somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে তালেবান নেই, জঙ্গিও নেই

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ২৮শে অগাস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, “বাংলাদেশে তালেবান নেই, জঙ্গিও নেই। আছে কিছু অরাজকতা সৃষ্টিকারী বাহিনী। এছাড়া কিছু সন্ত্রাসী বাহিনী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে আত্মপ্রকাশ করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে।শনিবার দুপুরে সাভারের আশুলিয়ার বাইশমাইল এলাকায় একশত আলী সুপার মার্কেটের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।বাংলাদেশে অনেক ছোট ছোট সন্ত্রাসী দল রয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কিন্তু তাদের অরাজকতা সৃষ্টি করার সক্ষমতা নেই। তালেবানরা বিভিন্ন বড় শক্তির হাত ধরেই আফগানিস্তানের ক্ষমতায় এসেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ শান্তির দেশ। যেহেতু বাংলাদেশ থেকে কাবুল অনেক দূরে, তাই এর কোনো প্রভাব আমাদের দেশে নেই”। অথচ আজকে সকালেও টিভির খবর এ দেখলাম , রেপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান -১৪ ময়মন্সিংহর খাগাডহর থেকে আর্মস সহ চার্ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেসে ।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে, কোন কোন মুসলিম দেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে পবিত্র ইসলামের মুখোশ পরে মানুষে মানুষে হানাহানি চলছে, তখন নিমজ্জিত নৌযানের যাত্রীদের মত আন্তরীকভাবে আল­াহর নিকট কামনা করি, তিনি যেন আমাদের বাংলাদেশকে এসব থেকে নিরাপদ রাখেন। কিন্তু বর্তমানে আফগানিস্তান পরিস্থিতি কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যে হাওয়া বইছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন না হয়ে পারি না।
সত্যি কথা বলতে কি, তিরিশ বছরেও বাংলাদেশ একাত্তুরে রণাঙ্গণে পরাজিত হানাদার পাকিস্তানীদের প্রেতাত্মামুক্ত হতে পারেনি। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় সামরিক শাসক ও আদর্শহীন রাজনীতিকদের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল ও পরবর্তীতে তা পাকা-পোক্ত করার মহড়ায় ইসলামের মুখোশধারী এসব যুদ্ধাপরাধী প্রেতাত্মাকে বাহন হিসেবে গ্রহণ করা হয়। দেশ ও জাতির জন্য সর্বনাশী এই মহড়া বিগত নির্বাচনেও জাতি প্রত্যক্ষ করেছে। তাতে করে পর্যায়ক্রমে এসব প্রেতাত্মা স্বধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার শেয়ার বাগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। এখন তারা বাংলাদেশকে একটা ক্ষুদে পাকিস্তানে পরিণত করার স্বপ্ন দেখছে। জামাতের সাবেক আমীর ও বিগত সরকারের কৃষিমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী টংগীতে তৎকালীন তামিরুল মিল­াত মাদ্রাসায় আয়োজিত এক কর্মী সমাবেশে বলেই ফেলেছেন,‘ মন্ত্রী সভায় দু‘টো আসন নিয়ে ইসলামী বিপ্লব করা সম্ভব নয়।’ তাদের ইসলামী বিপ্লব মানে একাত্তুর পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়া কিংবা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় তালেবানী স্টাইল প্রবর্তন করা।
সমাজবিজ্ঞানী কিংবা অর্থনীতিবিদ না হয়েও একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বলা যায়, বর্তমানে কোন কোন মুসলিম দেশে ইসলামের নামে যে ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চলছে, বাংলাদেশ এসবের ভার কিছুতেই বইতে পারবে না। কারণ ইতিমধ্যে বাংলাদেশ নামের নৌকোটি আর পাঁচটা অনুন্নত দেশের মত দারিদ্র্য, বেকারত্ব প্রভৃতি সমস্যা ছাড়াও ক্রমবর্ধমান অস্বাভাবিক জনসংখ্যা ও নানামুখী সন্ত্রাসের ভারে হাবুডুবু খাচ্ছে।

বর্তমান যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তানের সাথেই আমাদের বাংলাদেশের তুলনা করা যাক। বাইরে থেকে আমরা আফগানিস্তানকে যতটা গরীব মনে করি না কেন বাস্তবে কিন্তু তা নয়। শান্তিপূর্ণ সময় আফগানিস্তানের অবস্থা কোন দিক থেকেই আমাদের চেয়ে খরাপ ছিল না। ৬.৪৭ লাখ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট আফগানিস্তানের লোকসংখ্যা মাত্র ৩.৮০কোটি। দেশটির খনিজ সম্পদের মধ্যে রয়েছে, গ্যাস, তেল, তামা, কয়লা, দস্তা ও লোহা। প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের পরিমাণ ১ শ‘ বিলিয়ন ঘন মিটার। আগে সোভিয়েত মধ্য এশিয়ার প্রজাতন্ত্রগুলোতে গ্যাস রপ্তানি করা হতো। রপ্তানি আয়ের শতকরা ৪০ ভাগ আসতো গ্যাস থেকে। হাজিকাকে প্রাপ্ত উন্নতমানের লোহার আকরিকের পরিমাণ ১৭০ কোটি মেট্রিক টন। কাবুলে নির্মিত তামার কারখানা বিশ্বের দুই শতাংশ তামা উৎপাদনের ক্ষমতা সম্পন্ন । শিল্প কারখানার মধ্যে রয়েছে , বস্ত্র, সাবান, সিমেন্ট ও আসবাবপত্রের কারখানা। বিগত ২২/২৩ বছরের গৃহযুদ্ধ ও সন্ত্রাসের ফলে এরূপ সম্ভাবনাময় দেশটির জনসাধারণের বর্তমান অর্থনৈতিক করূন অবস্থা প্রতি দিনই আমরা নানা গণমাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি। ইতিমধ্যে দেশটির প্রায় এক কোটি লোককে নিজেদের বাস্তুভিটা ছেড়ে পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশের সীমান্তে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়েছে। সেসব শিবিরে তারা মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
অপর দিকে ১.৪৪ লাখ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট বাংলাদেশের জনসংখ্যা হচ্ছে ১৬কোটি। অর্থাৎ আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের ৪ ভাগের ১ ভাগ। কিন্তু জনসংখ্যার দিক থেকে আফগানিস্তান বাংলাদেশের ৪ ভাগের ১ ভাগ। খনিজ সম্পদের ক্ষেত্রেও আফগানিস্তানের সাথে বাংলাদেশের তুলনা হয় না । কারণ গ্যাসসহ তাদের ৬টি খনিজ সম্পদ রয়েছে। আর আমাদের রয়েছে এপর্যন্ত শুধু মাত্র গ্যাস। তার পরিমাণও বিতর্কিত।
কিন্তু স¤প্রতি কোন কোন সংবাদপত্রে পরিবেশিত দ‘ুটো সংবাদে বাংলাদেশের যে কোন সচেতন নাগরিক উদ্বিগ্ন না হযে পারেন না। একটি সংবাদে পাকিস্তানের সর্বাধিক প্রচারিত উর্দু দৈনিক ‘জং-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিযে বলা হয়েছে,‘‘ শুধু বাংলাদেশী যোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত একটি বিশেষ ফোর্স তালেবানদের সাবেক সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা মোল­া ওমরের কান্দাহারের বাসভবন পাহারা দেয়। ওসামা বিন লাদেনের নির্দেশে তৎকালীন আফগান তালেবান সেনাদের সরিয়ে বাংলাদেশীদের একাজে নিয়োগ করা হয়। পাকিস্তানী পত্রিকাটি পরিহাসের সূরে বলেছে, এই যোদ্ধারা এমন একটি দেশ থেকে এসেছে, যে দেশটি একদিন ইসলামিক প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল।”
বার্তা সংস্থা এপি পরিবেশিত অপর এক সংবাদে বলা হয়েছে,‘‘ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে গত ২০ নবেম্বর '০১ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে ৮ জন বাংলাদেশীসহ ১২ ব্যক্তি নিহত হযেছে। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের শীতকালীন রাজধানী জম্মুর ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে রামগড় সেক্টরে রাতে এই ঘটনা ঘটে। জম্মুর পুলিশ কন্ট্রোল রোম জানিয়েছে, প্রথমবার গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিহত আটজনকেই বাংলাদেশী বলে শনাক্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয় বার গুলিবর্ষণের ঘটনায় নিহত চারজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। ভারতীয় কতৃপক্ষ নিহত এই বারজনকেই ইসলামী জঙ্গী বলে মনে করছে।”
বস্তুত বহু দিন থেকেই বাংলাদেশের একটি বিশেষ শ্রেণী আফগানিস্তানে তালেবান এবং কাশ্মীরে ভারত বিরোধী জঙ্গীদের পক্ষে যুদ্ধ করছে। শুধু তাই নয় খোদ বাংলাদেশেও তাদের একটা উলে­খযোগ্য অংশ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এটা একটা ওপেন সিক্রেট ব্যাপার।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এসব বাংলাদেশী কিভাবে এবং কেন দেশত্যাগ করে আফগানিস্তান ও কাশ্মীরে গিয়ে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করছে। এব্যাপারে সরকার নীরব থাকলেও দেশের গোয়েন্দা বিভাগের এসব তথ্য অজানা থাকার কথা নয়। তবে সাধারণভাবে আমরা যতটুকু জানি, বর্তমানে যারা আফগানিস্তানে তালেবান হয়ে যুদ্ধ করছে কিংবা জঙ্গী সেজে কাশ্মীর সীমান্তে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছে, তাদের সবাই এই উদ্দেশ্য নিয়ে দেশ ত্যাগ করেনি। তাদের প্রায় সবাই পাকিস্তানে গেছে লেখাপড়া করতে। সেখানে গিয়ে তালেবান কিংবা কাশ্মিরী জঙ্গীতে পরিণত হয়েছে।
ব্যাপারটা একটু স্পষ্ট করে বলা দরকার। সেই বৃটিশ আমল থেকেই আমাদের দেশের আলেমরা উচ্চ শিক্ষার জন্য বর্তমান ভারতের ইউপি প্রদেশের দারুল উলুম দেওবন্দে যেতেন। দেওবন্দের শীর্ষ স্থানীয় আলেমরা প্রায় সবাই পাকিস্তান আন্দোলন সমর্থন করেননি। ফলে ভারত বিভাগের পর পাকিস্তান থেকে কেউ উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে দেওবন্দে যেতে চাইলে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হতো। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারতের সাথে যে সাংস্কৃতিক চুক্তি হয়, তাতে ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত না থাকায় এই প্রতিক‚ল অব¯্থার অবসান হয়নি। এদিকে পাকিস্তানে যাওয়ার ব্যাপারে কোন বাধাবিঘœ নেই। কিন্তু পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশে উন্নতমানের কওমী মাদ্রাসা থাকা সত্বেও পঁচাত্তুরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা দলে দলে পাকিস্তানের বিভিন্ন কওমী মাদ্রাসায় পড়তে যাওয়া শুরু করে।
আফগানিস্তানে নজিবুল­াহ সরকারকে হটিয়ে মুজাহিদরা (বর্তমান উত্তরাঞ্চলীয় জোট) সরকার গঠনের পর এক পর্যাযে কোন কোন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাকিস্তানের সাথে তাদের মতানৈক্য দেখা দেয়। তা‘ছাড়া মুজাহিদরা ছিল ইরাণ, সিরিয়া প্রভৃতি রাষ্ট্রের অনুগত। মুজাহিদ সরকারের এই ভূমিকা পাকিস্তান, সৌদি আরব, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও পসন্দ করেনি। তখন সিদ্ধান্ত হয়, মুজাহিদীন বা বোরহানুদ্দিন রাব্বানীর সরকার উৎখাত করে একটা অনুগত সরকার বসাতে হবে।
পাকিস্তানে ৩৬ শ‘ কওমী মাদ্রাসা রয়েছে ( সেখানে বাংলাদেশের মত সরকারী কোন মাদ্রাসা নেই ) । এসব মাদ্রাসায় হাজার হাজার আফগান তালেবান বা ছাত্র রয়েছে। সে সময় পাকিস্তানের হাতের কাছে ছিল এসব আফগান তালেবান বা মাদ্রাসা ছাত্র। সুতরাং মুজাহিদ সরকারের বিরুদ্ধে জেহাদের প্রতি তালেবানদের উদ্বুদ্ধ করণ শুরু হলো। একই সাথে চললো সামরিক প্রশিক্ষণ। অবশ্য নজিবুল­াহ সরকারের বিরুদ্ধে মুজাহিদ বাহিনী শীর্ষক ব্যানারের নিচে আফগানদের জড়ো করার সময় বলা হয়েছিল এটা জেহাদ বা ধর্ম যুদ্ধ। এবার মুজাহিদদের বিরুদ্ধে তালেবানদের উদ্বুদ্ধ করার সময়ও একই জেহাদের শ্লোগান তোলা হলো। এসব হচ্ছে পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার পাকিস্তানী কারিশমা। এধরনের কারিশমার মাধ্যমে পাকিস্তানী সামরিক ও বেসামরিক শাসক গোষ্ঠি নিরীহ আফগানদের সর্বস্বান্ত করেছে। কিন্তু এজন্য পাকিস্তানকেও চরম খেসারত দিতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরো দিতে হবে। আফগান তালেবানদের প্রথমে মুজাহিদ, পরে তালেবান বানাতে গিয়ে পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠি পাকিস্তানের প্রতিটি কওমী মাদ্রাসাকে একেকটা সামরিক শিবিরে পরিণত করেছে। অতীতে বেনজীর ভূট্টো, নওয়াজ শরীফ কিংবা পাকিস্তানের অপর কোন লৌহমানবই কওমী মাদ্রাসাগুলোকে ঘাটাতে সাহস করেনি। আর একেই বলে, নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করা ।

১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে অবাধে বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসাগুলোর হাজার হাজার শিক্ষার্থী পাকিস্তানের কওমী মাদ্রাগুলোতে গিয়ে ভর্র্তি হতে থাকে। আশির দশকের শুরু থেকে তারাও আফগান ও পাকিস্তানী ছাত্রদের সাথে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। তাদের অনেকে জেহাদী জজবায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মুজাহিদ সেজে নজিবুল­াহ সরকারের বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে। অনেকে দেশে ফিরে বিভিন্ন কওমী মাদ্রাসায় শিক্ষকতার পাশাপাশি গোপনে ছাত্রদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করে। পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে। তারা একাত্তরে পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়ার উদ্দেশ্যে এসব তথাকথিত বাংগালী মুজাহিদকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করে। সে সময় পত্রপত্রিকায় এসম্পর্কে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কিন্তু তৎকালীন সরকারগুলো অজ্ঞাত কারণে এব্যাপারে সক্রিয় কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
নব্বুইয়ের দশকের শুরু থেকে যখন পাকিস্তান ও অপর কয়েকটি রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় তালেবান বাহিনী গঠিত হয়ে আফগানিস্তানে মুজাহিদ সরকারের বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে তখনো বাংলাদেশীরা তাতে যোগদান করে। এসময় বাঙ্গালীদের একটি অংশ জায়শে মোহাম্মদ ও লশকরে তৈয়েবার অন্তর্ভুক্ত হয়ে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী তৎপরতায় অংশ গ্রহণ করে। অনেকে দেশে ফিরে এখানে তালেবান তৈরীতে নিয়োজিত হয়। অনেকে মনে করেন, বাংলাদেশে বর্তমানে আফগান ফেরততালেবানের সংখ্যা ১৫/১৬ হাজারের কম হবে না।
বিগত বিএনপি সরকারের শেষ দিকে বাংলাদেশে তালেবানদের সন্ত্রাসী তৎপরতা বেশ বেড়ে যায়। পল্টনের জনসভা ও প্রকাশ্য রাজপথে তারা শ্লোগান দেয়া শুরু করে, ‘আমরা হবো তালেবান বাংলা হবে আফগান। আগামিতে বাংলাদেশে তালেবানদের পার্লামেন্ট হবে।’ দেশের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ ও মিটিং-মিছিলে তারা এধরনের আপত্তিকর বকতৃতা-বিবৃতি দিতে থাকে।
বিগত সরকারের শেষদিকে সংঘটিত যশোরে উদীচী সম্মেলনে বোমা হামলা, কোটালী পাড়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাস্থলের অদূরে শক্তিশালী বোমা পুঁতে রাখা, ঢাকার পল্টনে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা, ফেনীর অদূরে রেল লাইনের ফিশ প্লেট খুলে ফেলা, রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলা, গোপালগঞ্জের মকসুদপুরে গীর্জায় বোমা হামলা, বাগেরহাটে হাটে শেখ হেলালের নির্বাচনী জনসভায় বোমা হামলা প্রভৃতি তালেবান কট্টর পন্থীদের নাশকতা কর্মকান্ড বলে সে সময়ের বিভিন্ন সংবাদপত্র প্রতিবেদনে উলে­খ করা হয়েছে।
এখন হয়তো কৌশলগত কারণে এসব কট্টর পন্থী ঘাপটি মেরে আছে। অপর দিকে আফগানিস্তান কিংবা কাশ্মীর সীমান্তে যেসব বাংলাদেশী তালেবান রয়েছে, তারা দেশে ফেরার পর বাংলাদেশে পবিত্র ইসলামের নামে সন্ত্রাসী তৎপরতায় নতুন মাত্রা সংযোযিত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। কারণ উপরে উলে­খিত সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী ইতিমধ্যে তারা উসামা বিন লাদেনের অনুসারীদের গভীর আস্থা অর্জন করেছে, তার আলকায়েদা সংগঠনের নেট ওয়ার্কের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। বিষয়টি রাজনৈতিক ক‚টকৌশলের বশবর্তী হয়ে হালকাভাবে দেখার এতটুকু অবকাশ নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×