somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জোর করে ভালোবাসা হয় না, আমি জেনে গেছি...... কিন্তু যাদের জানার কথা, তারা জানছে কি?

১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমাদের স্কুলজীবন মেয়েবর্জিত ছিলো। সামাজিকভাবেও ছেলে-মেয়েকে দ্ব›দ্ব সমাস হিসেবেই দেখা হতো। তাই মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব বা প্রেম ভালোবাসার সুযোগ হয়নি। তখন তো আর ফেসবুক টুক ছিলো না। হ্যাঁ, পত্রমিতালি বলে এক জিনিসের মাধ্যমে ছেলে-মেয়েতে মিতালী হতো বটে, কিন্তু সেখানেও খুঁজতে গেলে দেখা যেতো মেয়েটার আড়ালে একজন ছেলেই রয়েছে হয়তো। ওই আজকের দিনের ফেইক আইডির মতই।

কিন্তু ছেলেদের মধ্যে ইন্ট্রা বন্ধুত্বতো হতোই। এর মধ্যে আবার একজন ছেলে থাকতো, যার সাথে খাতিরটা একটু বেশিই হতো। মাঝে মধ্যেই এই বন্ধুত্বটা একটু বাড় বাড়ন্ত হয়ে যেতো। প্রেম প্রেম পর্যায়ের। আমারও ছিলো। কলোনির ডাকাবুকা এক ছেলেকে একটু বেশিই ভালো লাগতো। পছন্দ করতাম। আশেপাশে থাকতে পারলে ভালো লাগতো। বিকেলে খেলার মাঠে একই টিমে পড়লে জানপ্রাণ দিয়ে খেলি। কি করলে তার ভালো লাগবে, সেগুলো ভাবতাম, করার চেষ্টা করতাম। কেউ আবার আমারে ‘গে’ ভেবে বসবেন না। এক ধরনের ‘প্লেটোনিক লাভ’ আর কি।

তো এই বান্দর ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করতে গিয়ে প্রচুর ঘাম ঝড়াতে হয়েছে। মায়ের বানানো আচার, গাছের সেরা পেয়ারা, আম পাকলে সবার আগে দিয়ে আসা, ঈদের সময় ঈদকার্ড, ঢাকা থেকে খেলনা আসলে সেটার ভাগ দেওয়া, এ ধরণের বিভিন্ন কার্যক্রম চলেছে। বুঝাতে চেয়েছি, তুই আমার সবচে কাছের রে পাগলা, জানিজিগর। বেকুবটা কি বুঝতো কে জানে, সুন্দর মত সব ভেট গ্রহণ করে কলা পেয়ারা খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে বলতো, তুই তো ব্যাটিংটা ভালো পারিস না, তুই ওই ছোট মাঠে যা, ওদের সাথে খেল গিয়ে...

শেষমেষ একদিন দুইজনে বিপুল বিক্রমে মারামারি করে একটা দাত খুঁইয়ে আর ঠোটের কোণায় দুটো সেলাই নিয়ে জোর করে তার মনে স্থায়ী হওয়ার নাটকটা সমাপ্ত হলো।

এরপর বালক বড় হইলো। যৌবনে পদার্পণ করিলো। কলেজ পার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় পা রাখিলো। এবং যথারীতি প্রেমপিয়াসী হইয়া ছোঁক ছোঁক করিতে লাগিলো। তবে এইবার আর প্লেটোনিক লভ নয়, পুরোদস্তুর সামাজিক প্রেমকাহিনী।

সেই লক্ষে উর্বশীদের সহায়তাকারী হিসেবে আবির্ভূত হওয়া, জন্মদিনে বা বিভিন্ন উপলক্ষ খুঁজে গিফট দেওয়া, ঘুরতে নিয়ে যাওয়া, সবাই মিলে রেস্টুরেন্টে গেলে নিজের পকেট খালি করে আগ বাড়িয়ে বিল দেওয়া, গল্প-কবিতা রচনা করে মাইক বাজিয়ে জানান দেওয়াসহ বিভিন্ন উদ্যোগে সদ্যযৌবনা রমণীদিগকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করার ব্যপক চেষ্টা তদবির করেও যখন অনার্স শেষ হয়ে মাস্টার্সে এসে একে একে সব সুন্দরীই জোড় বেঁধে পগার পাড় হয়ে গেলো, যুবক দেখিল, সে তখন ওই সব জোড়াদের বিয়েতে প্রধান আঞ্জামদাতা। প্রধান আয়োজক এবং কোথাও কোথাও প্রধান সাক্ষী, কপাল ভালো থাকলে উকিল বাপ!

প্রেম ভালোবাসার সংগ্রামে এই দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে একদা এক বিষণœ সন্ধ্যায় ডাকসুর পেছনের ওই জামরুল তলার ঈষৎ অন্ধকারে ‘ক ফোটা চোখের জল বিসর্জন দিয়ে যুবক বুঝতে সক্ষম হইলো- জোর করে আর যাই হোক, ভালোবাসা হয় না। সাধে কি আর বলা হয় যে ‘দ্য বেস্ট অ্যান্ড দ্য মোস্ট বিউটিফুল থিংস ইন দ্য ওয়ার্ল্ড ক্যান নট বি সিন অর ইভন টাচড্। ইট মাস্ট বি ফেল্ট উইথ দ্য হার্ট’।

আজকের দিনে এর চেয়ে আর বেশি বলা যাবে না, যে হারে চারদিকে ভালোবাসা গেলানোর আয়োজন চলছে, শেষে ওগুলো মিস হয়ে যাবে!!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ২:১৭
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×