somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পটা; আত্মহত্যা অথবা খাওয়া-দাওয়া নিয়ে ......

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গল্পের শিরোনামে অথবা যোগ করে আত্মহত্যা আর খাওয়া-দাওয়ার মধ্যে দ্বিধা বিভক্ত করতে চাইনি, কারণ অবশ্যই এর মাঝে একটা যোগসূত্র আছে, সে গল্পটাই আজ বলবো। তার আগে এই গল্পের নায়ক সম্পর্কে একটু আধটু বলে নিই। নায়ক আমি নিজেই, মানে প্রচেত্য। প্রচেত্য কাজ করে, খাই, দাই, ঘুমাই, সবই করে; তবে প্রচেত্য'র একটা বিশেষ খারাপ গুণও আছে। গুণের কি আবার খারাপ হয় না কি ? হবে হয়তো কারণ প্রচেত্যর আজ মাথা এলোমেলো, তাই তার স্বাধীনতা আছে ওলট পালট বলবার। পাঠক মশাইয়েরা এ নিয়ে অভিযোগ তুলবেননা অনুরোধ করে। যা হোক, পেছনের লাইনে ফিরে আসি "বিশেষ খারাপ গুণ" তার নতুন নতুন সব কিছু ভাবতে ভাল লাগে, ভাল লাগে সুমধুর কল্পনা করতে .. ইত্যাদি ইত্যাদি । ও হ্যা "বিশেষ খারাপ গুণ"; ধরুন আপনার কোন পরামর্শ প্রয়োজন পড়ল, আপনি কোথায় যাবেন, সে রাত হোক বিরেত হোক কিংবা দিন - রজনী যাই হোক না কেন, আপনাকে বলি সোজা প্রচেত্যর দরবারে হাজির হয়ে যাবেন, সে আপনাকে নিশ্চয় নিরাশ করবেন না।

সকালটায় অফিসে পৌছেছি খানিকটা দেরীতে, এম্নিতেই মেজাজ চরম তীরিক্ষে হয়ে ছিল গতকাল থেকেই; পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক আরো কত কি ঝুট ঝামেলা, কোনটা থুয়ে কোনটা রাখি। যাকগে, অফিসের চেয়ারটায় হেলান দিয়ে সাত সকালেই কাজের বদলে গান জুড়ে দিলাম কম্পিউটারে। আমার পাশে আমার কলিগ শিবলী ভাই বসেন; হুজুর এবং খুবই ভাল একজন মানুষ। চেয়ারে পা দুলাতে দুলাতে ওনাকে দেখছি, তিনি তখন কি একটা কাজ করছিলেন, হাঠাত করেই ...
আচ্ছা শিবলী ভাই জানেন, আমি আজ কি করতে চলেছি ?
মুখ না ঘুরিয়ে তিনি কম্পিউটারের মনিটরের দিকে তাকিয়েই উত্তর দিলেন "কোথায় যাচ্ছেন ভাই"
I am going to kill myself... today
ধপাস করে চোখ দুটো বড় বড় করে, দম নিতে নিতে আমার দিকে ফিরলেন "কি বলছেন ভাই?"
আমি বললাম "হ্যা, বিশ্বাস হচ্ছেনা তো, এই দেখেন suicide note"যদিও ওটা একটা সাদা কাগজ ছিল, তিনি দেখে কিছুই বুঝলেন না, শুধু বিষ্ময়ে বললেনে "এতো সাদা কাগজ !"
আমি বললাম "হ্যা, ওটাতে লিখিনি এখনও, ভাবছি এখনই কম্পোজ করে ফেলবো"
শিবলী ভাইয়ের হাতে থাকা কাজ বন্ধ করে আমার দিকে ফিরেই কথা বলছিলেন, অামার অফিস রুমে আরো দুজন কর্মকর্তা বসেন কিন্তু ততক্ষনে শুধু একজন এসেছিলেন আরেকজন আসেননি, আমি কথাগুলো বলছিলাম আস্তে আস্তে যাতে অন্য কেউ শুনতে না পায়।
"আচ্ছা শিবলী ভাই suicide note - এ আপনার নাম'টা দিয়ে দেই ?"
কি বলবো আর, বেচারার চোখগুলো দেখে মনে হচ্ছিল তখনই কোটার থেকে বেরিয়ে আমার হাতে উপহার স্বরুপ এসে পৌছবে, দরকার হলে জান দিতে সে প্রস্তুত তবুও যেন suicide note - এ নাম লেখা না হয়।
শিবলী ভাইয়ের অবস্থা তখন আমার থেকে আরও করুন, কোন মতে বললো "ভাই এসব কি বলেন ? suicide note এ আমার নাম কেন ? ভাই প্লিজ মাফ করে দেন ? ভাই প্লিজ "
বেশ গম্ভীর আর ভারিক্কী সুর তুলে বললাম "হুমম, রেহাই দিতে পারি তবে এক শর্ত, আজ দুপুরে লাঞ্চ করাতে হবে; রাজী ?"
তিনি কোন চিন্তা ছাড়াই উত্তর দিলেন "অবশ্যই"


এতো গেল শুধু শিবলী ভাইয়ের গল্প, ঠিক একইভাবে আজ এই suicide আর suicide note- এর গল্প ফেঁদে একেক জনকে ধরে দুপুরের লাঞ্চ, বিকেলের স্নাকস আবার রাতের ডিনারেরও আয়োজন করে ফেলেছিলাম। সবাই যে suicide note কে এত্তো এত্তো ভয় পাই, এই গল্প'টা না ফাঁদলে জানাই হতো না। অবশেষে যখন বাড়ী ফিরছি, একটা কথাই শুধু ভাবছিলাম, মানুষ suicide note - কে কতটা ভয় পায় ! তাই না ? ভয় তো পাবেই, যদি সেই note এ তার নাম থাকে।

ওহো, বলাই তো হয়নি, "বিশেষ খারাপ গুণ" প্রচেত্য'র সেই বিশেষ খারাপ গুণ'টি কি জানেন ? সে আত্মহত্যার টেকনিকে ওস্তাদ ! নতুন, পুরাতন, সিঙ্গেল, মাল্টিপল, ভিজিয়েবল, ইনভিজিয়েবল, থ্রী জি, ফোর জি আরো কত রকমের suicide techniques যে তার জানা আছে তার ইয়াত্তা নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৭
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×