১) গতকাল চট্রগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে যথাসময়ে এসেছি৷ ট্রেনের টিকিট ১০দিন আগেই সংগ্রহ করা ছিলো। এসে বসেছি, একটু পর একটি ছোট পরিবার, ছোট একটা মিষ্টি বাচ্চা , সে খুব মিষ্টি। এই ২,৩ বয়স। এই বয়সেই চোখে চশমা৷ যাত্রাপথে তার ছিলো অনেক
প্রশ্ন তার বাবার কাছে। আর অনেক রকম বুদ্ধিমান শিশু সে। আমাদের যুগের চাইতে এ দিনের বাচ্চারা বেশি ইন্টালিজেন্ট এটা অনেকেই ফেসবুকে স্টেটাস দেয়। কালকে প্রমান দেখলাম। এখন বাচ্চা বয়সেই তারা মোবাইল কম্পিউটার সব চালাতে পারে৷ আমরা এসব তখন
দেখিনি, কারন ছিলোনা।
একটু পর আরো একজন বুদ্ধিমতি বুড়ি টাইপের আরেকটা বাবু আসলো। সে একটা কলম আর খাতা নিয়ে হাজির। সে এসে ওই ছোট বালকের চেয়ার টা দখল করে বসে পড়লো৷ আর সেখানে বসে খাতায় কি শিল্প কর্ম আঁকছিলো। আর সবাইকে তা দেখাচ্ছিলো। আমি মনে করি এটাই উত্তম।
এসব নিয়ে অনেক গর্ববোধ করে। যে আমার ছেলে /মেয়ে ২ বছর বয়সে এই করে ওই করে৷ মোবাইল চালায় কম্পিউটার চালায়৷ আমি বলবো এসব না করাই ভালো। শিশু কালেই ইলেকট্রনিক ডিভাইস দিয়ে চোখের সমস্যা না করিয়ে, তার হাতে রং তুলি, পেন্সিল, খাতা, এসব দিন৷ ওই ছোট মেয়েটি যা নিয়ে ঘুরছে। আকার চেষ্টা করছে।
২) পাশেই একজন আন্টি ছিলো। তিনি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে আসলেন৷ মাঝে মাঝে উঠতেন, পান মুখে দিয়ে আবার ঘুমিয়ে যেতেন৷ পান খাওয়া একটা রাজকীয় অভ্যাস। আবার কারো মতে এটা বিরক্তিকর। কারো মতে পান এমন জায়গায় খাওয়া উচিৎ না। যেখানে থুথু ফেলা নিষেধ বা পরিস্কার জায়গা যেমন ফাস্টক্লাস ট্রেন।
৩)
আগের দিনে ব্লগে ব্লগার ছিলো, তারা মৌলিক বিষয়ে লেখা লিখতো। এখন ব্লগার কয়েক শ্রেণীর হয়ে গেছে৷
ক) এরা নিজের ব্লগিং করে। নিজের মতো লিখে। অন্যকে মন্তব্য করে। অনেক পড়ে, তাদের লেখা তার প্রমাণ। তারা অনেক পড়েন তাই জানেন। তাদের জানার আগ্রহ অনেক, জানানোর আগ্রহ প্রচুর৷তারা নিজেরা জানেন বুঝেন, অন্যকে জানাতে সাহায্য করেন৷
খ) এরা ব্লগারদের লেখাকে বিশ্লেষণ করে৷ ভালো খারাপ রিভিউ দেয়।
গ) এরা জন্ম নিয়েছে এই কিছু দিন আগে। মাস বা বছর হবে৷ এরা ব্লগারদের চরিত্র, সার্টিফিকেট দেয়া শুরু করেছে। কে নাস্তিক কে আস্তিক /কে কোন মতবাদে বিশ্বাস করে৷তারা ট্যাগ করে লিখা প্রকাশ করা শুরু করেছে৷ এরা মানুষকে হামলা করে লেখা প্রকাশ করে।
এদের কাজ অন্য ব্লগারদের নিয়ে অতিরিক্ত নাক গলানো। নিজেরা খুব সহজে ব্লগার হওউয়ার সহজ পন্থা বেছে নিয়েছে৷ ব্লগারদের নিয়ে কাদা ছুড়াছুঁড়ি করা৷ ব্লগাররা বিষয় বস্তু নিয়ে চিন্তা করে৷ আর এরা ব্লগারদের নিয়ে মারামারি করে।
ঘ) আর এক শ্রেণী এখন এই সব গ্রুপকে ছাগল পাগল কুকুর বলে গালি দিচ্ছে৷ সহজে রোস্টিং করে তারা ব্লগার হবে। আগে জানতাম ইউটিউবেই শুধু রোস্টিং হয়৷ কারন তাদের কাজ কমিডি /হাস্যকর কাজ /এসব করা৷ এখন কিছু লোক ব্লগিং জগতেও এসব শুরু করতে চাচ্ছে
৩) কয়দিন ধরেই একটা গল্প লিখতে চাচ্ছি৷ লেখার ইচ্ছা আছে ধারাবাহিক পর্ব আকারে৷ যদি ভালো হয় বা মনে হয় পাঠকের পড়ার যোগ্য তাহলে লিখবো৷ যদি মনে হয় শুধু শুধু লেখা হচ্ছে৷ এটা বিরক্তিকর হচ্ছে৷ তাহলে আগের মতো করে ব্লগিং চালিয়ে যাবো। গল্পকে বলবো বিদায়।
তুমি এখানেই রাস্তা শেষ করে নাও, শেষ কর তোমার যাত্রা পথ। আর দেখা হবেনা বন্ধু।
৪) আমরা কম বেশি সবাই লিখতে ভালোবাসি। অনেকে শখের কারনে লিখে। অনেকে লিখেই সংসার চালায়। মানে কলামিস্ট সাংবাদিক। অনেকে লিখেন একাকিত্ব দূর করতে।যেসব কথা মুখে বলে বুঝাতে পারবে না৷ বা কাকে বলবে এমন মানুষ খুঁজে পায়না সেই লেখক। তখনি সে কলম ধরে বা ব্লগের পাতায় চলে আসে। অনেকে সমাজের সচেতনতা গড়ে তুলে। আমাদের ব্লগে এমন অনেক জ্ঞানী গুণী ব্লগার আছে। তারা সমসাময়িক রাজনীতি, অর্থনীতি এসব নিয়ে ভালো লেখা লিখে থাকেন। আমি তাদের অভিবাদন জানাই।তারা অনেকেই নিজস্ব মত প্রদান করেন৷ ঘটনা লিখেন। তাই বলে আমরা তদের কে আক্রমন করে কোন লেখা প্রকাশ করতে পারিনা। এটা আমার মতে নোংরামি ছাড়া কিছুই না।
৫) ট্রেনে সাধারণত আমি কোন খাবার খাইনা৷ বিশেষ করে ট্রেনের ওই সেন্ডুইচ কেক গুলো।যাই হোক আমি শুধু কফি পান করি৷ কারন ট্রেনের ওই একটা জিনিস আমাকে টানে৷ আসল কথা হল কফির সুঘ্রাণ আমার নাকে আসলেই আমার একটা ভালোলাগা কাজ করে৷।
সিগেরেটের শেষ টান নাকি প্রেমিকার চুম্বনের মতো । আমি বলবো কফির একেকটা চুমুক প্রেমিকার
গালে ঠোঁটে এক হাজার চুম্বন করার মতো উত্তম।
কালকে অবশ্য আমি ট্রেনের সেই সকালের নাস্তা খেয়েছি। যেটা তারা একটা প্যাকেটে দিয়ে থাকে। বার্গার সেন্ডুইচ বলা যায়।
৬) আগে জানতাম ব্লগ নাকি ফ্রি প্লাটফর্ম, এখানে মানুষ নিজের মতামত, নিজের বিশ্বাস, নিজের অধিকার সম্পর্কে লিখতে পারে। আর এখন দেখি কেউ একজন তার ধারনা সম্পর্কে লিখলে, কিছু বিপরীত মতাদর্শের লোকেরা একসাথে জোট বেধে তাকে হামলা করে।
একসাথে মিলে তার বিরুদ্ধে লাগে। আর কিছু ব্লগার মানুষকে পশুর সাথে তুলনা করে। গালি দেয়।
অনেক ব্লগার দেখেছি ব্লগারদের নাম তুলে শিরোনাম দিয়ে লেখা লিখে, আর কাউকে কাউকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলে। নানান ধরনের রায় দিয়ে লেখা আবিস্কার করে৷ মনে হয় সে নিজেই সুপ্রিম কোর্ট। বা বড় কোন ফকিহ, ফিকহ শাস্ত্রের পণ্ডিত তাই তিনি ফতুয়া জারি করছেন৷ মানুষের নামে তারা টাইটেল লাগিয়ে দিতে চান৷ কলম দিয়ে যেনো বুকে আক্রমণ করতে চান তারা। এসব লোকেরা কি করে ব্লগে জায়গা পায়? আমার প্রশ্ন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:৫৪