somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

OnLy MoNeY iS rEaL

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-তুই.......!!!!!!!?
-হু...আমি........অন্য কাউকে আশা করছিলি.......!!!!!
-তুই এখানে কেন.......
-আমি আসবোই তোর কাছে.......
বলেই আমাকে ঠেলে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলো.....বিছানার একপাশে চুপটি করে বসে পড়লো.....আমি দরজাটা লাগিয়ে ওর পাশে এসে দাড়ালাম.....
-এসবের মানে কি.....তোর হাসবেন্ড দেখলে সমস্যা হয়ে যাবে.....
-১ মাসের মধ্যে আমাকে এতটা পর করে দিলি....!!!!!এই ছিল তোর কমিটমেন্ট.....!!!!!!!!
-বুঝার চেষ্টা কর.....তোর হাসবেন্ড........
-ওই....!!!কিসের হাসবেন্ড.....!!!!!!ওরে আমি হাসবেন্ড মানি না.....
-মানে কি.....!!!!!!
-মানে কিছু না.....আমি যাচ্ছি না,হু..........
সকাল বেলায় এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা আশা করিনি।আজকেই আমি শহর ছেড়ে চলে যেতাম ওর নেটওয়াকের বাইরে।আর আজকেই ও চলে আসলো.....!!!!!!
-ব্যাগ ট্যাগ গুছানো কেন......!!!!!!
-না মানে......!!!!!!
-ও.....আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিলি.....!!!!!!?
-না মানে লামিয়া,বিষয়টা.......
-আজ যদি তোকে না পাইতাম তাহলে কখনো ক্ষমা করতাম না.....
-............
-আমার জন্য কি তোর মনে কোনো কালেও ফিলিসং আসবে না.......!!!!!
-লামিয়া,কি বলতাছোত......তোর বিয়ে হয়ে গেছে.....
-বিশ্বাস কর নিল,বিয়ে হইছে ঠিকই কিন্তু এখনো আমাকে.......
-চুপ....আমি শুনতে চাচ্ছি না.........
হঠাৎ করে এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে ভীষনভাবে কেদে উঠলো......আমি কি করবো বুঝতেছি না......

লামিয়ার বিয়ে হয়েছে একমাস।ও কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না....বারবার শুধু আমাকে বিয়ে করার কথা বলে।কিন্তু আমি রিজেক্ট করে দেই।কোনো একটা অজুহাত দেখিয়ে তো সরতে হবে।তাই ওকে বলছিলাম ওকে আমার পচ্ছন্দ না।সেদিন খুব কান্না করছিল।আমি তো ভাবছি ওকে আর কখনোই দেখতে পারবো না..........

লামিয়া আমার পিছনে ঘুরে ভাসিটি তে এডমিট হওয়ার পরই।কিন্তু আমি আগ্রহ দেখাতাম না।আমার কাছে টাকাই সব।আমার বিশ্বাস টাকাই সব এনে দেয়।ভালবাসা,সম্মান,পাওয়ার এভরিথিং।তাই এসব ঝামেলা থেকে সরে থাকতাম।তাছাড়া আমার এমন ডিসগাছটিং লুকে কেউ আমার আমার সাথে এটলিস্ট প্রেম করবে না...............

ইন্টারে থাকাকালীন টিউশনি করতাম।ভাসিটিতে এসে একটা কম্পানিতে জব নেই।পাশাপাশি টিউশনি। আমার ভেতরে সবসময় একটা জেদ কাজ করতো।সেইজন্য হয়তো ম্যাক্সিমাম টাইম আমার মুড খারাপ থাকতো।

ভাসিটিতে তেমন ক্লাস করতাম না।দুয়েকটা ক্লাস করে চলে যেতাম।যেদিন কম্পানির কাজ কম থাকতো সেদিন ক্যাম্পাসের কোনায় বসে বসে গান শুনতাম।কারো সাথে কথা বলতাম না।তেমন কোন ফ্রেন্ডসও ছিল না।কথা না বল্লে কিভাবে হবে.......
-এক্সকিউজ মি.........
একদিন বসে বসে গান শুনছিলাম,সেদিনই ফাস্ট লামিয়ার সাথে পরিচয়.....
-জি বলেন......(একটু অবাক হয়ে)
-আমাকে তো মনে হয় চিনো নাই.....!!!?
-চিনার কথা.....!!!!!
-অবশ্যই....আরে আমরা ক্লাসমেট......একই ডিপারটমেন্ট।
-ও আচ্ছা.......
-বসি......!!?
-আমি তো জায়গা রিজাভ নেই নি...!!!!!!বসতেই পারেন.....
মেয়েটা ভ্রু কুচকে তাকালো....হয়তো আমার এই ত্যাড়ামি কথা হজম করতে কষ্ট হচ্ছে.....
-তোমার নাম কি....!?
-নিল......
-পুরো নাম.....!?
-শুধুই নিল.....
-ও.....
খানিকক্ষন নিরবতা
-আচ্ছা তোমার বাসা কই....!!!!!!
-রামপুরা....
আবার খানিকক্ষন নিরবতা
-আচ্ছা,তোমার কি কোনো সমস্যা আছে.....!!!!
-সমস্যা থাকবে কেন....!!!!!
-না মানে....মনে হচ্ছে কোনো একটা বিষয় নিয়ে তুমি খুব আপসেট.....!!!!
-আমার চেহারাটাই এমন.......!!!!!!
এবার আমি মেয়েটার দিকে ভাল করে তাকালাম।অসম্ভব সুন্দরি না হলেও মেয়েটার মধ্যে যে এক প্রকার মায়া আছে,তা মানতেই হবে।অন্যদের মত আটা ময়দা ছাড়া ন্যাচারাল লুকে এত অসাধারন চেহারা.....আর এর সাথে আমি কিভাবে কথা বলছি........
-আপনার নাম.......
-লামিয়া.....তুমি আমাকে আপনি করে বলছো কেন.....!!!!!আমি কি তোমার বড়.....!!!!!
-মনে হয়.........
-মানে কি.......!!!!!!
-মেয়েদের আজকাল বয়স মাপা খুব টাফ বিষয়....যেই পরিমান আটা ময়দা মাখে...তাতে কে যে আন্টি আর কে যে খালাম্মা বোঝা যায় না.......
মেয়ের মুখে এবার কাঠিন্য দুর হল।হাসি ফুটছে.....
-তাই.....!!!!!!তাহলে আমাকে কোন ক্যাটাগরির মনে হচ্ছে.....!!!!?
-এখনো সিউর হতে পারি নি......
এভাবেই শুরু হয়েছিল আমাদের পরিচয়।আর আস্তে আস্তে বিষয়টা গভীরে যেতে থাকে....বাট আমি সিরিয়াস হইনি।আমার কাছে অনলি টাকা ইজ রিয়েল.......

নিজেকে সবসময় ধিক্কার জানাই.....কেন যে গরিব হলাম....কেন বড়লোক হতে পারলাম না....কেন আমার কাছে টাকা নাই.....কেন আমি এত পরিশ্রম করি.......কিন্তু কোনো উত্তর পাই না।
লামিয়ার সাথে তারপর প্রায়ই কথা হত।আমার নাম্বারটাও ওই নিয়েছে।আমি কখনোই ফোন দিতাম।কি দরকার আজাইরা গেজানের......এত টাইম কই.....মাঝে মাঝে ও আমাকে এও বলতো.."তুই আসলেই কিপ্টা"।

ওর সাথে ফ্রেন্ডশিপের ১ বছরের মাথায় আমাকে প্রপোজ করে।যেই ভয়টা করছিলাম তাই হইছে.....
-কিরে মমিন.....আর কত একা থাকবি......!!?
-দোকা কই পাবো.....!!!!
-বানাইয়া নে.....
-ইন্টারেস্ট নাই......
-কেন....!!!!!মেয়ে পচ্ছন্দ হয় না.....?
-এইসবের কোনো দাম নাই আমার কাছে.....
-হু...অনলি টাকা ইজ রিয়েল,রাইট....?
-হুম।
-উফ আল্লাহ.......!!!!!!!ওই....তোর এত টাকার দরকার কে.....!!!!কি করবি এত টাকা....!!!!!!কবরে নিয়া যাবি......!!!?
-সিস্টেম থাকলে নিতাম......
তার পরেরদিনই আমাকে একটা চিরকুট দেয় এবং তাতে লেখা,"গাধা,টাকাই সব না।ভালবাসাও দরকার।আমাকে ভালবাসবি.....!!!?"......চিঠি টা পড়ে একটা দীঘশ্বাস ফেল্লাম।
তারপর থেকেই লামিয়ার বিহেভিয়ার চেঞ্জ.....সারাদিন আমার সাথে ঘুরাঘুরি।আমি ওকে হ্যা বা না কিছুই বলিনি।হয়তো ধরে নিছে উত্তর হ্যা......
শুক্রবার সময়টা সারাদিন আমার সাথে কাটাত।বাসায় আমার কোন কালেও ভাল লাগেনা।তাই নদীর ধারে বসে থাকতাম।আর তখনি ও হাজির হয়ে যেত।তবে একটা কথা মানতেই হবে।যখন ও আমার সাথে থাকতো,মুডটা অটোমেটিক ভাল হয়ে যেত......কে জানে,এটা কিসের ফিলিংস।

তো একদিন অফিসের কাজে ব্যস্ত,তখন লামিয়ার ফোন
-কই তুই....
-অফিসে....
-আমি আসতেছি.....
-আসতেছি মানে....!?
-আসতেছি মানে,কামিং.......
বুঝলাম না হঠাৎ এইসময় আসার কারন কি.....
দেখতে দেখতে আধা ঘন্টার মধ্যে আমার অফিসে এসে হাজির......আজকে ওকে অন্যরকম লাগছে।সম্ভবত ওর আউটফিটের কারনে। আর চোখের গ্লাস টা নিউ।কাহিনি কি!!!!!!!!
-তুই এইসময়.....!!!!
-হুম.....আজকে সারাদিন থাকবো.....
-মানে....!!!!!
-প্লিজ, না করিস না.....
নিরুপায় হয়ে রাজি হলাম।যা বলবো তা শুনতেই হইবো........
রাত ১০ টা।আজ সারাদিন লামিয়া আমার সাথে।মাঝখানে অনেকবার বলছিলাম বাসায় চলে যেতে...যাবেই না।সারাদিন তো মুড ভালই দেখলাম,কিন্তু এখন আবার খারাপ....
-কিরে কি হইছে......!!?
-.........
-কিরে বল....!?
-আমি বাসা থেকে চলে আসছি......!!?
-মানে.....!!!!!!কেন!!!?
-বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছে আমাকে না জানিয়ে....
-তো....!?
-তো....সেই ছেলেকে আমার বিয়ে করতে হবে......
-করবি.....
-মানে......
-বাবা মা দেখেশুনেই ঠিক করছে......
-তুই এইটা বলতে পারলি.....!!!!আমি যদি ওই ছেলেকে বিয়ে করি,তাহলে তোর সাথে প্রেম করছি কেন....!!!!
-কে বল্ল আমরা প্রেম করছি.....!!!
-তুই আমাকে ভালবাসিস না....!!!?
-আমি কি কখনো বলছি ভালবাসি......!!!!!!
-..........
-দেখ,তারা যেই ছেলে পচ্ছন্দ করেছে নিশ্চয়ই ইস্টাবলিস কোনো ছেলে।সুখে থাকবি.......আবেগ দিয়ে নয়,রিয়েলিটি দিয়ে চিন্তা কর......
-তোর মাথায় টাকা ছাড়া কিছু নাই......?
-নাহ.....
-আমার জন্য কখনো তোর ফিলিংস হইনি......!!!?
-মনে হয় না......
আর দাড়ালো না......তখনি হনহন করে চলে গেল.......
.
.
-কিরে,কিছু খেতে দিবি না...!!!!?ক্ষুধা লাগছে....
ওর কথায় বাস্তবে ফিরে আসলাম
-লামিয়া,তুই বাসায় চলে যা.....ঝামেলা করিস না.....
-ঝামেলা তো তুই করস.....
-দেখ,এইগুলি ঠিক না.....
-কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক আমাকে বোঝাতে হবে না।চল...
-কোথায়.....!!!!!
-কোথায় আবার.....বিয়ে করতে......
-মানে কি......
-মানে কি আবার.....!!!!!!তোমারে এমনেই ছেড়ে দিব ভাবছো.....!!!!!আজকেই আমাকে তোর বিয়ে করতে হবে......আমি টাকাও নিয়া আসছি......চল
আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে পথচলা শুরু করল।উদ্দেশ্য কাজী অফিসে......
(অনেক কষ্টে মাথা থেকে কিছু বাইর হইলো)
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:২৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×