somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুখোশের আড়ালে থাকা জীবনঃ ছদ্মবেশ (বুক রিভিউ) !!!

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :









লতিফুর রহমান সাহেব বাথরুমের দরজা খুলেই চমকে গেলেন । বাথরুমের ভেতরে পরে আছে একটা লাশ। কিন্তু এখানে লাশ তাও তালা না ভেঙে কে নিয়ে আসবে । তাছাড়া সব কিছুই তো ছিল বন্ধ । কলেজের অবসর প্রাপ্ত বাংলার শিক্ষক কিছুতেই যেন হিসেব মেলাতে পারছেন না । চিন্তার সব কিছুতেই লাশ জুড়ে । পুলিশ ডাকবেন নাকি ঝামেলায় পরবেন । সব কিছুই তাল গোল পাকিয়ে গেল ।

লাশ এখানে এল কি করে । বোঝাই যাচ্ছে অনেক দিন থেকেই এখানে ছিল । মাছি ভন ভন করছে । লাশটা প্রায় পচে গিয়েছে । তবে বোঝার উপায় নেই লাশটি কার ।
এখন কি করবেন লতিফ সাহেব ।

ঘটনা এভাবেই গড়িয়ে গড়ে তুলেছে “ছদ্মবেশ” এর কাহিনী । নানা ধারা এদিক সেদিক করে ঘটনার শেষ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে তার শেষ পর্যায়ে ।

“ছদ্মবেশ” নামটি দিয়ে শুরু করি । এর মানে হচ্ছে মুখোশ । সামনের দিকে এক রকম আর ভেতরে এক রকম । যদি বাস্তব জীবনের কথা বলি তবে আমরা সবাই মুখোশ পরেই আছি । এক এক জন নিজের চরিত্র করে যাচ্ছি । যাই হোক গল্পে ফিরে আসা যাক । “ছদ্মবেশ” এর সবাই ছদ্মবেশ ধরেই থাকে । সবার আলাদা আলাদা স্বার্থ এবং আলাদা আলাদা উদ্দেশ্যে পূরনের লক্ষ্যে সবাই নিজেদের আড়াল করে রাখে মুখোশের আড়ালে ।

মানুষ অনেক সময় নিজের কাজের জন্য বা স্বার্থের জন্য কাছের মানুষটিকেও ধোকা দেয় । দরকার হলে শেষ পর্যন্ত খুনও করে ফেলে । হিংসৃতার বশবর্তী হয়ে সে অন্ধ হয়ে যায় । খারাপ ভালো কিছুই তখন আর তার কাছে কিছু মনে হয় না । সে শুধু তখন নিজেকেই জানে । নিজেকে নিয়েই ভাবে । তখন তার শুধু একটাই ভাবনা কিভাবে স্বার্থ উদ্ধার হবে ।
বইটিকে রহস্যউপন্যাস বলতে পারছি না ।

হ্যা আপনি ঠিক ই পড়েছেন । বইটিকে আমি রহস্যউপন্যাস বলতে পারছি না । এটাকে এই জনরায় ফেলতে কষ্ট হচ্ছে আমার । তার কিছু কারন বলছি ।

বইটির ভেতরে একসাথে অনেক গুলো ঘটনা জুড়ে দেয়া হয়েছে । তারপর সবার শেষে হুট করেই যেন সব শেষ হয়েছে । অনেকটা পাজল মিলানোর মত । হুট করেই সব মিলে গিয়েছে ।

রহস্যউপন্যাসের শুরু হয় ধীর একটা ধারায় । এটাও সেই ধারা বজায় ছিল কিন্তু ভিতরে যাওয়ার পর যেন সব এলমেলো মনে হয়েছে । এক ঘটনা অন্যটার সাথে কেমন যেন একটা অসামঞ্জস্যতা ছিল । সব কিছুর টার্নিং পয়েন্ট থাকে । এখানে সেটা মিস করে গিয়েছি । ঘটনার মোড় ঘুরতে না ঘুরতেই যেন অন্য ঘটনা শুরু ।

গল্পের শুরুতে লতিফ সাহেব ঠিক ভাবেই হাটতে পারতেন বা পারতেন না এটা উল্লেখ নেই । কিন্তু শেষে রয়েছে । তাহলে গল্পের ভিতর এটা দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই কি । তারপর তিনি মারা গেলেন ।

এরপর আসে দুই নেতার মধ্যে বিরোধ । এটা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক না অনেক আগে থেকেই চলে আসছে । আর এখানেই আছে একটা টুইস্ট । একজন বর্তমানে ক্ষমতায় অন্য জন ক্ষমতা হাসিল করতে প্রস্তুত । তাই যে কেউই তাদের সর্বোচ্চ দিতে চেষ্টা করবে । নিজের নাক কেটে হলেও পরের যাত্রা ভঙ্গ করবে ।

অথচ যাত্রা ভঙ্গ করতে গেলে যে নিজেরেই ক্ষতি হবে সেটা কি একবারও চিন্তায় আসে না । আমি তার ক্ষতি করতে গেলে সেটা যে আমার উপর ই আসেবে না এমন তো নয় ।
তার উপর এত বড় ঘটনা ঘটানোর পরও তাকে ছেড়ে দেয়াটা দৃষ্টি কটু আমার কাছে মনে হয় । কারন বিষয়টা সবাই জানে । তারপরও তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে এটা মেনে নেয়াটা কঠিন ।

এছাড়া কিছু জিনিস খাপছাড়া রয়েছে । শেষের দিকের প্রেম বা ভালবাসার টান মায়াটা না থাকলে ভাল হতো । যেহেতু রহস্য তাই কিছুটা রহস্যের সাথেই এর সমাপ্তি হলে মন্দ হতো না ।

যাইহোক, অনেক কিছু বলে ফেললাম । আসলে মিস্ট্রি বলি আর রহস্য বলি, সেখানে একটা টান খুজি । যেটা পাঠকে বেধে রাখবে । পাঠকে পাতার পর পাতা চোখ রাখতে বাধ্য করবে । পাঠক শুধু খুজেই যাবে সামনে কি রয়েছে ।

তবে প্রথম প্রচেষ্টা হিসেবে লেখক সাদাত হোসাইন কে সাধুবাদ জানাতে হচ্ছে । তবে আমার মনে হয় উনি সামাজিক উপন্যাস লিখতেই বলব । কারন রহস্য জিনিশটা একদম আলাদা ।

বিঃদ্রঃ এই রিভিউটি সম্পূর্ন আমার নিজস্ব মতামত ।

বইঃ ছদ্মবেশ
লেখকঃ সাদাত হোসাইন
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৪০
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×