গতকাল বিবিসি'র এক ক্লিপিংসে দেখলাম ভারতের সেন্টার ফর ডিজিজ ডায়নামিকস, ইকোনোমিক্স অ্যান্ড পলিসি-এর পরিচালক ড. রামানান লক্ষীনারায়ণ বলছেন- যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ সংক্রমনের আশংকা করা হচ্ছে, ভারতে কমপক্ষে ২০ শতাংশ ধরলে সংক্রমনের পরিমাণ হবে প্রায় ৩০ কোটি।
বাংলাদেশের জনঘনত্ব ক্ষেত্রবিশেষে ভারতের চেয়েও বেশি। তাই গরমকে মাথায় রেখেও এখানেও যদি ওই ২০ শতাংশ ধরা হয়, তাহলে আক্রান্তের পরিমাণ ৩ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। ড. রামানান ভারতের ব্যাপারে বলছিলেন, মনে হচ্ছে আমরা এখনও সারা বিশ্ব থেকে কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে আছি। অন্যদিকে, বাস্তবতা বলছে বাংলাদেশে আমরা তার চেয়েও বেশি সময় পিছিয়ে আছি।
যেহেতু আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থায় খামতি রয়েছে এবং টোলারবাগের দুটি মৃত্যুর ঘটনাতেই রোগীকে চিকিৎসাসেবা পেতে যথেষ্ঠ বেগ পেতে হয়েছে, এ অবস্থায় বাংলাদেশে আক্রান্তের পরিমাণ ব্যাপক হলে মৃত্যুর হারও ব্যাপক হবে বলেই আশংকা করা যায়।
চায়নায় করোনা সংক্রমনের পর প্রায় আড়াই মাস সময় পেলেও আশ্চর্যজনকভাবে বাংলাদেশ কোনো ধরনের প্রস্তুতি নেয়নি। বরং রাষ্ট্রের অদক্ষ মন্ত্রী ও নির্বাহীরা বেআক্কেলের মত বক্তব্য দিয়ে গেছে। খুব সম্ভবত দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত মুজিববর্ষ 'উদযাপনের ক্ষণ' কাছে চলে আসার আবেগে-উত্তেজনায় বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে গেছে। সে কারণে শতকোটি টাকা দিয়ে আতশবাজি কিনতে পারলেও তার চেয়েও কম টাকা খরচ করে করোনা প্রস্তুতি নিতে পারেনি।
গতকাল রাতে মিথিলা ফারজানার উপস্থাপনায় এক টকশোতে গত ১৮ তারিখে দেশের সকল ব্যাংকারকে রাস্তায় নামিয়ে মিছিল করানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন করলে পরিকল্পনামন্ত্রী সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারলেন না।
সেই একই আবেগ এবং মুজিববর্ষ না করতে পারার বিহ্বলতায় সরকার এখনও কোনো সলিড ডিসিশন নিতে পারছে না বলেই মনে হচ্ছে, যদিও ব্লগার সায়েমুজ্জামান দক্ষিণ কোরিয়ায় বসে এদেশের প্রশাসনের অনেক কর্মদক্ষতা দেখছেন!
এ অবস্থায় যে ভয়ানক পরিস্থিতি আসতে যাচ্ছে, পরিবার প্রতি যদি এক/দুজন করে মারা যায়, স্বাভাবিকভাবে সে আক্রোশ এসে পড়বে চলতি সরকার হিসেবে আওয়ামীলীগের উপরে। আমলারা ঠিকই থেকে যাবে, কিন্তু এই আক্রোশে দীর্ঘমেয়াদে আওয়ামীলীগকে ভুগতে হতে পারে। আওয়ামীলীগ কি প্রস্তুত?
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৪৮