somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফ্রম সাতক্ষীরা টু বেলগাছিয়া (খন্ড-১/পর্ব -১০)

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হালদার বাবুর কাছ থেকে রায়টের খবরটি শোনার পর সেই মুহূর্তে আমাদের আর কোনো বিকল্প ভাবনার অবকাশ ছিল না। দাদার নির্দেশ মতো একমুহুর্ত সময় নষ্ট না করে শূন্য হাতেই সেদিন আমরা গোলা ছেড়ে বেরিয়ে আসি। শুরুতেই আমাদের চোখে-মুখে ছিল পাহাড়প্রমাণ আতঙ্ক। বয়সে সর্বকনিষ্ঠ হলেও দুশ্চিন্তার বহরে অন্যদের সঙ্গে কোন অংশে কম ছিলাম না। তাই পড়ন্ত বিকেলে পাহাড়প্রমাণ দুর্ভাবনা নিয়ে বড়দের অনুসরণে নিঃশব্দে কেবল হেঁটেই গেছি। জানি না আমাদের পরবর্তী গন্তব্যস্থল কোথায়? কিম্বা রাতে কোথায় থাকতে হবে- মাথার মধ্যে এমন হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খেলেও বিজ্ঞের মতো মাইলের পর মাইল কেবল হেঁটেছি। তবে এত হতাশা এত অনিশ্চয়তার মধ্যেও একটুকরো আশার আলো অবশ্য ছিল, দাদাকে সঙ্গে পাওয়া। সামান্য হলেও এটাই ছিল সেসময়ে আমাদের একমাত্র ভরসা।তাই এমন বিপদে কোন রকম প্রশ্ন করে বিব্রত না করে নীরবে ওনাকে অনুসরণ করতে থাকি। উল্লেখ্য পরের দিকে আমাদের মনের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। আমরা আমাদের জড়তা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে সমর্থ হই। মনের মধ্যে হাজারো স্মৃতি উঁকি মারতে থাকে।

পূর্বেই উল্লেখিত আমাদের গ্রামটি ছিল শহর থেকে বহু দূরের অন্তত পাঁচ-ছয় ঘন্টার হাঁটা পথের। যাওয়া-আসার এই দীর্ঘ রাস্তাটা ছিল বিভিন্ন রকম অনুভূতিতে পরিপূর্ণ।পথিমধ্যে বিস্তীর্ণ জঙ্গল, কোথাও বা আবার দিগন্ত বিস্তৃত ফাঁকা মাঠ; স্থানে স্থানে বেশকিছু ডোবা বা জলাভূমি নিয়ে পরিব্যপ্ত ছিল বিস্তৃর্ণ এই গ্রাম্য পথটি। এই জলাভূমির বেশ কিছুটা অংশে শুধু বর্ষাকালেই নয়, বছরের অন্য সময়েও থাকতো জলে পরিপূর্ণ। কতরকমের পাখি বক পানকৌড়ি কাদাখোঁচা এইসব জলাভূমিতে আসর বসাতো। এক অদ্ভুত রকমের জলকেলির সঙ্গে নানান প্রজাতির পাখির কিচির-মিচিরের নয়নাভিরাম দৃশ্য আমার চোখ দুটিকে আবেশে ভরিয়ে দিতো। হাঁটতে হাঁটতে ক্ষনিকের বিরতিতে আমি মুগ্ধপানে তাকিয়ে থাকতাম সেদিকে।একটু দূরে কয়েকজনকে দেখতাম খাপনা জাল দিয়ে কিম্বা হাতড়িয়ে মাছ ধরতেও।দাদার কাছে শুনেছিলাম চ্যাঙ শোল পুঁটি কৈ বেলে চিংড়ি সহ নানান প্রজাতির মাছ নাকি এই পতিত জলাভূমিতে থাকতো।মাছ দেখতে বরাবরই আমার খুব ভালো লাগে।ডোবায় মাছ ধরা দেখে কেবলই মনে হতো আমিও নেমে পড়ি ওদের মতো মাছ ধরতে। একবার দাদাকে বলেছিলাম সে কথা। দাদা শুনে খুব হেসে বলেছিল,
- এই দীর্ঘ রাস্তায় যদি আমরা ডোবায় মাছ ধরতে নামি তাহলে যে সময়ে শহরে পৌঁছাতে পারবোনা দাদাভাই, জঙ্গলেই রাত কাটাতে হবে। সেদিন দাদার এমন সাবধানী সূচক বাণী অনিচ্ছাসত্ত্বেও মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু পরে যতবার ঐ দৃশ্যগুলি দেখেছি খুব অসহায় হয়ে পড়তাম। অবাক হয়ে ক্ষণিক দাঁড়িয়ে মাছ ধরার দৃশ্যগুলো উপভোগ করতাম আর ভাবতাম, দাদাকে না জানিয়ে ঠিক একদিন একাকী এসে আমিও ওদের মতো এমন মাছ ধরতে ডোবায় নামবো। কিন্তু প্রতিবারই কোন না কোন কারণে দাদার সঙ্গ ত্যাগ করা যেমন সম্ভব হয়নি তেমনি সম্ভব হয়নি আমার পক্ষে ডোবায় নেমে মাছ ধরাও।

রাস্তার ধারে শুধু জলাভূমি নয় পথিমধ্যে আরও কয়েকটি বড় বড় জঙ্গল ও বাঁশবাগানকে নিয়েও গড়ে উঠেছিল আমার অভিজ্ঞতার দীর্ঘ স্মৃতিফলক। মনে মনে তাদেরকে একেকটা মাইলস্টোন হিসেবেই কল্পনা করতাম। একটার পর একটা বাগান পার হতাম আর ভাবতাম, এই বুঝি আমরা লক্ষের কাছাকাছি প্রায় চলে এসেছি। বাগানগুলোকে গুনতাম ঠিকই কিন্তু ফাঁকা রাস্তা, ডোবার পাশদিয়ে যাওয়ার সময় যতটা ভালো লাগতো ঠিক ততটাই উৎকন্ঠায় থাকতাম এই বাগানগুলো সামনে চলে এলে। আয়তনে যথেষ্ট বড়বড় এবং ঘন জঙ্গলাকীর্ণ বাগানগুলো ছিল আমার অনুভূতিতে ভীতিকর আঁধারে ভরা।তারি মধ্যে আম-কাঠাল সহ বড়বড় বৃক্ষের সমাবেশে গঠিত বাগানগুলো ততটা ভয়ের উদ্রেক না করলেও বাঁশবাগান গুলো ছিল আমার যাবতীয় দুর্ভাবনার কারণ। আকারেও তারা ছিল একটা পেল্লাই সাইজের। একটা বাঁশ আরেকটার মধ্যে জট পাকিয়ে থাকতো।পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় যেন শেষই হতে চাইত না। বাঁশের সংঘবদ্ধতা এতটাই জমাট ছিল যে দিনের বেলাতেও অন্ধকারাচ্ছন্ন লাগতো। এমন গা ছমছমে পরিবেশে প্রাণ হাতে করে হাঁটতে হত। এরইমধ্যে বিভিন্ন পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হলেও হঠাৎ হঠাৎ দু-একটি কাঠঠোকরার ঠকঠকানি কিম্বা একটা গভীর শব্দ কানে এলে হৃদয়ে হাতুড়ি পেটা সদৃশ মনে হতো। সঙ্গে মনে সারাক্ষণই অনুরণিত হতো, বাঁশবাগান মানেই তো কবরস্থান! ভুত-প্রেতের জায়গা। রাস্তায় চলার সময় ওদিকে দেখবো না বলে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেও আড়চোখের দৃষ্টি যেন সে দিকেই চলে যেতো। আর তখনি কোনো বাঁশের করমর শব্দে কিম্বা বাঁশের পাতার সামান্য দুলুনিতে শন শন শব্দেও মনের আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়ার উপক্রম হতো আর গলা যেত শুকিয়ে।আপ্রাণ চেষ্টা করতাম মুখের মধ্যে জিহ্বটাকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে গলার শুষ্কতা কাটিয়ে কিছুটা স্বাভাবিক রাখতে । আর এসবের মধ্যে নিজের মনকে ব্যস্ত রেখে কোনোক্রমে প্রাণটাকে হাতে নিয়ে আরো দ্রুত পা চালাতাম। লক্ষ্য ছিল যত দ্রুত সম্ভব বাগান এলাকা অতিক্রম করা।

এমনি পরিবেশে বাড়িতে আসা যাওয়ার পথে বেশ কয়েকবার রাস্তার বিভিন্ন স্থানে শিয়ালকেও রাস্তা অতিক্রম করতে দেখেছি। ছোটবেলায় তখন দাদি বেঁচে ছিল, মনে পড়ে কেরোসিনের কুপি কিংবা ডিম লাইটের আবছা আলোয় বাইরে নিস্তব্ধ নিশুতে শিয়ালের ডাক আমার ছোট্ট হৃদয়েকে ভয়ার্ত অনুভূতিতে সংকুচিত করে দিত। এক অনিশ্চিত শূন্যতায় গুটিসুটি মেরে আরো কুকুড়ে ছোট হয়ে দাদির কোলে আশ্রয় নিতাম।দাদির কাছেই প্রথম শুনেছিলাম, এই গভীর ডাকটা শিয়ালের। রাতের বেলা শিয়ালের ডাক শোনা নাকি খুবই মঙ্গলজনক। শিয়ালের ডাক শুনলে কি মঙ্গল হয়, দাদিকে পাল্টা জিজ্ঞাসা করলে তাতে অবশ্য দাদি বিরক্ত হতো। সব কিছু যুক্তি-তর্ক দিয়ে বিচার করতে নেই বলে দাদি আমার ছোট্ট শৈশবের উপর নিজের মতামত চাপিয়ে দিত। যদিও দাদির নির্লিপ্ততা কিম্বা বিরক্তি আমাকে দমাতে পারেনি।আমি অবাক হয়ে কল্পনার ফানুসে ভর করে হাতড়াতাম মঙ্গলজনক কোনো সমাধানসূত্র বার করতে। হঠাৎ হঠাৎ মনে আসা কিছু মঙ্গল কথা দাদিকে জানালে,দাদি ফুৎকারে উড়িয়ে দিত। কিছুটা হতোদ্যম হয়ে সাময়িক খান্ত দিলেও মনে মনে আমার মঙ্গল অন্বেষণ চলতেই থাকতো। তবে কারণ থাকুক বা নাই থাকুক মঙ্গলসূচক এমন প্রাণীটিকে দেখার দুর্নিবার আকর্ষণ তখন থেকেই মনে তৈরি হয়েছিল। তবে অস্বীকার করবো না যে এমন আগ্রহান্বিত হয়েও প্রথমবার চোখের সামনে শিয়ালকে রাস্তা পার হতে দেখে খুবই নিরাশ হয়েছিলাম। বলা ভালো কিছুটা ঘাবড়ে গেছিলাম।

দাদাই প্রথম চিনিয়ে দিয়েছিল যে সামনে দিয়ে রাস্তা পার হওয়া প্রাণীটিকে শিয়াল বলে। ছোটবেলায় কুকুরের বাচ্চা নিয়ে খেলা করেছি। দুটো কুকুরের বাচ্চাকে দুই হাত দিয়ে দুটোকে ধরে একে অপরের মুখে মুখে ঘষে তাদের লড়াই দেখতাম। সরু মিহি গলায় বাচ্চা কুকুররা কেউমেউ করত আর একে অপরের উপর ঝাপিয়ে পড়তো। বেশিক্ষণ স্থায়ী হতো না এ লড়াই... থেমে গেলে আমরা আবার পুনঃ পুনঃ করতাম। উল্লেখ্য বাচ্চা কুকুরের এই লড়াই ছিল আমাদের ছোটবেলায় অন্যতম উপভোগ্য বিষয়। এহেন কুকুরের সঙ্গে শিয়ালকে একাসনে রেখে প্রায়ই যখন বড়দের মুখে শুনতাম শিয়াল-কুকুর একই সাড়িতে। সেই শিয়ালকে প্রথম দিন থেকেই একেবারেই সুবিধার মনে হয়নি।পরে বহুবার চোখের সামনে হুসহাস করে ওদের রাস্তা পার হয়ে যেতে দেখেছি। কিন্তু প্রথম থেকেই জন্তুটিকে নিরীহ বলে মনে তো হয়নি উল্টে বদমেজাজি বলেই ধারণা হয়েছিল। যে কারণে সামনে পড়লে না ঘাটিয়ে সাবধান হয়ে যেতাম। যদিও তার মধ্যেও একবার বিপদে পড়েছিলাম।দুটি বাচ্চা শিয়ালকে সঙ্গে নিয়ে সম্ভবত ওদের মা শিয়াল রাস্তা পার হচ্ছিল। কুকুরের বাচ্চার মতো আকৃতি হলেও বাচ্চা দুটো ছিল খুব ক্ষিপ্র গতির। আমি উৎসাহিত হয়ে মুখ দিয়ে একটা শব্দ করতেই বড় শিয়ালটা ছুটে আসে আমাদের দিকে। দাদার হাতে একটা থলি ছিল। থলি উঁচিয়ে দাদাও গর্জে উঠলে শিয়ালটা থমকে গিয়ে কপট দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আমি ততক্ষণে পাশে থাকা একটা খেজুর গাছ বেয়ে গড়গড় করে বেশ কিছুটা উপরে উঠে ভয়ার্তভাবে তাকিয়ে থাকি। দাদাও ততক্ষনে সমানে হাত উঁচিয়ে থাকে। ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম সেদিন। প্রচন্ড উৎকণ্ঠায় টান টান উত্তেজনা নিয়ে গাছ থেকে চেয়ে থাকি নিচে শিয়ালটার দিকে। বেশ কিছুক্ষণ পর একসময় শিয়ালটি রণে ভঙ্গ দিয়ে পশ্চাৎ অভিমুখে গমন করে। আমিও ততক্ষনে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচি। উফ! কি ভয়ানক অভিজ্ঞতাটাই না সেদিন হয়েছিল।

মনে এমনো হাজারো স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে শুকনো মুখে যুদ্ধবিধ্বস্ত পরাজিত সৈনিকের ন্যায় কোনক্রমে শরীরটাকে টানতে টানতে অচেনা অজানা মেঠো পথ ধরে আমরা ক্রমশ এগিয়ে চলি। একসময় বুঝতে পারি যে শহরের লোকালয় ছেড়ে আমরা অনেকটা অপরিচিত জঙ্গলাকীর্ণ পথে প্রবেশ করেছি। আলো-আঁধারি জঙ্গলাকীর্ণ পথ হলেও জায়গাটা যে আমাদের গ্রামের রাস্তা নয় সে বিষয়ে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলাম। মুখ তুলে দাদাকে জিজ্ঞাসা করি,
-দাদা আমরা এখন কোথায় যাচ্ছি?
দাদা যেন আমার প্রশ্নের জন্য তৈরি ছিল। মুখের কথা খসা মাত্রই একপ্রকার যন্ত্রের মত উত্তর দেয়,
-আগে পৌঁছানো যাক; তারপরে দেখতে পাবি আমরা কোথায় যাচ্ছি।
উত্তর দেওয়ার ধরন দেখে বুঝতে পারি দাদার মতো ঠান্ডা মাথার মানুষও কিছুটা হলেও চিন্তায় আছে। তবে যেখানেই যাই না কেন সে চিন্তা আমাদের নয়; একান্তই দাদার।ইতিমধ্যে বাপজানের সঙ্গে একবার চোখাচোখি হয়। কটমট দৃষ্টিতে চেয়ে থাকায় আমি বুঝি যাই সে চোখের ভাষা। কাজেই অহেতুক প্রশ্ন করে বিরক্ত নয় বরং তাকে আরো ভাবতে দিতেই নীরবে অনুসরণ করতে মনস্থির করি।

সেদিন যেতে যেতে আর একটা যে ভাবনা মাথার মধ্যে চলে আসে। এমন অসময়ে, আসন্ন অন্ধকারে এতটা সমস্যাসংকুল পথে দাদা আমাদের নিজেদের গ্রামে ফিরতে চাইবে না এটা নিশ্চিত হলেও তুলনায় নুরুল চাচার বাড়িটা ছিল অপেক্ষাকৃত কাছেই। মনের মধ্যে একটা সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছিল এমন বিপদের দিনে নুরুল চাচার বাড়িতে রাতটুকু কাটিয়ে দেওয়াটাই তো অধিক নিরাপদ হত...। যদিও মুখ ফুটে বলার পরিস্থিতি ছিল না। উল্লেখ্য বাপজানের সমবয়সী হলেও চাচা বিয়ে করেছে এই সেদিন। বিয়েশাদী করবে না বলে প্রথম জীবনে পন করেছিল। যেকারণে বিয়ের প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেই বিরক্ত হতো। প্রথমদিকে না করলেও পরের দিকে দাদার লাগাতার চেষ্টায় অবশেষে নুরুল চাচা পন ভেঙে বিয়ে করতে রাজি হয়। পাশের গ্রামেই ছিল চাচির বাপের বাড়ি।চাচা-চাচির দু'জনের বয়সের ব্যবধান একটু বেশিই ছিল। আমরা গোলার সকলেই গিয়েছিলাম সেই বিয়েতে। দারুণ আনন্দ করেছিলাম চাচার বিয়েতে। নুরুল চাচার সঙ্গে বাপের এত মধুর সম্পর্ক ছিল যে তা নিয়ে গোলাতেও মাঝে মাঝে স্বপন কাকা কি একটা বলে ঠাট্টা করত। কথাটা নাকি চাচিই বলতো,যা শুনে স্বপন কাকা বাপজানের সঙ্গে নুরুল চাচাকে ক্ষ্যাপাতো। স্বপন কাকা কথাটি কোনো দিন আমাকে অবশ্য বলতে রাজি হয়নি। বাপ মায়ের সম্পর্কে করা রসিকতা সন্তানদের শুনতে নেই বলাতে আমি আর কখনো স্বপন কাকার কাছে জেদাজেদি করতাম না। তবে বিয়েতে নুরুল চাচা একটা মজার ঘটনা ঘটিয়েছিল যেটা হালদার বাড়ির অনেককেই পরে বলতে শুনেছি।বিয়ের পরের পরের দিন আমি দাদা স্বপন কাকা চলে এলেও বাপজান থেকে গেছিল চাচার একান্ত অনুরোধে।পরে আবার চাচার অনুরোধে বাপজান মেয়ে জামাইয়ের সঙ্গে নুতন শশুরবাড়িতে গিয়েছিল। সেসময় সকলের মুখে মুখে কথাটা লেগে থাকলেও বাপের অপকর্ম আমার বুদ্ধিতে ধরা পড়েনি। অনেক পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে ভিতরে ভিতরে মজা পেলেও পুরানো কথা কেউ উচ্চারণ করলে বাপের জন্য বেশ অস্বস্তি বোধ করতাম। এমনই নানান কথা ভাবতে ভাবতে ক্রমশ অন্ধকার নেমে আসে।বেশ অসুবিধা হচ্ছিল অচেনা জঙ্গল পরিবেষ্টিত প্রায় অন্ধকার রাস্তায় হাঁটতে। রাস্তা তো নয় যেন বাগানের ভিতর দিয়েই হাঁটছি। সামনে দাদা আর আমরা তার পিছন পিছনে। কয়েকবার আমরা সকলেই হুমরি খেয়ে পড়লেও দাদা ঠিক হেঁটে চলেছে। ক্লান্তি হতাশা বিরক্তিতে আমরা তখন চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছে গেছি আর ঠিক তখনই অন্ধকার জঙ্গল পরিবেষ্ঠিত পাঁচিল ঘেরা একটি বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালাম...

বিশেষ দ্রষ্টব্য:-পোস্টটিকে নির্বাচিত করায় অনুপ্রাণিত বোধ করছি। কৃতজ্ঞতা জানাই মডারেটর কাল্পনিক ভালোবাসা ভাইকে।


সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০২১ রাত ১০:৩৪
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×