somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজ্ঞানমনস্কতা:

১৩ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বর্তমানে ধর্মের প্রধান এবং একমাত্র প্রতিপক্ষ হলো বিজ্ঞান, এই সত্যকে অস্বীকার করার আজ আর কোন কারণ নেই।
বিজ্ঞানের কাছে ধর্ম পিছু হতে শুরু করেছে। খ্রিস্টান ধর্ম তো লড়াই থেকে সরেই পড়েছে। কিছু কিছু ধর্ম নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য নিজেদের কৌশল বদলে ফেলেছে বা বদলাতে শুরু করেছে। তারা বলতে শুরু করেছে বিজ্ঞানের সব আবিষ্কারই তাদের ধর্মগ্রন্থ থেকে নেওয়া।
এর কারণ কী ?
এর একমাত্র কারণ নিজেদের টিকিয়ে রাখার চেষ্টা।
বিজ্ঞানের কাজ নিত্য নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে দৈব নির্ভরতা থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া। বিজ্ঞান তার আবিষ্কার বা সত্যি প্রমাণের জন্য কখনোই ধর্মের দ্বারস্থ হয় না বা প্রয়োজন অনুভব করে না। কিন্তু ধর্ম সব সময় বিজ্ঞানের বিরুদ্ধেই অপপ্রচার করে।
এর কারণ কি ?
এর একটাই কারণ, বিজ্ঞানের কাছে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা। অর্থাৎ ধর্ম একটা হেরে যাওয়া লড়াই লড়ছে।
অনেকেই প্রশ্ন করে।
অনেক বিজ্ঞানের ছাত্র, এমনকি অপারেশনের আগে ডাক্তাররা ঈশ্বরকে স্মরণ করে, এতেই প্রমাণ হয় বিজ্ঞানীরাও ঈশ্বর বিশ্বাস করে।
এই প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়:
পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান বা বিজ্ঞানের অন্যান্য বিষয়ের যারা শিক্ষালাভ করেছেন তারা সেই বিষয়টা ভালো জানে বা বোঝে এর বাইরে কিছু নয়। বিজ্ঞানের কোন না কোন বিষয়ে পড়াশোনা বা চর্চা করলেই যে, সেই মানুষটা বিজ্ঞানমনস্ক হবে এমনটা নয়। হামেসাই দেখা যায় ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি পড়া মানুষ দিব্যি ভুত-পেতে বিশ্বাস করছেন, গলায় মাদুলি পড়ছেন।
আমার বাড়ির পাশের মহাজতি স্কুলের এক বিজ্ঞান শিক্ষক আমার কাছে আসতেন। একদিন তার সঙ্গে জেমস্ ওয়েভ টেলিস্কোপ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে দেখলাম তিনি ওই বিষয়ে কিছুই জানেন না অর্থাৎ তিনি বর্তমান পাঠ্য বইয়ের বাইরের বিজ্ঞানের অগ্রগতির ব্যাপারে কিছুই জানেন না। হয়ত জানার প্রয়োজন অনুভব করেন না।
কথা প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন তিনি ঈশ্বর বিশ্বাস করেন, আমাকে বিপদে ফেলার উদ্দেশ্যে একদিন তিনি হঠাৎ বলে বসলেন,
আপনি জানেন, ডাক্তাররা অপারেশনের আগে ঈশ্বরকে স্মরণ করেন ?
বললাম, যে ডাক্তার এটা করে সেই ডাক্তারের ডাক্তারি বিদ্যাটাই ভালো করে শেখা হয়নি। আত্মবিশ্বাসের অভাব থেকেই ঈশ্বরের শরণাপন্ন হন তাঁরা। তারপর থেকে তিনি আর আসেন না।
কয়েকদিন আগে আমার পোস্টে এক ডাক্তারবাবু কমেন্ট করেছিলেন:
আমরা অনেক চেষ্টা চরিত্র করে যত্ন করে একটা রোগীকে ভালো করার পর যখন শুনি ঈশ্বরের দয়ায় রোগী ভালো হয়েছে, তখন খুব অসহায় বোধ করি। সেই কারণে আমরা প্রায়ই রোগীর আত্মীয়-স্বজনকে বলে থাকি আমার কাজ আমি করেছি এবার আপনারা ঈশ্বর কে স্মরণ করুন অর্থাৎ ঈশ্বরের কোটে বল ঠেলে দিয়ে আমরা দায়মুক্ত হয়ে যাই। এটাই হয়তো বাস্তব।
বিজ্ঞানমনস্কতা এক ধরনের যুক্তিবাদ যারা বিজ্ঞানমনস্ক তাঁরা যুক্তিহীন বিশ্বাসে আস্থা রাখে না। তাঁরা বিজ্ঞান নির্ভর পরীক্ষিত সত্য এবং কারণের উপর আস্থা রাখে। অর্থাৎ বিজ্ঞান মনস্কতা হলো চিন্তা পদ্ধতির সুনির্দিষ্ট একটা ধরন যা বিজ্ঞান ও যুক্তি নির্ভর।
একাডেমিক শিক্ষা ছাড়া একজন পদার্থবিদ তৈরি করা সম্ভব নয়। কিন্তু বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হতে একাডেমিক শিক্ষায়ও যেমন সম্ভব, তেমনি একাডেমিক শিক্ষা ছাড়াও তেমনই সম্ভব। অপরদিকে ইংরেজি সাহিত্য পড়া একজন মানুষ বিজ্ঞানমনস্ক হওয়ার কারণে ধর্মে অবিশ্বাসী বা নাস্তিক হতে পারে। অন্যদিকে পদার্থ বা রসায়নবিজ্ঞান পড়া একজন মানুষ বিজ্ঞানমনস্ক না হওয়ার কারণে ধর্মবিশ্বাসী হতে পারে। বিজ্ঞান বইতে ধর্ম শিক্ষা দেওয়া হয়না, তাই বিজ্ঞান বই পড়ে কেউ ধার্মিক হয়না। ধার্মিক হওয়াটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। একজন বিজ্ঞানী ধর্ম বিশ্বাস করলেই প্রমাণ হয় না ঈশ্বর আছে। আমাদের দরকার সত্যিকারের বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ। অর্থাৎ যৌক্তিক মানুষ,
" তবেই সমাজ থেকে অন্ধবিশ্বাস দূর করা সম্ভব।"
--Ashok Sarkar--
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামপন্থী রাজনীতির বয়ান এবং জামাতের গাজওয়াতুল হিন্দ-এর প্রস্তুতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০


গোরা উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ নিজে ব্রাহ্ম হয়েও, ব্রাহ্ম সমাজের আদর্শের বিপরীতে "গোরা" নামে একটি চরিত্র তৈরি করেন। গোরা খুব কট্টরপন্থী হিন্দু যুবক। হিন্দু পরিচয়ে বড় হলেও, আসলে সে আইরিশ পিতা-মাতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি নেই, তাই শূন্য লাগে

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৬

তোমার চলে যাওয়ার পর
ঘরে আর আলো জ্বালাই না,
অন্ধকারে নিজের মতো করে
সবকিছু চিনে নেই।

জানো, আজ সকালে চা বানাতে গিয়ে দেখলাম
চিনি শেষ,
ভাবলাম ঠিক আছে,
মিষ্টি না থাকলেও চা হয়।

রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ
তোমার মতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫ আগস্টের পর তো কিছুই বদলায়নি

লিখেছেন মুনতাসির, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৯

অনেকেই বলেন, ৫ আগস্টের পর তো কিছুই বদলায়নি। এই কথাটার সূত্র ধরেই এগোনো যায়। ৫ আগস্টের পর আমাদের কোন কোন পরিবর্তন এসেছে, সেটাই আগে দেখা দরকার। হিসাব করে দেখলাম, বলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আদর্শের রাজনীতি না কোটি টাকার হাতছানি...

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৫



১. আমি অনেক আগে ব্লগে লিখেছিলাম, বাংলাদেশে ছোট দলগুলো নিষিদ্ধ করা উচিত। উন্নত দেশের মত ২/৩ টিতে থাকাই উত্তম। কারণ, ছোট দলের নেতাদের টকশো-তে গলাবাজি করা ছাড়া আর কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে উড়ে গেল মাদ্রাসার দেয়াল, বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯



ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×