somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নয়ন বিন বাহার
তোমাদের এ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি। দূরে! বহু দূরে! ঈগল চোখের আড়াল খুঁজে নিচ্ছি- যেখানে সমস্ত পাপী স্বীকারোক্তি দেয় তাদের আকন্ঠ পাপের। অন্তত তারা সত্যের আড়ালে পাপ করে না; পাপ নিয়ে করে না কোন মিথ্যাচার!

রম্য

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিখ্যাত চোর দমন কমিশন (চোদক) এর চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে আমার জানেমন দোস্ত। পরানের পরান, জিগারের টুকরা।

একান্ত আলাপচারিতায় তাকে কিছু কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম।(সেখানে আপ্যায়নে পরিবেশিত হয়েছিল গরম গরম লালপানি। পাঠকের উর্বর মস্তিষ্ক যেন অন্য কোন কুচিন্তায় বিভ্রান্ত না হইতে পারে তাই খোলাসা করিয়া নিলাম। কারণ এরকম একান্ত আলাপচারিতায় বিভিন্ন রংয়ের ঠান্ডাপানি পরিবেশিত হইতে লোকমুখে শুনিয়াছি)

যাইহোক মুল কথায় আসি।

তাকে বলিলাম। দোস্ত তুই কিভাবে চোদকের চেয়ারম্যান হইলি?

সে বলল, আরে চোদাকের চেয়ারম্যান হইতে যা যা লাগে সবিতো আমার কাছে আছে।

আমি বিস্তারিত ব্যাখ্যা শুনিবার আগে তাকে সংশোধন করিয়া দিতে চাইলাম।
বলিলাম, দোস্ত তুমি কিঞ্চিৎ ভুল বকিয়াছ। চোদককে চোদাক বলিয়াছ।

সে যা বলিল তাহাতে আমার আক্কেল গুড়ুম!

'তুমি তো জান আমার মেরুদণ্ডের একটা হাড় বাঁকা। একবার শক্ত চুরিতে ধরা খাইছিলাম। পাষাণের দল এমন মার মারল, আমার মেরুদণ্ড ভাইঙ্গা পালাইলো। তখন থেকে কিছুটা স্বর বিকৃতি ঘটছে। তাই চোদাক উচ্ছারণ করি।'

আমি আশ্চর্য হইয়া বলিলাম, শুনিয়াছি গলার হাড় বাঁকা হইলে স্বর বিকৃত হয়, মেরুদণ্ডের হাড় বাঁকা হইলে স্বর বিকৃত হয়। এই প্রথম শুনলুম।

আচ্ছা যাক, তোমার সঠিক চিকিৎসা হয়নি। তোমাকে মল্য চিকিৎসকের কাছে নিতে হইবে।
সে বুঝিতে না পারিয়া বলিল, মল্য চিকিৎসক জিনিসটা আবার কি?
বলিলাম, শরীরের চিকিৎসা যে করে সে শল্য চিকিৎসক, তোমার সমস্যাতো মেরুদণ্ডে, তাই মল্য চিকিৎসকের স্মরনাপন্য হইতে হইবে।
সে কি বুঝিল কে জানে। তবে মহা বুঝদারের মত মাথা নাড়াইয়া সম্মতি জ্ঞাপন করিল।

যাই হোক মূল কথায় আসি।

তার আগে বলিয়া নিতে হয়, চোদকের বর্তমান চেয়ারম্যান আমার বন্ধু হইল কেমনে।

সে বহু আগের কথা। এই বোকান্দেশে তখন খুব বেশি চুরি হইত। চোরের জ্বালায় মানুষ এতই অতিষ্ঠ ছিল যে প্রতিটি মা বাবা তাদের অন্তত একটা ছেলেকে চোর বানাইত। ছেলে না থাকলে মেয়েকে চোরের সঙ্গে বিবাহ দিত। কারণ একটাই। কাক কাকের মাংস খায় না। তেমনি এক চোর আরেক চোরের বাড়িতে চুরি করে না। ভুলে যদিও চুরি হইত তবে সহজে চুরির মাল ফেরত পাওয়া যাইত। কারণ, এক চোর মোটামুটি সব চোরকে চিনে। সহজেই বের করা যাইত। তখন থেকে মূলত ঐ প্রবাদের উৎপত্তি,'চোরে চোরে মাসতুতো ভাই'।

যাই হোক মূল কথায় আসি।

কপালদোষে আমাদের পরিবারে চোর বানানোর মত কেউই ছিল না। কারণ, কেউ বদ্ধ পাগল, কেউ অর্ধ পাগল। পাগলের পক্ষে আর যাই হোক চোর হওয়া সমীচিন নয়। একমাত্র তুমুল সম্ভাবনা ছিল আমার। আমার বংশে একমাত্র মস্তিষ্ক বিকৃতির হাত থেকে আমিই রেহাই পেয়েছিলাম। তাই আমাকে নিয়ে সবাই স্বপ্ন দেখতে লাগল। কিন্তু বিধি বাম। আসলে আমার বুদ্ধি থাকলে কি হবে। শুধু বুদ্ধি দিয়েতো আর চোর হওয়া যায় না। গায়ে শক্তি থাকতে হয়। কিন্তু জন্ম থেকে আমি তালপাতার সেপাই।

তীব্র বাতাসে আমি দাঁড়িয়ে থাকতে হলে শক্তপোক্ত খুঁটির প্রয়োজন পড়ে। একবারতো ছয় নম্বর বিপদ সংকেতের বাতাসে আমি উড়ে যাচ্ছিলাম। আমার কাগু ধরে ফেলেছিল। কাগু না থাকলে কি যে হত, আল্লাহই জানে!

এহেন শক্তিবিদ্যা নিয়ে চোর হতে পারলাম না। ধরা খেলে তিন নম্বর ঘুশির আগেই সলিল সমাধি! এ নিয়ে কত লাঞ্চনা গঞ্জনা যে শুনতে হয়েছিল। পুরো বংশের মুখে চুনকালি দিলাম। কি বলব, দুঃখে কষ্টে দিশেহারা হয়ে গেলাম আত্মহত্যা করতে।

রাখে আল্লাহ, মারে কে?

সেখানেই দেখা বর্তমান চোদকের চেয়ারম্যান আমার পেয়ারা বন্ধুর সাথে।
বন্ধু, বাকিটা তুই বল। চোদকের চেয়ারম্যান সাবরে বলিলাম।

'সেদিনটা কি ভুলিতে পারি। ভাগ্য খারাপ ছিল সেদিন। চুরির জন্য বের হতেই কুত্তা ডাকছিল। আমলে না নিয়ে বের হইছি।
খাইলাম ধরা। দিলাম দৌড়। সামনে দেখি তুই বাড়ির কোণায় দাঁড়ায়া আছস? তোরে চিনতে পারিলাম। দাঁড়ায়া কথা কওনের সময় কই। তুই তালপাতার সেপাই, তাই তোরে কান্দে নিয়া দিলাম দৌড়। দৌড়াইতে দৌড়াইতে তোদের ঘরের সামনে আইসা দিলাম চিক্কুর।
কাগাগো, আন্নের হোলা ফাঁসি দিত গেছে, আঁই বাঁচাই আইনছি। এই কথা শুনি সবাই চোরের কথা ভুলিয়া গেল। আমি এই সুযোগে তোদের ঘরে চুরি করিয়া মনের আনন্দে চলিয়া গেলাম।

সেদিন তুই না থাকলে আমি ধরা পড়িতাম। তুইও আমাকে ধরাইতি পারতি। কিন্তু ধরাসনি। পরে নিজে নিজে চিন্তা করিলাম, তুই-ই আমার বন্ধু। বিপদে যে পাশে দাঁড়ায় সেইতো বন্ধু।
পরে তোদের সব মাল ফেরত দিয়েছিলাম।'
সেই থেকে আমরা পরম বন্ধু।

যাই হোক মূল কথায় আসি।

- দোস্ত আমার প্রশ্ন ছিল তুই এতবড় জানু চোর হয়েও চোর দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ বাগাইলি কেমনে?
- দোস্ত তোমার বুদ্ধি শুদ্ধি একটু থাকলেও আক্কল কম। তাই অনেক কিছু তুমি দেখ কিন্তু বুঝ না। মাঝে মাঝে বেক্কলের মত প্রশ্ন কর। আচ্ছা তুমি এটা বুঝ, যে, একটা চোরের পক্ষেই কেবল আরেকটা চোর ধরা সম্ভব?
- তা ঠিক।
- এইতো তোমার আক্কল হইছে। আমি যেহেতু বড় চোর তাই আমিই এই চেয়ারের যথোপযুক্ত মালিক!
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:১০
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×