somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজকের কালপুরুষ

২১ শে মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকের কালপুরুষ
----------- ড: রমিত আজাদ

কোটি জনতার আর্ত ওস্ঠধর বারংবার হচ্ছে কম্পিত ,
আসুরিক শক্তির কাছে নতজানু হয়ে বড় বেশী উৎকন্ঠিত।
আমাদের চিৎকার নিরেট দেয়ালে ঠেকে,
বার বার ফিরে আসে আমাদেরই কানে,
বেদনার পংক্তিমালা দুখিনী কবিতা হয়ে,
বেজে ওঠে বিষন্নতায় অসন্তোষের গানে।


প্রতি বছরই একবার করে সুর্যকে প্রদক্ষীন করে পৃথিবী,
আর আমরা যেখানে ছিলাম ঠিক সেখানেই থেমে থাকি।
স্থবিরতা ঘোষণা করে ভারী হয়ে থাকা গুমোট বাতাস,
মৃম্ময়ী ফাল্গুনী হাওয়ার সতেজতা পায়না, দুমুঠো আকাশ।


গোরস্থানে শুয়ে থাকা জীবন্ত মানুষগুলো সহসা শবদেহ হলো,
অস্বাভাবিক এতসব মৃত্যু কি আমাদের কাম্য ছিল?
অসহায়ত্বের গ্লানিতে, জাতি আজ লজ্জ্বিত,
নিরুপায় জনতা আর কত হবে প্রতারিত?


জনতার শেষ আশা, রুদ্র বোশেখীর ঝড় হয়ে
নেমে আসবে এক স্বপ্নের কালপুরুষ,
ব্যঘ্র হুংকারে, তীব্র ঝাঁকুনিতে,
ফেরাবে জাতির হুশ।

তুমি নেমে এস কালপুরুষ,
এদেশের মাটিতে মাটিতে , ক্ষেতের ফসলে কৃষক তোমাকে খোঁজে,
কলে-কারখানার যন্ত্রের খাঁজে খাঁজে শ্রমিক তোমাকে খোঁজে,
সংবাদপত্রের কলামে কলামে, পত্রিকার সাংবাদিক তোমাকে খোঁজে,
চর্যাপদের, অগ্নিবীণার মরমে মরমে কবিতার কবিরা তোমাকে খোঁজে,
উপন্যাসের কাহিনী ঘুরে, কথাশিল্পের কথক তোমাকে খোঁজে,
পথ হারিয়ে পথের মাঝে পথিক তোমাকে খোঁজে,
নাট্যশালার মন্চ কাঁপিয়ে, নাট্যশিল্পের নায়ক তোমাকে খোঁজে,
ব্যন্ড সংগিতের আসর মাতিয়ে, কন্ঠশিল্পের গায়ক তোমাকে খোঁজে,
মানুষ গড়ার কারিগর আদর্শ শিক্ষক তোমাকে খোঁজে,
নির্ভীক নিবিষ্ট মনের তীক্ষ্ণ দৃষ্টির সৈনিক তোমাকে খোঁজে,
রং-তুলির আঁচরে কাঁটা বিচিত্র চিত্রের চিত্রকর তোমাকে খোঁজে,
কাঁধে ব্যাগ নিয়ে মাত্র ক্যম্পাসে আসা ছাত্র তোমাকে খোঁজে।

তুমি ভাষা শহীদের নিথর দেহের শেষ আঁকুতির রত্ন,
তুমি শহীদ সৈনিকের জীবন্ত চোখের অনেক আশার স্বপ্ন।
তুমি নেমে এসে একটিবার বজ্রে বাজাও বাঁশী,
নেকড়েগুলোর আত্মা কাঁপিয়ে উঠুক সর্বনাশী।


তুমি নেমে এসো কালপুরুষ,
চোখ ধাঁধানো আলোয় তোমাকে দেখব,
দেবদূতের পোষাকে সজ্জিত উজ্জ্বল রঙ্গনের বাহারে তোমাকে দেখব,
যেমন দেখেছি নীলের জলে ভেসে যাওয়া সিন্দুকে নতুন আলোর ঝর্না,
যেমন শুনেছি বেথেলহামে এক অবুঝ শিশুর কান্না।


তুমি নেমে এসো কালপুরুষ,
এ'দেশের এখানে-সেখানে, আঁনাচে-কাঁনাচে,
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেবশিশুদের জড়ো করো,
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হয়ে,
দাও এক নতুন মন্ত্রের প্রেরণা,
শেষ হোক সেই অসমাপ্ত গানের বেদনা।
উদগ্রীব হয়ে হয়ে দেখতে দাও এক নতুন মুগ্ধতাকে,
দুঃসময় থেকে সুসময়ে তুমি পৌঁছে দাও আমাদেরকে।


বিদ্রোহী কবির অগ্নিবীণা আরেকবার ঝংকৃত হোক,
আকাশ থেকে বজ্র হয়ে ঝরুক অগ্নিরাগ,
কথার ফুলঝুড়িতে বানিয়ে মিথ্যে বলা
ঐ জিভগুলোকে ছিড়ে ফেলে টেনে,
বক্তৃতা দাও সত্যবাদির স্পষ্ট ভাষণে।


মার চোখ খুঁজে ফেরে সেই কালপুরুষের ছায়া,
যিনি চিৎকার করে বলবেন,
আমার আকাশ, আমার বাতাস,
আমার মাটি, আমার জল,
আমার দেশ , আমার জনতা,
আমি তোমাদের ভালোবাসি।





(পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা গিয়েছে, যখনই কোন দেশ বা সমাজে নৈতিকতার অবক্ষয় হয়েছে, তখনই সেখানে নেমে এসেছে ভয়াবহ কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা আগমন হয়েছে কোন মহামানবের যিনি নিজ গুনে সেই দেশ বা সমাজে নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছেন। আমরা ভয়াবহ কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ কামনা করিনা, আসুক কোন মহামানব যিনি আমাদের একটি সুন্দর সমাজ উপহার দেবেন )













সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:১৬
৩৪টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×