somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবাস। বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাটি....।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মুক্তিযুদ্ধকে ‘সিভিল ওয়ার’ বলে মন্তব্য দ্য টাইমসের নতি স্বীকার
সৈয়দ আনাস পাশা, লন্ডন করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম




দ্যা সানডে টাইমস-এ প্রকাশিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সেই ঐতিহাসিক ছবি।

লন্ডন: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে আখ্যায়িত করার পর ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে শেষ পরযন্ত তা সংশোধন করে স্বাধীনতা যুদ্ধ হিসেবে সংশোধন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক ‘দ্যা টাইমস’।

উল্লেখ্য, টাইমস এর পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ‘সানডে টাইমস’ পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্রের স্পেকট্রাম নামক বিভাগে প্রকাশিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী ছবির ক্যাপশন বর্ণণা করতে গিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে গৃহযুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত একজন স্বামী কলেরা আক্রান্ত তার স্ত্রীকে কোলে নিয়ে তিন মাইল পথ পায়ে হেঁটে হাসপাতাল যাচ্চেন- ‘ক্যাজিওলটিজ অব ওয়ার’ শিরোনামে প্রকাশিত এই ছবিটির ক্যাপশনে মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতাযুদ্ধের স্থলে ‘গৃহযুদ্ধ’ উল্লেখ করা হলে ব্রিটেনে বসবাসরত তরুণ ব্রিটিশ বাঙালিদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

ফটোগ্রাফার ডন ম্যাককুলিনের তোলা এই আলোড়ন সৃষ্টিকারী ছবিটি ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দ্যা টাইমস এ প্রকাশিত হয়েছিল। টাইমস এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ৫ ফেব্রুয়ারি দ্যা সানডে টাইমস এ প্রকাশিত ক্রোড়পত্রের ম্যাগাজিনে অন্য আরও কিছু ঐতিহাসিক ছবির সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের এই ছবিটিও প্রকাশ করা হয়।

ক্রোড়পত্রের এই বিশেষ ম্যাগাজিনটি পাঠকদের মধ্যে ‘পেছন ফিরে দেখার’ ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করলেও বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জণ মুক্তিযুদ্ধকে গৃহযুদ্ধ আখ্যায়িত করায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে তরুণ ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের মাঝে।

ব্রিটেনে বসবাসরত তরুণ ব্লগার নিঝুম মজুমদার ফেইস বুকের মাধ্যমে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের এই ইতিহাস বিকৃতির প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ৫ ফেব্রুয়ারিই ফেইস বুকে তিনি লিখেন, ‘বৃটেনের প্রভাবশালী দৈনিক ‘দি টাইমস’ আজকে তাদের ৫০ বছর পূর্তিতে বিশেষ কিছু ক্রোড়পত্র বের করে, যেগুলোর মধ্যে একটি ম্যাগাজিন ছিলো। এই ম্যাগাজিনের ৫০ নাম্বার পাতায় "Spectrum" নামক একটি সেকশানে ওরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একটি হৃদয় বিদারক ছবি প্রকাশ করে "Casualites of War" শিরোনামে। ছবিটি তৎকালীন সময়ে ডন ম্যাককুলিন নামে এক ফটোগ্রাফার তোলেন। সব কিছুই ঠিক হতো যদি না টাইমস আমাদের ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকে ‘সিভিল ওয়ার’ হিসেবে ট্যাগ না করত। এই পত্রিকা পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ পড়ে এবং এই ছবির ক্যাপশনে যখন সিভিল ওয়ার শব্দ দু’টি থাকবে তখন সারা বিশ্বের মানুষের কাছে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ মিথ্যাভাবে প্রকাশিত হবে। আমি ফেসবুকে আমার সকল বন্ধুদের বিনীত অনুরোধ করছি যে, তারা যেন দয়া করে এই ব্যাপারটির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে টাইমসকে একটি ইমেইল করেন। আপনারা দয়া করে টাইমসকে ই-মেইলে বলবেন, এই এতবড় মিথ্যা তথ্যের জন্য তাদের ক্ষমা চাইতে হবে। ইমেইল এড্রেস হচ্ছে[email protected] এবং [email protected] । আমরা যদি সাথে সাথে অন্যায়ের প্রতিবাদ না করি, তাহলে এই মিথ্যাকে সবাই ভ্যালিড ও গ্রান্টেড মনে করে নেবে। প্লিজ আপনারা দুইটা মিনিট ব্যয় করে টাইমসকে আপনাদের অভিযোগের কথা জানান’।

ব্লগার নিঝুম মজুমদারের এই আবেদনে সারা দিয়ে অনেকেই টাইমস এর কাছে তাদের প্রতিবাদ পাঠাতে থাকেন। নিঝুম নিজেও একটি কড়া প্রতিবাদ পাঠান দ্যা টাইমস-এ। শেষ পরযন্ত টাইমস কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল স্বীকার করে। ১০ ফেব্রুয়ারি নিঝুমের প্রতিবাদ পত্রের উত্তর দেন টাইমস এর লেটার এডিটর পেরিন জানমোহামেদ। নিঝুমকে তিনি লিখেন, ‘আমাদের স্পেকট্রাম ম্যাগাজিনের ছবি ক্যাপশনের বিষয়ে আপনার পাঠানো নোটের জন্যে ধন্যবাদ। আসলে গৃহযুদ্ধের স্থলে স্বাধীনতা যুদ্ধ শব্দটি ব্যবহারই ছিল উপযুক্ত। এই যুদ্ধের ফলেই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম হয়েছিল’।

বিষয়টি নজরে আনার জন্যে নিঝুমকে ধন্যবাদ জানিয়ে টাইমস কর্তৃপক্ষ বলেন, ‘আমরা এই নিশ্চয়তা দিচ্ছি যে, সাচি গ্যালারিতে অনুষ্ঠিতব্য টাইমস এর এক্সিবিশনেই এটি আমরা সংশোধন করে নেবো’।

এছাড়া নিঝুমের আহবানে সাড়া দিয়ে আরও যারা এ বিষয়ে প্রতিবাদ পাঠিয়েছিলেন তাদেরও অনেকে টাইমস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একই নিশ্চয়তা পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×