আমার বন্ধুদের কাছে বলা আছে, তোমরা যদি আমার সমালোচনা করতে না পার তবে আমরা কখনো ভাল বন্ধু হতে পারব না। সব কাজে তেলতেলে সমর্থন মানুষের স্বাভাবিক চিন্তা-ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে।
ব্লগটাকে যদি একটা সমাজ কল্পনা করা যায় তাহলে এখানের সদস্য হিসেবে আমি আশা করব একজন শাসক থাকবে, একজন আশ্রয়দাতা থাকবে, একজন লাফাঙ্গা থাকবে, একজন ভালমানুষ থাকবে। থাকবে একজন তেলবাজও।
তবে থাকবে না কোন ক্রিমিনাল। যদিও প্রতিটি সমাজ ক্রিমিনালে ভরপুর।
একটা ক্রিমিনাল একটা সমাজকে নষ্ট করার জন্য যথেষ্ঠ।
আমার শুরুর দিকের একটা পোস্টে চাঁদগাজী একটা কমেন্টস করেছে। কমেন্টসটা পড়ে আমার মাথা গরম হয়ে গেছিল। সাথে সাথে পাল্টা আক্রমন করার জন্য নিজেকে সমুহ প্রস্তুত করে ফেলেছিলাম।
পরে, মাথা ঠান্ডা রেখে প্রশ্ন করলাম, আপনার কোথায় আপত্তি আছে বলেন, তখন উনি বললেন। আমি দেখলাম, তাইতো। উনিতো ঠিকই বলেছেন। মাথা পুরোপুরি ঠান্ডা হয়ে গেল।
উনাকে নিয়ে প্রবলেম হল, প্রথমে উনি আক্রমন করেন। এই আক্রমনে টেম্পার্ড না হয়ে যে কুল থেকে পাল্টা জবাব নিতে পারে, এই আক্রমন যে সামলাতে পারে হয়তো সে কিছু শিখতে পারে।
যাইহোক, অনেক পরে বুঝতে পারলাম এইরকম একজন ব্লগার অন্যদের জন্য কতটুকু পথ নির্দেশক, বিশেষ করে নতুনদের, একটু চিন্তা না করলে তা বুঝা যায় না।
আমাদের এক শিক্ষক বলেছিলেন, একজন শিক্ষিত লোক কাউকে গালি দিলেও তা হয় এরিস্টোক্র্যাট গালি। ননসেন্স, ফাউল, স্টুপিড, পাগল ছাগল, বোকা ইত্যাদি।
আর একজন মূর্খ্য লোক গালি দেয় ‘চ’-বর্গীয় বর্ণমালা নিয়ে গঠিত শব্দযোগে।
একজন বক্তার সাথে অন্যরা একমত নাও হতে পারে। অবশ্যই দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। এখন একজন বক্তা যদি মনে করেন তাকে নেতিবাচক মন্তব্য করা যাবে না, তাহলে আমি বলব, বক্তা শিক্ষিত হতে পারেন তবে চিন্তাহীন। সেই মূর্খ্য যে চিন্তাহীন।
দ্বিমত পোষণ করে তর্কের মূর্চনা সৃষ্টি করতে হবে। তবে সেখানে থাকতে হবে যুক্তি। আবেগ বা বিশ্বাস নয়। যা কিছু যৌক্তিক তাই টিকে থাকার ক্ষমতা রাখে।
আমার মনে হয় ব্লগে তেল যুগ চলছে। হয়তো পড়ছে ঠিকই, অনেকেই কমেন্টস করছে না। যারা করছে তারাও তেল মেরে কমেন্টস করছে। সমালোচনা হচ্ছে না।
সবাই দায়সারা গোছের কমেন্টস করছে। এটা একজন লেখকের জন্য খুবই খারাপ। সে বুঝছে না কোথায় কোথায় তার ল্যাক আছে।
তবে ব্যতিক্রম আছেন দুয়েকজন। আমি বলতে চাচ্ছি সমালোচনার কালচার তৈরী হচ্ছে না।
আমরা সাধারণত সমালোচনা করতে গিয়ে হয় নিন্দা করি না হয় গীবত করি। সমালোচন আর হয়ে উঠে না।
চাঁদগাজী ব্লগারদের যে পরীক্ষা নিচ্ছেন তার গুরুত্ব অনেক ব্লগারই পজিটিভলি নিতে পারছে না। তাছাড়া চাঁদগাজীর মত আর কাউকেই দেখছি না।
অনেক সময় দেখা যায়, একই বিষয় বা ভাবের দুইটা পোস্টে একই রকম মন্তব্য যুতসই হয় না। তাই আমার মনে হয় মন্তব্যকারীর ্ঐ মন্তব্য নিয়ে শুধুমাত্র ঐ পোস্টেই আলোচনা, তর্ক হতে পারে। এর বাইরে গিয়ে আলোচনা হলে বিষয়টা প্রাসঙ্গিকতা হারায়।
পোস্টের কোন মন্তব্যে যদি ব্যক্তি আক্রমন হয়ে থাকে তবে অবশ্যই এ নিয়ে বিচার বসতে পারে। আর যদি মন্তব্য হয়,‘আপনার পোস্ট হয়নি, কি লিখেছেন ছাই-পাস!’ এই টাইপের, তবে পোস্ট দাতা টং করে রেগে যাবার কি আছে?
আপনার পোস্ট হয়নি এটা যদি কেউ বলে তবে আপনি নিজেকে চূড়ান্ত অপমানিত ভাবার কোন কারণ আছে কি?
পাল্টা প্রশ্ন করুন, কেন হয়নি?
এটাকে নতুন একটা দৃষ্টিকোণ হিসেবে নেয়া যায়।
আমার ব্যক্তিগত মত হল, কিভাবে কমেন্টস করতে হয় এবং প্রতিউত্তর দিতে হয় তা শিখতে হলে চাঁদগাজীর পোস্টের মন্তব্য অবশ্যই পড়তে হবে।
শুভ ব্লগিং।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৭