somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সার্চিংঃ এ ফাদার ফাইন্ডিং হিজ ডটার (মুভি রিভিউ)

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




আমাদের এক জীবনে কারা আপন । কাদের কাছে আমাদের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি । সবচেয়ে কাদের কাছে আমাদের সকল অভাব অভিযোগ নিয়ে দাঁড়িয়ে যাই । হ্যা, আমাদের বাবা মা । সন্তানরা যত ই বন্ধু বা অন্যান্য মানুষের কাছে আপন হয়ে উঠুক না কেন । বাবা মায়ের কাছে সবচেয়ে বেশি আপন । আর বাবা মা ও তাদের সবচেয়ে কাছের বন্ধু । কেউ মায়ের কাছে আবার কেউ বাবার কাছে বেশি আপন । তবে আমাদের সকল বিপদ আর সমস্যায় তারা ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে যান । তাহলে বুঝুন তো আপনি হারিয়ে গেলে তাদের মনের উপর কি প্রভাব পরে । এমন হারিয়ে যাওয়ার এক কাহিনী নিয়ে তৈরি হয়েছে “Searching” মুভি ।


কাহিনীসুত্র


ডেভিড কিম তার এবং তার স্ত্রীর পুরাতন ছবি ও স্মৃতি গুলো খুজে দেখছিল । তার সাথে তাদের মেয়ে মারগোট এর অনেক ছবিও আছে । সেগুলো ই নাড়াচাড়া করছিল । ডেভিড কিম এর স্ত্রী পামেলা তাদের এক মাত্র সন্তান হচ্ছে মারগোট । তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস যে পামেলার লিমফোমা ধরা পরে । এরপর অনেক চেষ্টা করে যায় কিম কিন্তু তার স্ত্রী তাকে আর মেয়ে ছেড়ে চলে যায় পরপারে ।

এরপর থেকেই মেয়ের সাথে একটু দুরত্ব তৈরি হয় । কারণ কিম মেয়েকে সেভাবে সময় দিতে পারত না । তবে তারা দুজনেই সব সময় নেটে কানেক্টেড থাকত । প্রায় সব সময় ই কথা হতো । ভিডিও কলে এবং ফোনে কথা বলত তারা । তারপরও কিম চেষ্টা করে যেত যাতে করে মারগো মায়ের অভাব বুঝতে না পারে । তবুও কিছুটা হলেও দুরত্ব থেকে যেতো ।





সেই দুরত্ব থেকেই মারগো একা হতে শুরু করে । একা হতে হতে নিজেকে সবার থেকে মোটামুটি আলাদাই করে ফেলে । সে পিয়ানো ক্লাশে যাওয়া বন্ধ করে দেয় । সেই টাকা আবার জমাতে শুরু করে । তবে সে অনলাইনে ফ্রেন্ড পায় । তাদের সাথেই তার যোগাযোগ বেশি হতো । এমনকি এক ফ্রেন্ডের মায়ের অসুস্থতার জন্য তাকে ২৫০০ ডলার পাঠিয়ে দেয় । এক রাতে কিম মারগোর সাথে কথা বলে ঘুমিয়ে পরে । রাতে হঠাৎ করে মারগোর ফোন আসে তিন বার । তারপর থেকে তার আর কোন খোজ পাওয়া যায় না ।

সকালে উঠে কিম মারগোর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোন খোজ পাওয়া যায় না । কিম তার ভাই পিটার কিম এর সাথে যোগাযোগ করে । কিন্তু সেও কিছু জানে না বলে জানায় ।

ডেভিড হতাশ হয় না । সে খুজতেই থাকে । ধীরে ধীরে অনেক সত্যের মুখোমুখি হয় সে । কিন্তু জানত না যে সে পর্যন্ত কি আসছে সামনে ।

মারগো কি হবে মারা গিয়েছে ? নাকি সে বেচে আছে ? ছবির শেষ মিলবে উত্তর ।





আলোচনা

অনেক দিন পর কোন মুভি না টেনে দেখেছি । সত্যি বলতে টেনে দেখে কিছুই বুঝি নাই । তাই প্রতি স্টেপ বুঝতে প্রতিটি সিন ই দেখতে হয়েছে । প্রতিটি ফ্রেম দেখতে হয়েছে । বুঝতে হয়েছে আসলে কোথায় যাচ্ছে এই মুভি । কাহিনীর প্রতিটি ধাপ আলাদা । একটা শেষ হলে মনে হয় মুভি শেষ । তখন দেখলাম মুভির আরো ৫০ মিনিট বাকী । আবার দেখি ৩০ মিনিট বাকি । মানে আমাকে ভাবতে বাধ্য করেছে যে এরপর কি হতে পারে ।

থ্রিলার হিসেবে বলতেই হবে ভাল কাজ হয়েছে । কাহিনীর নির্মান শৈলী বলার অপেক্ষা রাখে না । সুন্দর ভাবে সাজানো । যেন মানুষের মনে কৌতুহল সৃষ্টির জন্য ই মুভির কাহিনী তৈরি হয়েছে । একটা মুভি কত ভাবে টুইষ্ট দেয়া যায় । এতে তেমন ভাবে দেয়া আছে ।

তবে মুভিটির যখন আপনারা দেখবেন অবাক হবেন । বলার ইচ্ছে ছিল না । তারপরও বলছি । মুভিটি দেখার সময় মনে হবে এটি ল্যাপটপ এর ক্যামেরায় দেখছেন আবার মনে হবে বাসার সিসি টিভি ক্যামেরায় দেখছেন । এখানে ক্যামেরার ব্যবহার দেখে অবাক হয়েছি । মনেই হয়নি যে আসলে তার কোন ক্যামেরা ব্যবহার করেছে । পুরোটাই ল্যাপটপ এ করা হয়েছে এমন ।





ইন্টারনেটের ব্যবহার আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে সেটাও বুঝতে পারবেন । ইন্টারনেট্র ভাল খারাপ দুটি দিক ই আপনি দেখতে পারবেন এখানে । আপনি এটাও বুঝতে পারবেন আসলে আমাদের কি করা উচিত ইন্টারনেট দিয়ে । ভাল খারাপ দুটো কাজেই ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় । আপনি কোনটি করছেন । তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের কাছ থেকে কি নিয়ে যাচ্ছে আর কি দিচ্ছে । সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হতে পারবেন ।

ছবিটি কিন্তু ছোট । মাত্র ১০২ মিনিটের । তারপর ও টুইষ্ট এ ভরপুর । আপনি শেষ বলে উঠতে যাবেন তখন ই দেখবেন আবার মুভি শুরু ।

ডেভিড কিম এর ভুমিকায় ছিলেন জন চো । যাকে আপনারা “ হারোল্ড এন্ড কুমার ” মুভি সিরিজে হারোল্ড এর ভুমিকায় দেখেছেন । যদিও সার্চিং এর তার ভুমিকা একটু সিরিয়াস । সারা শোহন ছিলেন পামেলা কিম, ডেব্রা মেসিং ছিলেন ডিটেক্টিভ, মিচেল লা ছিলেন মারগো আর জোসেফ লি ছিলেন ডেভিড কিম এর ভাইয়ের ভুমিকায় ।

সবশেষে বলব, যারা টুইষ্ট পছন্দ করেন তাদের জন্য অবশ্যই দেখার মত একটা মুভি ।

ভাল থাকুন । সুস্থ থাকুন । গাছ লাগান । আপনার চারপাশ পরিস্কার রাখুন ।


ডাউনলোড লিংকঃ এখানে ক্লিক করুন
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪২
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×