somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবার বাড়ল জ্বালানী মূল্য : আবুল মন্ত্রীদের হাত থেকে আমাদের বাচাঁবে কে ?

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৮:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘুম থেকে উঠেই এমন দুঃসংবাদ পড়তে হবে কল্পনাই করিনি। কোন প্রকার পূর্বঘোষণা ছাড়াই সরকার এক বছরে ৪র্থ বারের মত রাতের আধারে জ্বালানী মূল্য বাড়িয়েছে। এর আগে গত ৫ মে (২ টাকা), ১৮ সেপ্টেম্বর (৫ টাকা) এবং ১০ নভেম্বর (৫ টাকা) তিন দফায় জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। অর্থাৎ গত ৮ মাসে জ্বালানীমূল্য ১৭ টাকা বৃদ্ধি পেল।

মাত্র এক সপ্তাহ আগেই আমি লিখেছিলাম যে, আমাদের অর্থনীতি এখন ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিটে আছে । তাই খুব একটা অবাক হচ্ছিনা এই আচমকা মূল্য বৃদ্ধিতে কারন মুমূর্ষ রোগীকে বাচাঁতে তেতো কুইনাইন থেকে শুরু করে অস্কিজেন-মাস্ক পর্যন্ত যে কোন কিছুই হতে পারে।

এবারের মূল্য বৃদ্ধিতে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার ডিজেল ৬১ টাকা, কেরোসিন ৬১ টাকা, অকটেন ৯৪ টাকা, পেট্রোল ৯১ টাকা ও ফার্নেস অয়েল ৬০ টাকা দরে বিক্রি হবে। সরকারী ভাষ্য মতে এই মূল্য সমন্বয়ের পড়েও ডিজেল, কেরোসিন ও ফার্নেস অয়েল বিক্রিতে লিটারে প্রতি যথাক্রমে ১৬ টাকা ৩৪ পয়সা, ১৪ টাকা ৮৪ পয়সা ও ৪ টাকা ৯৫ পয়সা ভর্তুকি দিতে হবে। আর বৃদ্ধির পেছনে যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে

১। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়া
২। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া।
৩। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভর্তুকি বেড়ে যাওয়া

টাকার মূল্য কমে গেছে এটা সত্যি নভেম্বরের শুরুতে যে ডলার ৭৭ টাকায় পাওয়া যেত তা গতকাল বিক্রি হয়েছে ৮২ টাকায় (আর কাব মার্কেটে তা ৮৫-৮৬) । অর্থাৎ ২ মাসে টাকা ৬'৪% মূল্য হারিয়েছে অথচ গরীবের জ্বালানী খ্যাত ডিজেলের মূল্য বাড়ান হল ৮'৯২% ভাগ !

আন্তর্জাতীক বাজারে মূল্য-বৃদ্ধি স্রেফ একটি অযুহাত মাত্র; গত নভেম্বরেই পত্র-পত্রিকায় বিভিন্ন রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ২০০৯ এর পর আন্তর্জাতিক জ্বালানী মূল্য যে কোন সময়ের চেয়ে স্থীতিশীল অবস্থায় রয়েছে। গতকাল ও ব্য্যরেল প্রতি ক্রুড অয়েলের মূল্য ১০০ ডলারের নিচে ছিল (২০০৯ এ ছিল ১২০ ডলার)। আর স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার জ্বালানী মূল্য বৃদ্ধির কোন রিপোর্ট ও চখে পরেনি।

সব শেষে বলা হয়েছে বিদ্যুত উৎপাদনে ভর্তুকির পরিমান বেড়ে যাওয়ার ধাক্কা সামাল দিতেই এই মূল্য সমন্বয়। গত এক-দেড় বছর ধরে অর্থনীতীবিদরা বললেও সরকার কোন কথা শেনেনি রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ব্যপারে। বরং যারা এ নিয়ে লেখা-লেখি করছেন তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে-দেয়ার হুমকি প্রকাশ্য সভাতেই দিয়েছেন আমাদের ৩ ডজন ডক্টরের ডিগ্রীধারী প্রধানমন্ত্রী ! দেরীতে হলেও সরকার তাদের ভুল বুঝতে পেরে আর কোন তেল ভিত্তির রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি না দেবার ঘোষনা করেছে। অবশ্য ক্ষতি যা হবার তা ইতিমধ্যেই হয়েগেছে কারন অনুমতি প্রাপ্ত সবগুল কেন্দ্র এখনও উৎপাদনে আসেনি। অথচ এখনই ভর্তুকি মূল্যে জ্বালানী সর্বরাহ করতে গিয়ে সরকার ও দেশের অর্থনীতির ত্রাহী অবস্থা দেখা দিয়েছে। মাত্র ৩৮% বাংলাদেশী বিদ্যুৎ সুবিধা পায় কিন্তু ৯০% জনতা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে ডিজেল-কেরসিনের ভোক্তা। তাহলে এখন এই প্রশ্ন উঠা অস্ভাবিক নয় যে ৩৮% ভাগের ভোগ-বিলাসের জন্য ৯০% মানুষ কেন তার পকেট থেকে অতিরিক্ত টাকা দেবে ?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলছেন ঋণ করে সরকার ঘি খাচ্ছে না অথচ আমরা দেখছি নাম না জানা অখ্যাত-নিভৃত গ্রামের মজুর-কৃষকের ঘামের টাকায় শহরের পাচ-তারা হোটেল-মোটেল অট্টালিকা ঝলমল করছে। রাতের আধার ফুরে স্টেডিয়ারগুলর ফ্লাড-লাইটে বসছে তারার মেলা। বিদ্যুতের ভর্তুকি মূল্য কেন জ্বালানী মূল্যের সাথে সমন্বয় হবে? যিনি বাতি জ্বানাচ্ছেন ভর্তুকি মূল্য তিনিই শোধ করবেন, সরকার কেন এই কারনে খেটে খাওয়া দিনমজুরের পকেট কাটছে।

এবার ব্যক্তিগত দুঃখের কথা বলি , ৭৭ টাকার পেট্রল ১ বছর ঘুরতে তা ঘুরতেই ৯১ টাকা হল। শখের মটর-বাইকটি (শক হলেও ঢাকার রাস্তায় জ্যাম বিবেচনায় প্রয়োজনীয়তা অসামান্য) আর কত দিন চালাতে পারব :( জানি না। যখচ প্রতি লিটার পেট্রল থেকে সরকার ৮ টাকা (নভেম্বরের সরকারী হিসাব অনুযায়ী) লাভ করছে। আমার মত আম-জনতার পকেট ও নিরাপদ নয় এই সরকারের আবুল মন্ত্রীদের কাছ থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:৫৭
৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×