somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের আচরণবিধি

০২ রা জুন, ২০০৯ বিকাল ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ এম এম শওকত আলী

সম্প্রতি কিছু সাংসদদের সংসদের বাইরে কয়েকটি বিশৃংখলামূলক আচরণের ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। কক্সবাজারের একজন সাংসদের বিষয়ে জানা যায় যে তিনি অন্য ব্যক্তিদের মারধোর বা অন্যায়ভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে হ্যাট্রিক অর্জন করেছেন। অর্থাৎ, পরপর অন্য তিন ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।

গত ২৯মে তারিখে চট্টগ্রামের আইন-শৃংখলা কমিটির সভায় একজন সাংসদ দিনের বেলায় শহরে ট্রাক বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখাতে গিয়ে বিতর্কে জড়িত হয়ে পড়েন। সংশ্লিষ্ট সাংসদ ইতিপূর্বেও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে এমন আচরণ করেন যা পত্রপত্রিকায় অশোভনীয় আচরণ হিসাবে চিহ্নিত করে ছবিসহ সংবাদ প্রকাশিত হয়।

প্রত্যক্ষভাবে ঐ আচরণের উল্লেখ না করে চট্টগ্রামের ২৯ মের সভায় ক্ষমতাসীন দলের অন্য একজন সাংসদ সাংসদদের অশোভন আচরণের তীব্র সমালোচনা করেন যা অন্য সাংসদদের জন্য একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে। তাঁর ভাষায়- ‘রাস্তাঘাটে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা আমাদের জন্য শোভন নয়। এমপিদের আঙ্গুল তুলে কথা বলা উচিত নয়। একে অপরের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক না রাখলে চলবে না। আমরা বিশৃংখলা সৃষ্টি করলে আইন-শৃংখলা ঠিক থাকবে কি করে, কিভাবে? চট্টগ্রাম নগরে দিনে ট্রাক চলবে কি চলবে না সেটা দেখার দায়িত্ব পুলিশের, সবকিছুতে আমাদের মাথা ঘামানো ঠিক নয়। পুলিশ ভুল করলে আমরা সেটা দেখিয়ে দেবো।’

যে সাংসদ এহেন উক্তিটি করেছেন তিনি নি:সন্দেহে অভিনন্দনযোগ্য। তবে প্রশ্ন হচ্ছে এহেন আচরণ এখনও থামেনি কেন? এ প্রশ্নের উত্তর সহজে পাওয়া যাবে না। একটি সহজ উত্তর হচ্ছে প্রতি শ্রেণী পেশার ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কিছু ভালো ব্যক্তিও বিদ্যমান। এদের সংখ্যাই বেশি হতে পারে। তবে একজন ব্যক্তি যদি অশোভনীয় আচরণ করেন তার জন্য একই পেশাভুক্ত সকল ব্যক্তি জনসমক্ষে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকেন। এটাই স্বাভাবিক। এজন্য প্রয়োজন ঐ পেশার সকল ব্যক্তি যেন একইভাবে অর্থাৎ সুআচরণ করে- বিশেষ করে সভা-সমিতিতে এবং অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে। জনগণ এটাই প্রত্যাশা করে। এর কোন ব্যতিক্রম হলে একজনের কুআচরণের জন্য পেশারই দুর্নাম হয়। সবাই যাতে জনগণের প্রত্যাশিত সুআচরণ নিশ্চিত করে এ লক্ষ্যে সংবিধান ও আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত সংস্থার ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের জন্য আচরণবিধি প্রণীত হয়। আচরণবিধি লংঘন করলে কোন কোন পেশা যেমন সরকারি কর্মজীবীদের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা যায়। এ প্রথা অধস্তন আদালতের বিচারকদের জন্যও প্রযোজ্য। উচ্চ আদালতের বিচারকদের জন্যও পৃথক আচরণবিধি প্রণয়নের বিধান সংবিধানে বলা হয়েছে।

সংবিধান অনুযায়ী উচ্চ আদালতের বিচারকদের জন্য আচরণবিধি (ঈড়ফব ড়ভ ঈড়হফঁপঃ ) করার দায়িত্ব সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে প্রদান করা হয়েছে। এ বিধান প্রণীত হলেও জনগণ এ সম্বন্ধে অবহিত নয় বলেই ধরে নেয়া যায়। সকল ক্ষেত্রেই আচরণবিধি প্রধানত: অশোভনীয় আচরণের জন্য করা হয়। উচ্চ আদালতের বিচারকদের ক্ষেত্রে এহেন আচরণের দায়ে দায়ী ব্যক্তিদের জন্য শাস্তি কি তা জানা নেই। যে বিষয়টি জানা আছে তা হলো পদত্যাগ। বিচারকরা সাধারণত তাই করেন। সাংসদদের ক্ষেত্রে এ ধরনের নজীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে চালু থাকলেও আমাদের দেশে এর কোন উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে না। যে সমস্ত পেশার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আচরণবিধি লংঘনের জন্য কোন শাস্তির বিধান নেই, সে ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বত:প্রণোদিত হয়ে স্বীয় পদ থেকে পদত্যাগ না করলে কি হবে বা হওয়া উচিত তা স্পষ্ট নয়। মনে হয় বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পদধারী ব্যক্তির বিবেক ও বিবেচনার উপর ন্যস্ত। সাম্প্রতিককালে সংসদের অভ্যন্তরে ও বাইরে অনভিপ্রেত বা অশোভনীয় আচরণের জন্য সাংসদদের আচরণবিধি প্রণয়নের উপর সুশীল সমাজের একটি সংস্থা গুরুত্ব আরোপ করেছে। এ সংস্থার মতে সংসদের কার্যপ্রণালীবিধিতে সাংসদদের অভ্যন্তরে আচরণের উপর কিছু শর্ত প্রদান করা হয়েছে। অর্থাৎ এ আচরণবিধি সংসদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সংসদের বাইরে সাংসদদের আচরণের উপর কোন বিধিনিষেধই নেই। এজন্য প্রয়োজন এ বিষয়েও আচরণবিধি প্রণয়ন করা। এ মত নি:সন্দেহে গ্রহণযোগ্য। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের জন্য এ বিষয়ে ক্ষেত্রমত সংসদ বা সরকার বা উচ্চ আদালত এ বিষয়ে মনোযোগ দিলে সকল রাষ্ট্রীয় সংস্থার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। সরকারি কর্মচারি ও কর্মকর্তার ক্ষেত্রে সরকারের অভ্যন্তরীণ কার্যপরিধির বাইরেও কিছু আচরণবিধি প্রযোজ্য। সবক্ষেত্রে কেন এটা করা যাবে না বা করা উচিত হবে না তা বোধগম্য নয়।

উপর্যুক্ত বিষয়ে সংসদের ডেপুটি স্পিকারের প্রকাশিত মত হলো সাংসদরা সংসদের বাইরে প্রচলিত আইন ভঙ্গ করলে আইনানুগ বিচারের ব্যবস্থা করা সমীচীন হবে। এহেন উক্তি সহজে মেনে নেয়া যায় না। প্রচলিত আইন ভঙ্গ করা আর অশোভনীয় আচরণ এক বিষয় নয়। অতীত ও বর্তমানে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের বা অন্য ব্যক্তিদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন এমন অভিযোগও রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে থানায় অতীতে মামলাও হয়েছে। ফলাফল এখনও অজ্ঞাত। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা শুধু কঠিনই নয়, মামলার সুফল বা সুবিচারও প্রত্যাশা করা যায় না।

এ ছাড়া রয়েছে আরেকটি প্রাসঙ্গিক বিষয়। সরকারি কর্মচারী কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে প্রচলিত আইন বা প্রযোজ্য বিধি ভঙ্গের জন্য ফৌজদারি মামলা করা ছাড়াও বিভাগীয় মামলা রুজু করে বিধি মোতাবেক শাস্তি প্রদান করা যায়। তা করাও হয়। সংবিধানে সংসদ ও সাংসদদের ক্ষেত্রে বিশেষ অধিকার ও দায়মুক্তি বিধানও বিদ্যমান। সংবিধানে প্রদত্ত দায়মুক্তির বিশাল পরিধি। এ পরিধি এত বিস্তৃত যে, প্রচলিত আইনের হাত লম্বা হলেও সেখানে কিছু করতে পারবে না। সংসদের অভ্যন্তরীণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্যই এমন বিধান। এ বিষয়টি নিয়ে কোন বিতর্কের সুযোগ নেই। তবে যে প্রশ্নটি মুখ্য তা হচ্ছে সংসদের বাইরে সুআচরণের বিষয়টি। এ সমস্যার সমাধান কি?

দায়মুক্তি সংক্রান্ত বিধানে আরও বলা হয়েছে এ সম্পর্কে সংসদ আইন প্রণয়ন করবে। তবে সে আইন দায়মুক্তির বিষয়টি লংঘন করতে পারবে না। সংসদ কখনও এমন আইন করেছে কিনা তা জানা নেই। যদি না করে থাকে তাহলে এ আইন অবিলম্বে করা প্রয়োজন। একই সাথে এ কথাও বলা প্রয়োজন যে, বর্তমান পরিস্থিতিদৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, দলমত নির্বিশেষে সকল সাংসদ নির্বাহী ক্ষমতাপ্রয়োগে আগ্রহী। জানা যায় যে, টিআর ও ভিজিএফ-এর খাদ্যশস্য বিতরণের জন্য তাদেরকে বিশেষ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ ক্ষমতা প্রয়োগে তারা যদি প্রচলিত আইন ভঙ্গ না করে রাজনৈতিক কারণে যোগ্য ব্যক্তি বা এলাকাকে বঞ্চিত করেন তার প্রতিকার কি? এ কারণেই সংসদের বাইরে প্রযোজ্য আচরনবিধি প্রণয়ন করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে হয়।

নির্বাচিত হওয়ার পর সাংসদদের সংবিধান অনুযায়ী শপথ নিতে হয়। শপথে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে এ বিষয়টিও স্পষ্ট যে ”সংসদ-সদস্যরূপে কর্তব্য পালনকে ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা প্রভাবিত হতে দিব না।” সাংসদরা এখন সংবিধান প্রদত্ত সংসদের দায়িত্ব ছাড়াও নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগে দৃঢ়বিশ্বাস পোষণ করে যার নজিরও যথেষ্ট রয়েছে। কাজেই এ সমস্ত ক্ষমতা প্রয়োগে তারা যেন কোনক্রমেই শপথ ভঙ্গ না করে তার জন্য প্রয়োজন হবে যথাযথ আচরণবিধি।

এ আচরণবিধি সংসদের অভ্যন্তরের আচরণবিধি থেকে স্বতন্ত্র বা পৃথক হওয়া বাঞ্ছনীয় হবে, কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিরোধ নিয়ে দুর্ব্যবহার করা বা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা থেকে বিরত রাখার জন্য এবং অন্যান্য ব্যক্তিদেরও যেন এ ধরনের লাঞ্ছনার শিকার না হতে হয় তার জন্য প্রয়োজন হবে প্রয়োজনীয় শাস্তির ব্যবস্থা, যা সংসদের অভ্যন্তরে আচরণবিধির অনুরূপ বা একটু অধিক মাত্রায়ও হতে পারে। এসব পদক্ষেপের বাইরে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলেরও এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয় হবে। কারণ, ক্ষমতাসীন দলের তো কথাই নেই, অন্য কোন রাজনৈতিক দলের নির্ধারিত সাংসদরা এ ধরনের আচরণের মাধ্যমে ঐ দলেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করে।

[লেখক: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা]

লিংকঃ
Click This Link
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×