অপরাদতত্ত্বে একটা কথা আছে, কোন লোক কাউকে খুন করলে সে যত সাবধানতার সহিত হত্যাকাণ্ডটি করুক; সে লোকটি কোনো না কোন ক্লু অবশ্যই রেখে যাবে। এতবড় হত্যাকাণ্ডে তৎকালীন রাষ্ট্রযন্ত্র, ক্ষমতায় থাকা বিএনপি এত পরিমান ক্লু রেখে গেছে তাতে অপরাধীদের চিহ্নিত করা খুবই সহজ। রাষ্ট্রযন্ত্র ক্ষমতায় থাকা দলটির সাথে যেভাবে বিলীন হয়ে গিয়েছিল তা সত্যিই আশ্চর্যের, বিস্ময়ের!
আপনি যদি ২১শে আগষ্টের গ্রেনেড হামলা মামলাটি দেখেন এর উপর প্রাপ্ত তথ্য গুলোকে নিজের লজিক দিয়ে খন্ডন করেন তাহলে অবশ্যই এই রায়টিকে সঠিক বলে মেনে নিবেন। শুধু দুইটি জিনিস আপনি নিজের লজিক দিয়ে ব্যাখ্যা করেন; জজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করে তাকে দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় এবং জজ মিয়াকে তথা গ্রেনেড হামলাকারীকে আটক করার জন্য তৎকালীন তিন কর্মকর্তাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাবর কর্তৃক ঘোষিত এক কোটি টাকা পুরুস্কার হিসেবে দেওয়া! এছাড়া শেখ হাসিনা তার ভ্যানিটি ব্যাগের ভিতরে করে গ্রেনেড নিয়ে এসেছিলেন বোনাস হিসেবে বেগম জিয়ার একটা উক্তি এর সাথে জুড়ে নিতে পারেন। এগুলি এনালাইসিস করে আপনি নিজেই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারবেন খুব সহজেই।
তবে আপনি যদি এখনো মনে করে থাকেন জজ মিয়াই গ্রেনেড হামলাকারী তাহলে রায়টিকে আপনার কাছে সঠিক হয়েছে বলে বিশ্বাস করানোটা অসম্ভব এবং আপনি তারেক জিয়াকে আপনার জীবনের আদর্শ মনে করে থাকবেন।
যাইহোক আমরা সবাই মোটামুটি জানি রাষ্ট্রের প্রশাসন যখন যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকে তাদের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় তবে এই রায়ের পর দেখলাম আসলে কতটা একাকার হয়ে যায়! রাষ্ট্র বলে সেখানে যেন আলাদা কোনো সত্তা ছিলনা। এগুলো খবুই ভয়ঙ্কর ব্যাপার স্যাপার এবং এসব এখনো বন্ধ হয়নি যা সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের কথা। এটা একটা ভয়ংকর রাজনৈতিক-সামাজিক ব্যাধির নির্দেশক।
২১শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলার রায়টি আমাদের জন্য মাইলফলক তবে দেশের ক্ষমতায় থাকা দল ও রাষ্ট্র যে দুইটি আলাদা সত্তা এটা মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারলেই সত্যিকারের সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৩