somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাঙ্গামাটি ভ্রমণ – ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি ও রাজবন বিহার

১৭ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২৫ জানুয়ারি রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়ি। একটি মাহেন্দ্রা গাড়ি রিজার্ভ করে নিয়ে সারা দিনের জন্য বেরিয়ে পড়ি খাগড়াছড়ি ভ্রমণে। একে একে দেখে ফেলি “আলুটিলা গুহা”, “রিছাং ঝর্ণা”, “শতবর্ষী বটবৃক্ষ” আর “ঝুলন্ত সেতু”।

পরদিন ২৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি থেকে রাঙ্গামাটির দিকে রওনা হই একটি চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে। পথে থেমে দেখে নিই “অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার”। ২৭ তারিখ দুপুরের পরে পৌছাই রাঙ্গামাটি। বিকেল আর সন্ধ্যাটা কাটে বোটে করে কাপ্তাই লেক দিয়ে “সুভলং ঝর্ণা” ঘুরে।

কাপ্তায়ে নৌভ্রমণ শেষে হোটেলে যখন ফিরেছি তখন রাত হয়ে গেছে। রাতের খাবার শেষ করে রুমের সামনে হোটেলের ছাদে পাতা দোলনায় বাচ্চারা দুলতে লাগলো আর আমরা তিন তালার রুমে চলে গেলাম, রাত্রি কালীন আড্ডায়। অনেক রাত পর্যন্ত চলল আড্ডা, হ্রদের উপর ঝুলে থাকা বেলকুনিতে বসে। পরিচিত তারারা জলের নিচ থেকে উকি দিয়ে এক সময় মাথার উপরে উঠে আসতে লাগলো, তাই আমরা আড্ডার পাট চুকিয়ে ঘুমতে গেলাম।

পরদিন ২৮ তারিখ সকালে নাস্তা সেরে আবার প্রস্তুত বেড়াতে যাওয়ার জন্য। বসিরের আলসেমি রোগ আছে, তাই ও আমাদের সাথে বের হল না, রয়ে গেলো হোটেলেই।


{হোটেলের ছাদে, বোট ওয়ালা চেষ্টা করে আমাকে রাজি করাতে ওর বোট নিয়ে ঘুরতে যেত।}


আমরা বাকিরা বেরিয়ে পরলাম। রিজার্ভ বাজার থেকে একটা CNG নিয়ে নিলাম ঝুলন্ত সেতুতে যাব। আমরা আছি ৬ জন আর গাড়ির ক্যাপাসিটি ৫ জন, তাই আমি রয়ে গেলাম অন্য একটাতে করে যাব বলে। বাকি ৫জন চলে গেলো, মিনিট পাঁচেক পরে আমিও আরেকটা CNG নিয়ে রওনা হলাম। ভাড়া নিয়ে কোন কথা বলা যায় না, সব যায়গার ভাড়াই রেট করা।



সেই অতি-পরিচিত ঝুলন্ত সেতুর সামনে এসেছি আবার। আমার মনে হয় বাংলাদেশের এমন কোন ব্যক্তি নাই যিনি এই সেতুর ছবি দেখেন নি। আমি অনেক অনেক বছর আগে একবার এসেছিলাম। আমার মনে হয় সেতুটার মূল আকর্ষণ এর অবস্থান এর জন্য। চারপাশের দৃশ্য আর মনোরম পরিবেশই একে এত আকর্ষণীয় করে রেখেছে।
বেশ কিছুটা সময় কাটালাম এখানে, চলল ছবি তোলাও।



















ঝুলন্ত সেতু থেকে এবার যাব চাকমা রাজবাড়ি আর রাজবন বিহার দেখতে। এবার দুটি CNG ভাড়া নিয়ে নিলাম, খুব বেশি সময় লাগেনা বিহারে পৌছতে। সামনেই খেয়া ঘাট, নৌকো দিয়ে যেতে হবে রাজবাড়ি আর রাজবন বিহার দেখতে, পাশাপাশি দুটি দ্বীপে এই দুটির অবস্থান। খেয়া নৌকোয় পার হয়ে প্রথমে গেলাম রাজবাড়িতে, যদিও জানি এখানে দেখার কিছুই নেই। পুরনো কাচারি বাড়িটা এখনও কোন মতে টিকে আছে, পাশেই নতুন একটি আধুনিক বাড়ি উঠে গেছে। সামনের মাঠটা আগরে মতই আছে, আর আছে সেই “ফতে খাঁ কামান”। ক্যামেরাটা ছিল ইস্রাফীলের হাতে, কি কারণে কে জানে তেমন কোন ছবি তোলেনি!


{মাঠের পাশের এই হাতির বাচ্চাটা আমাদের বাচ্চাদের বেশ আনন্দ দিয়েছে}



{পূর্ব পরিচিত “ফতে খাঁ” কামানের পাশে বসে ছিলাম}



{হাতি ছেড়ে সব এবার কামানের উপর হামলা করতে এসেছে}


এখান থেকে আবার নৌকোয় করে গেলাম পাশের টিলার রাজবন বিহারে। প্রথমবার যখন গিয়েছি তখন এখানে সবে মাত্র বিশাল এই টাওয়ারের কাজ শুরু করতে ছিল। অনেক বছর পরে আজ আবার আসলাম, আর হয়তো কখনো এখানে আসা হবে না।


{রাজবন বিহারের ঘাটে দুটি গাছের শেকড় এভাবেই ছড়িয়েছে।}



{এটার উপরে নাকি মৃতদের কি আনুষ্ঠানিকতা পালন করে}






{রাজবন বিহার}



{রাজবন বিহারের দক্ষিণ দিকের ঘাটে}



{ স্বপনের খুব ক্ষধা....}



{রাজবন বিহারের দক্ষিণ দিকের ঘাটে}


রাজবন বিহার পর্যন্ত সড়ক পথে যোগাযোগ আছে। কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে আবার বিহারের সামনে থেকে CNG নিয়ে ফিরে আসি হোটেলে। রাঙ্গামাটি ভ্রমণ শেষ, আজই চলে যাবো বান্দরবনে।


{রাঙ্গামাটি টু বান্দারবান}




পূর্বের পর্বগুলি -
খাগড়াছড়ির পথে”।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – প্রথম পর্ব”।
“[link|http://zizipooka.com/travel/1845|খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – আলুটিলা গুহা[]”।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – রিছাং ঝর্ণা”।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শতবর্ষী বটবৃক্ষ”।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার”।
রাঙ্গামাটি ভ্রমণ – সুভলং ঝর্ণা ও কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার”।
রাঙ্গামাটি ভ্রমণ – ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি ও রাজবন বিহার”।


প্রথম প্রকাশ: ঝিঁঝি পোকা


এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের মত এই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝি পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ।

৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×