নারীবাদের কিছু কিছু বিষয় ইসলামের বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। তাই কোন মুসলমানের উচিত হবে না নারীবাদকে সমর্থন করা। সহজ ভাষায় নারীবাদের লক্ষ্য হল নারী এবং পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা এবং পুরুষতন্ত্রের অবসায়ন। কিন্তু ইসলামের বিধানে সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব এবং পরিবারের নেতৃত্ব পুরুষের হাতে দেয়া হয়েছে। ইসলাম পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বের ক্ষেত্রে পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার কথা বলেছে। কোন নারী নবী বা রসূলের নাম কোরআনে নেই। ইসলামের কোন খলিফার পদ কোন নারী কখনও গ্রহণ করেনি। রসূল (সা) কোন নারীকে বিচারক বা গভর্নর পদে নিয়োগ দেননি কখনও।
সূরা নিসার ৩৪ নং আয়াতে আছেঃ
Men are the protectors and maintainers of women, because Allah has given the one more (strength) than the other, and because they support them from their means. Therefore the righteous women are devoutly obedient, and guard in (the husband's) absence what Allah would have them guard. As to those women on whose part you fear disloyalty and ill-conduct, admonish them (first), (Next), refuse to share their beds, (And last) beat them (lightly); but if they return to obedience, seek not against them Means (of annoyance): For Allah is Most High, great (above you all).
অর্থ –
পুরুষগণ নারীদের রক্ষক এবং প্রতিপালক এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের এককে অন্যের উপর মর্যাদা প্রদান করেছেন, আর এজন্য যে, পুরুষেরা স্বীয় ধন-সম্পদ হতে ব্যয় করে। ফলে পুণ্যবান স্ত্রীরা অনুগত থাকে এবং পুরুষের অনুপস্থিতিতে তারা তা (অর্থাৎ তাদের সতীত্ব ও স্বামীর সম্পদ) সংরক্ষণ করে যা আল্লাহ সংরক্ষণ করতে আদেশ দিয়েছেন। যদি তাদের মধ্যে অবাধ্যতার সম্ভাবনা দেখতে পাও, তাদেরকে সদুপদেশ দাও এবং তাদের সাথে শয্যা বন্ধ কর এবং তাদেরকে (সঙ্গতভাবে) প্রহার কর (হাল্কা), অতঃপর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তাহলে তাদের উপর নির্যাতনের বাহানা খোঁজ করো না, নিশ্চয় আল্লাহ সর্বোচ্চ, সর্বশ্রেষ্ঠ।
উপরের আয়াত থেকে দেখা যাচ্ছে যে পরিবারের কর্তা হল পুরুষ। আয় রোজগারের বাধ্যবাধকতা পুরুষের উপর। নারী মুলত গৃহস্থালির কাজ এবং সন্তান পালনের কাজ করবে। তবে স্বামীর অনুমতি সাপেক্ষে সে বাইরে কাজ করতেও পারে। পুরুষকেও গৃহস্থালির কাজে এবং সন্তান প্রতিপালনে উৎসাহিত করা হয়েছে। তবে সেটা পুরুষের মূল কাজ না।
নারী নেতৃত্ব বিরোধী সহি হাদিসও আছে;
by the hadith of Abu Bakrah who said that when the Prophet (peace and blessings of Allah be upon him) heard that the Persians had appointed the daughter of Chosroes as their queen, he said, “No people who appoint a woman as their leader will ever prosper.” (Reported by al-Bukhari, 13/53).
পারস্যে একজন নারীকে শাসক হিসাবে রাণী বানানো হয়েছিল। নবীজি (সা) বলেছেন যে যারা নারীকে তাদের নেতা বানায় তারা কখনও সমৃদ্ধি অর্জন করবে না।
ইসলামের বিধানে নারী এবং পুরুষের সমতা আছে কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীর উপরে পুরুষকে রাখা হয়েছে। সূরা বাকারা আয়াত ২২৮ এর শেষের অংশ;
"আর নারীদের রয়েছে বিধি মোতাবেক অধিকার। যেমন আছে তাদের উপর (পুরুষদের) অধিকার। আর পুরুষদের রয়েছে তাদের উপর মর্যাদা এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। "
সূরা বাকারা ২৮২ নং আয়াতের অংশ বিশেষ;
'যদি কর্জ-গ্রহীতা স্বল্প-বুদ্ধি অথবা দুর্বল কিংবা লেখার বিষয়বস্তু বলতে অক্ষম হয়, তবে তার অভিভাবক যেন লেখার বিষয়বস্তু ন্যায্যভাবে বলে দেয় এবং তোমাদের আপন পুরুষ লোকের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, যদি দু’জন পুরুষ না পাওয়া যায়, তাহলে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রী লোক, যাদের সাক্ষ্য সম্পর্কে তোমরা রাজী আছ, এটা এজন্য যে, যদি একজন ভুলে যায় (বা ভুল করে) তবে অন্যজন স্মরণ করিয়ে দেবে এবং যখন সাক্ষীগণকে ডাকা হবে, তখন যেন (সাক্ষ্য দিতে) অস্বীকার না করে। '
এই আয়াতে বলা হয়েছে যে অনেক ক্ষেত্রে একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান হল দুই জন নারীর সাক্ষ্য কারণ নারীরা ভুলে যেতে পারে বা ভুল করতে পারে।
নারীবাদের অনেক রকম ফের আছে। এদের অনেকে মনে করে পুরুষ যে পোশাক পড়তে পারে নারীও সেটা পড়তে পারে। কিন্তু এগুলি ইসলামের বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।
প্রকৃতপক্ষে ইসলাম নারীর মর্যাদা এবং অধিকার নিশ্চিত করেছে কিন্তু কিছু কাজ বা দায়িত্ব শুধু পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। এগুলি ছাড়া ইসলামে নারী এবং পুরুষের অধিকার সমান। আত্মিক উৎকর্ষতার ক্ষেত্রে নারী পুরুষের চেয়েও পরহেজগার হতে পারে। নারী এবং পুরুষের শারীরিক এবং মানসিক গঠনে পার্থক্য আছে। এই কারণেই আল্লাহ হেকমতের সাথে এই ধরণের নির্দেশনা দিয়েছেন। বলা হয়েছে মায়ের পায়ের নীচেই সন্তানের বেহেশত। সন্তানের উপরে মায়ের অধিকার বাবার চেয়ে ৩ গুণ বেশী। পৃথিবীতে নারী পুরুষ একে অন্যের পরিপূরক। কোরআনে একে অন্যের পোশাক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। নারী বিদ্বেষ ভালো না আবার পুরুষ বিদ্বেষও ভালো না। এটা ইসলামের শিক্ষা না। নারী, পুরুষ মিলেই সমাজকে সুন্দর করতে হবে যার যার সঠিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে।
ছবি - বেসিকস
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৮:৫৬