গড়ে বেশিরভাগ বাঙালি হিংসাপরায়ণ। এরা নিজের পাশের মানুষকে হিংসা করে, কারো সাফল্য কিংবা সাফল্য পাওয়ার চেষ্টাকেও এরা হিংসা করে। বলতে পারেন আপনি পৃথিবীর কত মানুষের সাথে মিশেছেন যে, বাঙ্গালীদের সম্পর্কে এরকম সিদ্ধান্তে এসেছেন? আসলে আমি খুব বেশি অন্য দেশের মানুষের সাথে মিশিনি কিন্তু যারা বিভিন্ন দেশে ঘুরেছে, গিয়েছে তাদের সাথে কথার সুযোগ হলে সে দেশের মানুষ সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা জানার চেষ্টা করি। এছাড়াও এখন অনলাইনের যুগ, খুব সহজে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি, মানব উন্নয়ন সূচক, অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজনৈতিক কার্যকলাপ সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়। সেগুলি এনালাইসিস করে সেই দেশের মানুষের সম্পর্কে একটা ধারণা করা যায়।
আমি এমন অনেক বাঙ্গালীকে দেখেছি যারা রিক্সাওয়ালা কিংবা বাদাম বিক্রেতার ইনকামের কথা শুনে ভ্রু কুচকায়! এমন শিক্ষককে দেখেছি যে তার ছাত্রের টিউশনির ইনকাম দেখে হিংসে করে। এমন মানুষ দেখেছি যে তার ভাই ও ভাইপোর সাফল্যে প্রচন্ড পরিমান কষ্ট পায়। এরকম উদাহরণ চাইলে আপনারা আরো যোগ করতে পারবেন। তবে সর্বশেষ অন্যের ক্ষতি করার জন্য নিজের সন্তানকে জঘন্য ভাবে খুন করার উদাহরণও বেশ কিছুদিন আগে আমরা দেখেছি। ঈর্ষা, হিংসা এবং ঘৃণা বাঙ্গালীদের অত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দিচ্ছি, আত্মসম্মান বোধকে ধ্বংস করছে, তাদের জীবনের আনন্দও মাটি হয়ে যাচ্ছে।
আমার এক বন্ধু সাউথ আফ্রিকা যাওয়ার সময় সুদানে আটকা পড়ে, তিন মাসের মত সেখানে ছিল। সুদানের মানুষ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করার সময় সে বলেছে সুদানের মানুষও বাংলাদেশের মানুষ থেকে কম হিংসাপরায়ণ। সুদানীরা নিজ দেশের মানুষকে আফ্রিকায় ঢুকার জন্য একে অপরকে সাহায্য করে। যেখানে বাঙালিরা নিজ দেশের মানুষকে আটকে রেখে, নির্যাতন করে দেশে থাকা পরিবারের কাছ থেকে টাকা আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করে।
বাঙ্গালীদের এরকম হিংসাপরায়ণ ও সামাজিক অবক্ষয়ের অনেকগুলি কারণ থাকতে পারে। ঈর্ষা, হিংসা ও ঘৃণা মূলত মানসিক রোগ হলেও আপাতত আমার কাছে মনে হচ্ছে বাঙ্গালীদের এই সমস্যা জিনগত সমস্যা। দুই এক প্রজন্মে এ সমস্যা থেকে উত্তরণের সম্ভাবনা খুবই কম।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৯ বিকাল ৩:৩০