজুহাত দেখানো শুরু করলে রতনেরও সন্দেহ হতে লাগল।
একদিন এক পূজোয় রতনের দোকানের ছেলেটাকে তার এক বন্ধু হঠাৎ মুখফসকে সবার ষড়যন্ত্রের কথাটা বলে ফেললো। রতনের সন্দেহ সত্যি হল আর ও প্রেমের দুনিয়া থেকে বাস্তবের মাটিতে এসে পড়ল। ততদিনে ব্যবসাটাও পড়ে যেতে লাগল। কিন্তু রতন যখন আবার রিনার কাছ থেকে সরে আসতে চাইল, তখন শুরু করল নতুন বিপত্তি। বুঝলাম ষড়যন্ত্রের এখানেই শেষ নয়।

(৬)
রামসুন্দর ঘোষ হঠাৎ স্ট্রোক করে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ল। বাম পাশটা অবশ হয়ে গেল। বুড়ো বয়সে এসে এত বড় অপমান লোকটা সহ্য করতে পারল না। করার কথাও না। আমিতো ভয় পাচ্ছি রতনের জন্য। এতসব ঘটনাক্রমে যদি নিজেকে খুব অপরাধী মনে করে তখন আবার কি না কি করে বসে!
বহুরূপীরা ক্ষনে ক্ষনে রুপ বদল করে। রিনা ও তার বাবা আর তাদের সহযোগীরা তাই করল।
একদিন সন্ধ্যায় রতনকে রিনা ইমার্জেন্সি দেখা করতে বলল। প্রথমে রতন রাজি হলনা। সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যখন সম্পর্ক করেনি তখন আর আহ্বানে নতুন করে সাড়া দেওয়ার কোন মানে নেই। ক্ষতি করতে চেয়েছিল; তা তো হলই। ব্যবসা আবার দাঁড় করাতে গেলে ভালোই বেগ পেতে হবে। কিন্তু না! রিনা নাছোড়বান্দা। দেখা সে করবেই। জিজ্ঞেস করাতে, মানা করলাম। রতন ও চাইছিলনা। পরে আবার কি মনে করে সেদিন সন্ধ্যার সময়েই দেখা করতে গেল। ব্যস,যা হওয়ার তাই হল। প্ল্যান করে রতনকে মেয়েলি কেসে ফাঁসিয়ে দিল।
অবাক করা ব্যাপার হল, রিনার পরিবারের কেউ পুলিশের কাছে না গিয়ে এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বারদের নিয়ে সালিশের ব্যবস্থা করে নিজেদের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করতে চাইল। রতনের দিক থেকে ব্যাপারটা আমার কাছে সুবিধাজনকই মনে হল। আর এই সময়ই ভালোমত বুঝা গেল, কিছু দোকানের মালিক বাদে বাকীরা আর এলাকার বেশিরভাগ মানুষ রতনের পক্ষেই। কিন্তু প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে সহজে মুখ খুলছে না।
সালিশের ব্যাপারটা আমি যতটা সুবিধাজনক ভেবেছিলাম বাস্তবে কিন্তু সেটা না। মূলতঃ সেটা সাজানো। ঘুরে ফিরে দোষ সেই রতনের উপরেই চাপাতে চাইল। পুরো ব্যাপারটা অযথা সময়ক্ষেপন করে দীর্ঘায়িত করে নিজেদের পক্ষেই নিতে চাইল। আর কিছু আপাতঃ যৌক্তিক কিন্তু অযৌক্তিক কারণ দেখিয়ে রতনের বিরুদ্ধে গ্রামের লোকদের ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করল। রিনার বাবা চেয়ারম্যানের ভাইয়ের ইশারায় কিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করল। সেটা শেষ পর্যন্ত হাতাহাতি আর মারামারিতে গিয়ে ঠেকল। এক পর্যায়ে রিনার বাবা ভীড়ের মধ্যে হুড়োহুড়িতে অনেকটা ইচ্ছে করেই রতনের দাদুর গালে একটা চড় বসিয়ে দিল। বুড়ো মানুষ তাল সামলাতে না পেরে উলটে পড়ে গেল। ঘটনার আকস্মিকতায় উপস্থিত সবাই হতভম্ব হয়ে গেল। শেষে সবার কাছে মাফ টাফ চেয়ে অমিংমাসিত ভাবে সালিশ শেষ করে যার যার বাড়ি ফিরে গেল।
সবাই বাড়ি ফিরে গেলেও, রাম সুন্দর ফিরতে পারল না। মাঝ পথেই মাথা ঘুরে পড়ে গেল। হজম করতে পারলনা অপমান। আর এভাবেই স্ট্রোক করেছিল রতনের দাদু। বুড়ো বেশিদিন বাঁচলো না। কয়েকদিনের ব্যবধানে ইহধাম ত্যাগ করল।
রতন অনেক মুষড়ে পড়ল। আমি সেই সময়ে ছুটি নিয়ে ঢাকা না গিয়েও তাকে সময় দিলাম। খুব মায়া লাগছিল ছেলেটার জন্য। এখন আপনাদের বলি, আমার একটা ছোট ভাই ছিল। ভাই বোনদের মধ্যে সবার ছোট। রতন আর ওর চেহারার অনেক মিল। ওর বয়স যখন দশ, তখন গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পুকুরে ডুবে মারা যায়। এত চঞ্চল ছিল সে। সবার খুব আদরের। এখনো থেকে থেকে খুব মনে পড়ে ভাইটার কথা। আর রতনের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে তো আরো বেশি ফিরে আসে তার স্মৃতি। এমনকি আমার স্ত্রীও রতনকে দেখে খুব অবাক হয়ে গিয়েছিল।
যাই হোক, এবার আসি আক্কেলগুড়ুমের ব্যাপারে। বাবা মারা যাওয়াতে ছেলে আসবে সেটাই স্বাভাবিক। না, মৃত্যুর খবর পেয়েও আসেনি। রতন বলল, শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে নাকি আসবে কলকাতা থেকে। সব ঠিকঠাক। ওরা যে ফোনে কথা বলেছে সেটাও আমি জানি। আমার সামনেই কথা হয়েছে। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগের দিনও এসে পৌঁছাতে পারেনি হরিপদ বাবু। ফোন করে বলল, পরের দিন চলে আসবে। আমরা অপেক্ষার প্রহর গুনতে লাগলাম।
না, তিনি আর আসেননি। আসবেনও না। কেমন মানুষ! এতটা একরোখা!! পরে জানতে পারলাম, তিনি নাকি আসার জন্য কোন ব্যবস্থাই নেয়নি। আসার কথাটা এমনিই বলেছে। অনুষ্ঠান শেষেও রতন আবার ফোন করে অনেক অনুরোধ করল, একবার এসে ঘুরে যাওয়ার জন্য। না, আসবে না। কি অদ্ভুত! নিজের ছেলের জন্যও কি মন কাঁদে না লোকটার।
আমার সন্দেহ হল। জিজ্ঞেস বললাম, তোমার দোকানের জন্য আসলে কে টাকা দিয়েছিল? যে লোক এতকরেও নিজের বাবার কাজে আসলোনা। রতন উত্তর দিতে চায়নি। জোর করে চেপে ধরার পর বলল, কিছু জমি অবশিষ্ট ছিল। সেটা বিক্রি করেছিল। আর বাকী টাকা তার দাদু অনেক অনুরোধ করে তার জ্যাঠার কাছ থেকে নিয়েছিল। বলল, মনে আছে আপনার, দ্বিতীয়বার সেই স্কুল মাঠে দেখা হওয়ার সময় বলেছিলাম আমি কয়দিন এখানে ছিলাম না। তখন আমি জ্যাঠার বাসায় গিয়েছিলাম টাকার বন্দোবস্ত করতে। সাথে সাথে দেয়নি। পরে দিয়েছে। বাবার জন্য আমার মনে অনেক রাগ, ভালোবাসা, মায়া আর শুন্যতা জমে আছে। সে যতই পাষাণ হোক না কেন। তাই ভাবলাম, এই ফাঁকে আপনার কাছে বাবাকে বড় করে তুলে ধরি। নিজের বাবাকে ছোট করতেতো কারো ইচ্ছা হয়না। কিন্তু সত্যিও তো চেপে থাকার জিনিস নয়। ওর কথা শুনে আমার বুকের ভেতর থেকে একটা বড় দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসল।
ও, প্রথমবারের আক্কেলগুড়ুম হওয়ার কথাতো বলিই নি। প্লিজ, আর একটু ধৈর্য ধরুন। বেশি সময় নিব না।
বাড়িতে এখন শুধুমাত্র দুজন লোক। তাও রতন বলতে গেলে সারাদিন ওর ফটোস্টুডিওতে কাটিয়ে দেয়। রিনা কান্ডের অমিমাংসিত অবসানের পর রতন আবার আগের মত ব্যস্ত হয়ে পড়ল। ছেলেটার এলেম আছে। পড়তি ব্যবসা আবার ঠিক দাঁড় করিয়ে ফেলবে। ওর ঠাকুমা সারাদিন একা থাকে। উনার বয়সও কম হল না। তাই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল, রতনকে বিয়ের পিঁড়িতে বসাবে। এসমস্ত কাজে বলার আগেই তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। ব্যস, আর কি! বিয়ের ফুল ফুটে উঠল ঘোষ বাড়িতে।

(৭)
দেখতে দেখতে মাস তিনেকের মধ্যে বিয়ের দিন ক্ষণও ঠিকঠাক হয়ে গেল। ব্যবসাও আবার রমরমিয়ে উঠল। বাজারে গেলে অন্যান্য দোকানের মত ওর দোকানটাতেও অনেক ভীড় দেখা যায়। শুধু যে কাস্টমার আসে তাই নয়, রতনের সাথে আড্ডা দিতেও দেখা যায় অনেককে। রিনার সেই ঘটনার পর ওর কদর যেন আরো বেড়ে গেছে। যারা ভুল বুঝেছিল তারাও তার ভক্ত হয়ে পড়ল। সবকিছু খুব ভালোভাবেই চলতে লাগল। তারমধ্যেও রতনের মনের ভিতরের কষ্টগুলো রয়েই গেল। যথারীতি কাউকে বুঝতে দেয় না সে। কিন্তু আমার কাছে এসে জমে থাকা চাপা আবেগ আর ধরে রাখতে পারে না। দাদুর মৃত্যুতে সে এখনো নিজেকে ক্ষমা করতে পারেনি। কদিন পরেই যে ছেলেটা নতুন জীবন শুরু করতে যাবে, অথচ এক বুড়ো ঠাকুমা ছাড়া ওর পাশে কেউ নেই এখন। বাবা থেকেও নেই। আর মা তো নেই কত বছর হয়ে গেল।
ঠিক এই সময় খুব বেশি মায়ের কথা মনে পড়বে সেটাই স্বাভাবিক। যখন কলকাতা গিয়েছিল রতন তার মাকে দেখতে, বলতে গেলে প্রায় শেষ সময় ছিল সেটা। তবুও চেষ্টার কম করেনি ওর বাবা। কয়েকটা কেমো দিয়েছিল। হরিপদ বাবু খুব চেয়েছিল যাতে তার স্ত্রী বেঁচে যায়। লোকটা আসলেই খুব ভালোবাসতো তাকে। মনে মনে বিশ্বাস করত বেঁচে যাবে । তাই শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার এত আকুলতা ছিল তার মনে। কিন্তু এত কিছুর পরেও উল্টো রথে চলে মানুষের মন।
রতনের মামার শ্যালিকা থাকতো তার মামার বাসায়। সে প্রায়ই আসতো হাসপাতালে বাসা থেকে খাবার নিয়ে। এমনকি নিজ হাতে খাইয়েও দিত রতনের মাকে। সময়ে সময়ে রতনের বাবা তাকে পৌঁছে দিত বাসায়। রতনও মাঝে মাঝে একসাথে যেত। অনেক সময় তাকে হাসপাতালে বসিয়ে রেখেও দুজনে মিলে বাইরে চলে যেত। ধীরে ধীরে দুজনের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে লাগল। রতন আর ওর মা ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল। কিন্তু রতনের মা কিছুই বলত না। উল্টো রতনকে বলত যেন কিছু না বলে। কারণ জিজ্ঞেস করাতে ওর মা বলত, থাক তুই কিছু বলিস না রতন। মানুষটার যা ভাল লাগে করুক। আমার দিন তো ফুরিয়ে এল। যদি ওকে ভাল লাগে, সংসার করতে চায় করুক। তোকে যদি না দেখে, তুই বাংলাদেশে চলে যাস। তোর দাদু তো তোকে আর ফেরাবে না।
এক মাসের মত ছিল রতন। চলে আসতে হয়েছিল। লজ্জার মাথা খেয়ে আমতা আমতা করে বাবাকে জিজ্ঞেসও করেছিল আসার মুহূর্তে। মামীর বোনের ব্যাপারে। তিনিও সরাসরি ভালো লাগার কথা স্বীকার করল রতনের কাছে। কিন্তু এটাও বলেছিল, তার কাছে সবকিছুর আগে তার মা আর সে। অন্যকিছু নয়।
রতন চলে আসার কিছুদিন পরেই ওর মা মারা যায়। উনার শেষকৃত্য ওখানেই হয়েছিল। মাকে শেষ দেখা আর হয়নি রতনের। এরপর হরিপদ বাবুকে দেশে আসতে বলা হলেও তিনি আর আসেননি। তার এককথা, যেখানে তার সহধর্মিণীর শেষ স্মৃতিচিহ্ন রয়ে গেছে সে স্থান ছেড়ে আর কোথাও যাবেন না।
স্ত্রীবিয়োগে লোকটার তখন পাগলপ্রায় অবস্থা। এমনকি ছেলেটার কথাও ভাবল না। আসলে উনার মনে একটা বদ্ধমূল ধারণা হয়েছিল, রতনের মা বেঁচে যাবেন। কোনভাবে মরতে পারেন না। যাকে এত ভালবাসে সে কিভাবে এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন। বেশ কিছুটা মানসিক বিকারগ্রস্ততার শিকার হয়ে পড়েছিলেন। আসবেন না, মানে আসবেনই না। তখন থেকেই লোকটা একরোখা হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু জীবন তো আর থেমে থাকে না। রতনের মামারা উনাকে একটা ব্যবসা ধরিয়ে দিল। তারা অনেকটা জোর করে আবার বিয়েও দিয়ে দিল। সেই মামার শ্যালিকার সাথে। ভালো হয়ত লেগেছিল অবস্থার সাপেক্ষে কিন্তু হরিপদ বাবু কোনমতেই রাজি ছিলেন না বিয়ের ব্যাপারে।
যাই হোক, কিছু বছর বাদে রতন আরো একবার কলকাতা গিয়েছিল। কিন্তু যে মহিলা এক সময় তার মাকে হাসপাতালে খাইয়ে দিয়েছিল; সে মহিলা রতনকে চিনলই না। উল্টো অনেক অপমান করেছিল। তার বাবাকেও কম গালমন্দ করেনি, রতন এসেছে বলে। সপ্তাহখানেক থেকে রতন চলে এসেছিল। তবে আসার সময় রতনের বাবা রতনকে বলেছিল, তুই ভাবিস না আমি স্বার্থপরের মত এখানে বিয়ে করে রয়ে গেছি। এসবতো তোর মামাদের কান্ড। আমি আসলে তোর মাকে কখনো ভুলতে পারব না। এইখানেই তার মৃত্যু হয়েছে। সেজন্যই এইখানে আমি থেকে গেছি। তোর দাদুও আমাকে অনেক অবজ্ঞা করেছে বিয়ে করেছি বলে। তাই আমি আর কখনো যাব না। তুই ভাল থাকিস। আমার বুড়ো মা, বাবা দুটোকে দেখে রাখিস।
তারপর সেই যে কখন অসুস্থ রতনের মাকে নিয়ে কলকাতা এসেছিল, এরপর হরিপদবাবু আর এমুখো হননি। এমনকি খুব একটা খবরাখবরও নিতেন না। সে ঘরেও তার এক ছেলে আর এক মেয়ে হয়েছিল।
মাত্র বাস থেকে নামলাম। বিকেল চারটা পাঁচটা হবে। ঐ যে, ঢাকা থেকে ফিরছিলাম। রতন ফটোস্টুডিও'র সামনে গিয়ে রাস্তার বিপরীতে একটা গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে আছি। আর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উদাস ভঙ্গিতে দেখছি দোকানটা। আজকে সেটা বন্ধ। কারণ আজ এই দোকানের মালিক রতন কুমার ঘোষের শুভ বিবাহ। গত দুই বছরে আমার এখানের চাকরি জীবনে অনেকগুলো ঘটনা ঘটে গেছে। মনে হল, কেমন যেন খুব দ্রুত হয়েছে সমস্ত ব্যাপার! মাত্র দুই বছরে এতকিছু হওয়া কি সম্ভব? যাই হোক, হয়ে তো গেছে। আজ রাতে আরো একটা ঘটনা ঘটতে চলেছে। সেটা আমি ছাড়া কেউ এখনো জানে না।
যে রতন ফটোস্টুডিও নিয়ে এতক্ষণ এত বকবক করলাম, ভেবে দেখলাম মানুষের জীবনে কিছু ঘটনার কারণে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে জীবনের মোড়টাই ঘুরে যায়। এই ধরেন, রতনের ব্যাপারটাই। ওর মায়ের যদি ক্যান্সার না হত অথবা হরিপদ বাবু যদি ফিরেই আসতো তাহলে হয়ত এই দোকানটার জন্মই হত না। দশটা সাধারণ ছেলের মত রতনও হয়ত এখন উচ্চ শিক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকত। আমার সাথেও হয়ত ওর এই সম্পর্ক তৈরি হত না। আর আপনাদের সাথেও এতক্ষণ বকবক করার মত বিষয় খুঁজে পেতাম না।
ও, বলা হয়নি! আমার বদলির অর্ডার হয়ে গেছে। কয়েকদিন থেকেই তোড়জোড় চলছিল। বিয়ের ব্যস্ততার জন্য রতনকে জানাইনি। আমার ঢাকার বাসাটাও চেঞ্জ করে ফেলেছি। কালকেই আমাকে জয়েন দিতে হবে। তাই গিয়ে বাসার কিছু টুকটাক কাজ সেরে এসেছি। আজ রাতেই আমাকে চলে যেতে হবে। খুব মায়া লাগছে এই জায়গারটার জন্য। চাকরির জীবনে আর কোথাও এলাকার কোন লোকের সাথে এত ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়নি আমার।
কিন্তু কি আর করার, যেতে তো হবেই। রতনের বিয়েতে থাকা হবে না আমার। বললে যেতে দিবে না। তাই ঠিক করেছি, রাতের আঁধারেই চলে যাবো রতনকে না জানিয়ে। জানি ওর সাথে আমার আর কখনো দেখা হবে না। কেন জানি ইচ্ছাও করছে না। কাছে ছিলাম ঠিক আছে, দেখা হত। দূরে গিয়ে যোগাযোগ রাখলে, আর দেখা না হলে তখন খুব বেশি আমার মৃত ভাইটার কথাই মনে পড়বে। কি দরকার! কষ্টটাই শুধু বাড়বে। কি জানি, হরিপদ বাবুর একরোখা স্বভাবটাই হয়ত ভর করেছে আমার উপর।
আর কি অদ্ভুত ব্যাপার! এতদিন থাকার পরও কিভাবে যেন আমার একটাও ছবি তোলা হয়নি রতন ফটোস্টুডিওতে। আর কোনভাবেও ছবি নিয়ে দোকানের টেবিলের আয়নার নিচে বা দেয়ালে যে বিভিন্ন জনের ছবি সাজিয়ে রাখা হয় সেখানেও আমার কোন ছবি নেই। যদিও রতন অনেকবার বলেছিল কিন্তু তুলবো তুলবো করে আর হয়নি।
রতন বারবার ফোন দিচ্ছে। আমি ধরছি না। জানি সে এখন আর চাইলেও নিজে থেকে আসতে পারবে না। বাসার সামনে থেকে ভ্যানগাড়ি করে জিনিসপত্র নিয়ে রাতেই বের হয়ে গেলাম। যাওয়ার সময় রাস্তায় দূর থেকে দেখলাম দোকানটাতে বাহারি রংয়ের লাইটিং করা হয়েছে। আশেপাশের অন্য দোকানে স্বাভাবিকভাবে নিত্যদিনের আলো থাকার জন্য রতনের দোকানটা আলাদা করে অদ্ভুত সুন্দর লাগছিল। কাছে যেতেই বন্ধ শুনশান দোকানটা দেখে বুকটার ভেতর কেমন যেন করে উঠল। ভ্যান তার নিজস্ব গতিতেই চলছিল বাসস্ট্যান্ডের দিকে আর আস্তে আস্তে দূরে সরে যাচ্ছিল ঝলমলে আলোর রেখা। আমি এক অদ্ভুত মোহে পিছন ফিরে তাকিয়েই রইলাম। যতক্ষণ রতন ফটোস্টুডিওর আজকের এই বিশেষ ঝলমলে আলো আমার দৃষ্টিসীমার থেকে অদৃশ্য না হয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৯
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×