somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষা এক অমুল্য সম্পদ

২১ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :









আমার বাবার দেওয়া তিনটে উপদেশ আমাকে আজ এখানে পৌঁছে দিয়েছে- চীনের প্রেসিডেন্ট

ছোটবেলায় আমি খুব স্বার্থপর ছিলাম। সবকিছুতেই নিজের সুবিধে আর লাভটা বুঝে নেবার চেষ্টা করতাম। আমার এই দোষের জন্য আস্তে আস্তে আমার বন্ধুর সংখ্যা কমতে শুরু করল। শেষে অবস্থা এমন হলো যে আমার আর কোনো বন্ধুই অবশিষ্ট রইল না।

কিন্তু, সেই অপরিনত বয়সে আমি এর জন্য নিজেকে দায়ী না করে সিদ্ধান্ত নিলাম আমার বন্ধুরা আসলে হিংসুটে। ওরা আমার ভাল দেখতে পারে না। আমার বাবা সবই লক্ষ করতেন, মুখে কিছু না বললেও।

একদিন রাতে বাড়ি ফিরে দেখি, বাবা আমার জন্য খাবার টেবিলে অপেক্ষা করছেন। টেবিলে রাখা আছে রান্না করা ন্যুডলের দুটি ডিশ। একটা ডিশে সেদ্ধ ন্যুডলের ওপর রাখা একটি খোসা ছাড়ানো সেদ্ধ ডিম। অন্য ডিশটিতে শুধু ন্যুডলসের যে কোনো একটি ডিশ বেছে নিতে বললেন বাবা।

স্বাভাবিক ভাবেই আমি ডিম সমেত ডিশটাই উঠিয়ে নিলাম। সেই সব দিনে চীনে ডিম ছিল এক দুস্প্রাপ্য জিনিস। উৎসবের দিন ছাড়া কারো বাড়িতে ডিম খাবার কথা তখন ভাবা যেত না। খাওয়া শুরু করবার পর দেখা গেল বাবার ডিশে ন্যুডলসের তলায় আসলে লুকিয়ে রাখা আছে দুটো ডিম।

আমার এত দুঃখ লাগছিল তখন। কেন যে তাড়াহুড়ো করে বাছতে গেলাম। বাবা আমাকে দেখছিলেন। খাবার পর মৃদু হেসে বললেন, “মনে রেখো, তোমার চোখ যা দেখে, সেটা সব সময় সত্যি নাও হতে পারে। শুধু চোখে দেখে যদি মানুষ বা কোনো পরিস্থিতিকে বিচার করে সিদ্ধান্ত নাও, ঠকে যাবার সম্ভবনা থাকবে।”

পর দিন আমার বাবা আবার খাবার টেবিলে ন্যুডলস ভর্তি দুটো ডিশ রেখে আমাকে খেতে ডাকলেন। আগের দিনের মত এবারেও একটাতে ডিম আছে, আর একটাতে নেই। আমাকে যে কোনো একটি ডিশ বেছে নিতে বলা হোলো। আমি আগের অভিজ্ঞতা থেকে জেনেছি, চোখ যা দেখে তা সত্যি নাও হতে পারে। আমি ডিম ছাড়া ডিশটিই বেছে নিলাম। কিন্তু খেতে গিয়ে দেখলাম, ভেতরে কোনো ডিমই নেই। বাবা আমার দিকে তাকিয়ে আবার হাসলেন।

“অভিজ্ঞতা সব সময় সঠিক পথ দেখায় না। জীবন বড় বিচিত্র। জীবনে চলার পথে বহুবার আমাদের মরীচিকার সামনে পরতে হয়। এর থেকে উত্তরন অসম্ভব। জীবন যেটা তোমাকে দিয়েছে, সেটা মেনে নিলে কষ্ট কম পাবে। তোমার অভিজ্ঞতা এবং বুদ্ধিমত্তা তুমি অবশ্যই কাজে লাগাবে, কিন্তু শেষ কথা জীবনই বলবে।”

তৃতীয় দিনে আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। আগের দিনের মতই এবারেও একটাতে ডিম আছে, আর একটাতে নেই। তবে একটা ব্যাপার এবার একটু অন্য রকম হলো। এবার আমি বাবাকে বললাম, আগে তুমি নাও। তার পর আমি। কারন তুমি বাড়ির সবার বড়, এই সংসার তোমার রোজগারে চলে। তোমার অধিকার সবার আগে।

শুনে বাবার মুখে উজ্জ্বল হাসি ফুটে উঠল, মুখে কিছু বললেন না যদিও। খাওয়া শুরু করবার পর আমি দেখলাম ন্যুডলসে র নীচে আমার ডিশে দুটো ডিম। খাবার পর বাবা আমাকে কাছে ডাকলেন। সস্নেহে আমার হাত ধরে বললেন, “মনে রেখো, কৃতজ্ঞতা এবং ঋণ স্বীকার করা মানুষের শ্রেষ্ঠ ধর্ম। তুমি জীবনে যদি অন্যের জন্য ভাব, অন্যকে দাও, জীবনও তোমার কথা ভাববে, তোমাকে আরো বহুগুণে ফিরিয়ে দেবে।

বাবার এই তিনটে উপদেশ আমি আজীবন মনে রেখেছি, এবং মেনে চলেছি। কি আশ্চর্য , সত্যি জীবন আমাকে বহু গুণ ফিরিয়ে দিয়েছে। আমি আজ যেখানে আছি, সেটা জীবনের দান ছাড়া আর কি?

সূত্র : দেশ-বিদেশ অনলাইন

শি চিন পিং চীনের চলমান রাষ্ট্রপ্রধান । শি টুং শুন তার বাবা পার্টির সদস্য এবং আঞ্চলিক প্রধান ছিলেন । অবসরে বাবা হুনানে গ্রামের বাড়ি আঁকড়ে রেখেছেন । ঘর বাড়ির আধুনিকায়ন করতে দেননি এবং ছেলের রাজপ্রাসাদে কখনো আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি । একজন ডেডিকেটেড কম্যুনিস্ট তিনি । প্রতি বসন্ত উৎসবে শি পরিবার বাবার সাথে বসন্ত উদযাপন করতে হুনান গ্রামের বাড়ি যান । সন্ধ্যায় পুরো পরিবার একত্রে ডামপ্লিং বা চিয়াওজে বানান এবং সাদা মদের সাথে খান । শি চিন পিঙের উপর তার বাবার আশীর্বাদ রয়েছে ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৮:১২
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খাম্বার পরবর্তী অধ‍্যায় ,নাকি ১০% বদল হবে‼️অমি খোয়াব ভবনে ঘুমিয়ে , হাওয়া ভবনের আতঙ্কে আতঙ্কিত॥

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৮



খালেদা জিয়ার অসুস্থতার নাটক ছিল তারেক জিয়ার দেশে ফেরার রাজনৈতিক ট্রাম্পকার্ড। কথায় আছে,' দুষ্টু লোকের মিষ্টি ভাষা '। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দূর্নীতিবাজ ও মাফিয়া গডফাদার তারেক রহমানের দেশে ফেরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদার ১টি প্ল্যান ছিলো, মহা-ডাকাতের ১টি প্ল্যান আছে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:২৩



২০১৪ সালের ভোটের আগে খালাদা বলেছিলো যে, তার কাছে ১টা প্ল্যান আছে, যা ১ বছরের মাঝে বেকার সমস্যা ও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করে দিবে। তিনি প্ল্যানটি প্রকাশ করেননি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোর কথা তুই লিখে সত‍্যতা প্রমান কর।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪১



ব্লগ মনে হয় কারো কারো বাপ দাদার জমিদারি হয়ে গেছে। সব পোস্ট দালাল , রাজাকার, জঙ্গিদের অথবা লালবদরদের স্বপক্ষে হোতে হবে। সত‍্যের আগমনে মিথ্যা বিস্মৃতির অবসান হয় ।আদর্শের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা: শেখ হাসিনার শাসনকালের একটি কালো অধ্যায়

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৯

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা: শেখ হাসিনার শাসনকালের একটি কালো অধ্যায়

গুমের শিকার ব্যক্তিদের অতি ক্ষুদ্র কক্ষের ছবিটি বিবিসি ডটকম থেকে নেওয়া।

পরিচিতি

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামপন্থী রাজনীতির বয়ান এবং জামাতের গাজওয়াতুল হিন্দ-এর প্রস্তুতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২০


গোরা উপন্যাসে রবীন্দ্রনাথ নিজে ব্রাহ্ম হয়েও, ব্রাহ্ম সমাজের আদর্শের বিপরীতে "গোরা" নামে একটি চরিত্র তৈরি করেন। গোরা খুব কট্টরপন্থী হিন্দু যুবক। হিন্দু পরিচয়ে বড় হলেও, আসলে সে আইরিশ দম্পতির... ...বাকিটুকু পড়ুন

×