somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"নির্বাসিতের আপনজন" বইটির ভূমিকা।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিভাবে এই বইটি লেখা হোল

মাঝে মাঝে আমাদের জীবনের একটি-দুটি মুহুর্ত আসে যেটির উপর ভর করে দেখা দেয় বিশাল কোন কিছু। তেমনি একটি দিন এসেছিল বছর দুয়েক আগে আমার জীবনে।
সামহোয়্যারইন নামের একটি বাংলা ব্লগসাইটে চোখ বুলাচ্ছিলাম কাজের ফাঁকে।
সেখানে ‘সর্বদা বেলায়েত’ নামের এক ব্লগারের পোস্ট চোখে পড়লো। তিনি লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে। লেখাটি পড়ে মনে পড়লো নিজের ছাত্রজীবনের কথা,মনে পড়লো বন্ধুদের কথা,মনে পড়লো শিক্ষকদের কথা। আনমনা হয়ে গিয়েছিলাম সেদিনের কথা ভাবতে ভাবতে। সামনে রাখা সাদা কাগজে আঁকিবুকি কাটতে কাটতে মনে হোল,আচ্ছা আমিও দু’কলম লিখে ফেলি না কেন? পরের মুহুর্তে আবার নিজেই হেসে ফেলেছিলাম। কেন লিখবো? কি লাভ? কে পড়বে? কেন পড়বে? আমি একজন আম-পাবলিক,আমার জীবনের কথা বা আমার আশপাশের মানুষের কথা শোনার সময় কোথায় অন্যলোকের?

পরক্ষণেই আর একটা চিন্তা মাথায় এলো। অনেক কিছুই আজকাল ভুলে যাচ্ছি। লিখে রাখলে জিনিসটা থাকলো। আমিই নিজেই না হয় একসময় পড়বো,যখন মাথার মধ্যে আর কোন কিছুই থাকবে না। বেভুল মানুষের মতই নিজের লেখা পড়ে হয়তো ভাববো,আহা কে এই মানুষটি?

সেই নিয়তেই 'নির্বাসিত' ছদ্মনামের আড়ালে বসে লেখা শুরু করলাম। ভেবেছিলাম টুকিটাকি কিছু স্মৃতিকে ধরে রাখি অল্প কিছু কথায়। কিন্তু লিখতে বসে দেখলাম অল্প কথায় সবার কাহিনী বলা যাচ্ছেনা। অগত্যা,কাহিনীর কলেবর বেড়ে গেল (যাকগে-আমাকে তো আর কাগজ-কালি কিনতে হচ্ছেনা)। কিন্তু ঝামেলা বাঁধলো অন্য জায়গায়।
খেয়াল করলাম যে কিছু কিছু ব্লগার আমার লেখালেখিকে তাদের নিয়মিত পড়ার তালিকায় রেখেছেন, এবং তারা আমাকে আরো উৎসাহ দিচ্ছেন আরো লেখার জন্য,এবং আরো দ্রুত লেখার জন্য। আমি এসেছিলাম মৃদুমন্দ পায়চারী করার গতিতে, তারা চাইলেন আমি যেন একই সাথে দ্রুত গতির স্প্রিন্টার এবং দীর্ঘ সময়ের ম্যারাথন রানার হই। এ আমি কিসের মধ্যে পড়লাম?

এনারা প্রথমে দিলেন উৎসাহ,পরে মৃদু অনুরোধ, তারপর দাবী,এবং এমনকি দু একজন আন্দোলন করবারও হুমকি দিয়েছিলেন। লেখা চাই,আরো লেখা চাই,আরো দ্রুত লেখা চাই।

আমি ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করলাম। বেশী বেশী টাইপ করার দরুন হাতের আঙ্গুলে ব্যথা করা শুরু করলো। যাই হোক-একদিন শেষ হোল সব কিছু। শেষ পর্বটি লিখে ফেললাম।

তারপর গোটা সিরিজটির দিকে তাকিয়ে তো আমার চোখ চড়কগাছ। এতগুলো পর্ব লিখে ফেলেছি আমি! কখন করলাম এত কিছু? আমি যে আলসে মানুষ,বাথরুমে টয়লেট পেপারের রোল বদলাতেই সাতদিন লাগে আমার। সেই আমি কিভাবে এতগুলো পর্ব লিখে ফেললাম? এটা নিশ্চয়ই কোন ষড়যন্ত্র, কেউ আমাকে দিয়ে কাজটি করিয়ে নিয়েছে।

কারা সেই দুর্বৃত্ত? কারা আমার অজ্ঞানতার সুযোগ নিয়ে আমাকে দিয়ে লিখিয়েছে এই সব? এরা হচ্ছেন মেহরাব শাহরিয়ার, ফারহান দাউদ, মুকুল, রাশেদ, বিবর্তনবাদী, অ্যামাটার, নরাধম, মোস্তফা মনির সৌরভ, ভাইটামিন বদি, মেন্টাল, লাল দরজা, রাগ ইমন, অলৌকিক হাসান, খোলাচিঠি, আলী, সাধারণ, বিহংগ, ৃৃমম, রাতুল, পজিটিভ, শফিউল আলম ইমন, মিরাজ, ফাহমিদুল হক, হাসিব,আবদুর রাজ্জাক শিপন, অমিত, আদনান, কালবেলা, না বলা কথা, নাদান, জ্বিনের বাদশা এবং আরো অনেক ব্লগার।

এদের কাউকেই চিনিনা আমি, অথচ তাদের ভালবাসা, উৎসাহ আর সমর্থন না থাকলে এই বইটিই লেখা হোত না।
এদের মত এত ভালবাসাময় মানুষ সমাজের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

যাকগে-লেখা যখন শেষ হোল, তখন দেখা দিল অন্য সমস্যা। বেশ কয়েকজনে আমার কানে একটি বই ছাপানোর কুমন্ত্রনা দেওয়া শুরু করলো। তার মধ্যে বন্ধু সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার আর বন্ধুপত্নী নাজিয়া অন্যতম। কিন্তু সবচেয়ে বড় ক্ষ্যাপা হোল বন্ধু ইয়ারুল কবীর। তারই শ্রম,উৎসাহ আর অর্থানূকুল্যে ছাপা হোল বইটি।

এদের কাউকেই ধন্যবাদ দেবার সাহস নেই আমার। ঈশ্বর যে কেন আমাকে এতো শুভাকাঙ্খী দিয়েছেন এই জীবনে,সেটি আজও আমার কাছে একটি রহস্য হিসেবেই রয়ে গেল।

সেইসব আপনজনদের কথাই বলতে চেয়েছি এই বইটিতে।

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৩০
১৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×