somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার করোনা দিনের ভাবনা।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





গত ২৬ শে মার্চ থেকে মূলত ঘরে বন্ধি, এখনো পর্যন্ত কোম্পানির সিধান্ত অনুযায়ী আগামী ১০ই এপ্রিল পর্যন্ত থাকতে হবে যদি বেঁচে থাকি, সময় কাটা‌নোর সম্বল হাতের একটি ফোন আর গত মেলা থেকে ক্রয়কৃত কিছু বই (যা প্রায় পড়া শেষ)।

সারাক্ষণ একটি চিন্তা ঘিরে থাকে, আর কতদিন এভাবে থমকে থাকবে পৃথিবী? তার উপর নিজের দেশের সব খবর নেতিবাচক টাইপের, প্রতিটি খবর বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোটানা অবস্থা, আমার বিশ্বাস সবারই আমার মত অবস্থা। কিন্তু এই রকম একটি সংকট মূহুর্তে এই রকম দোটানা বিষয় কেন সামনে আসছে?

আমি স্বাক্ষর শিক্ষিত মানুষ, বুদ্ধি জ্ঞান সবসময় হাঁটুর নিচে থাকে তবুও নিজের মত করে মোটা দাগে তিনটি বিষয় সম্মুখে এনেছি, কেউ একমত হতে পারেন, দ্বিমত থাকা স্বভাবিক।

লেখায় কিছুটা রাজনৈতিক ছোঁয়া আছে তাই গঠনমূলক আলোচনা করলে আমি প্রস্তুত আছি নিজের লেখার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে।

১) রাষ্ট্র পরিচালকদের চরম খামখেয়ালিপনা, প্রথম সমস্যা হচ্ছে এই রাষ্ট্রের টপ টু বটম ক্ষমতাধারীদের এক নায়ক চরিত্র, অদূরদর্শী পদক্ষেপ ও চরম মাত্রার ভুলভাল কথা।
এই ভাইরাস এখনো আমাদের সেইভাবে এ্যাটাক করেনি, হয়তো সম্ভবনা আছে, হয়তো খুবই নরমালি শেষ হয়েও যেতে পারে। কিন্তু বিশ্বের অনেক উন্নত রাষ্ট্রের বর্তমান নাকানি চুবানি অবস্থা আমাদের খুবই নরমালি শেষ হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি বিশ্বাসী হতে দিচ্ছে না তাই প্রতিনিয়ত চারিদিকে আওয়াজ উঠেছে, দাবি তুলছে এখনই পুরোপুরি প্রস্তুতি হতে চরম খারাপ সময়ের জন্য এই মুহুর্তে সরকারের উচিত ছিল একটি ওপেন কনফারেন্স কল করা যেখানে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যানরা সম্মিলিত হয়ে একটি স্যলুশনে আসবে, দিক নির্দেশনা থাকবে। কিন্তু সুপ্রীম ব্যক্তির এক নায়ক চরিত্রের কারণে এরকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা কম। ফলাফল গাড়ি, ট্রেন উন্মুক্ত রেখে দশ দিনের ছুটি! দরজা খুলে ঝড়ের পানি ঘরে না ঢোকার আহবান করলে যা হয় ঠিকই তাই হয়েছে, ছুটি শেষে এখন ফিরতি চরিত্র একই তখন গাড়ি খোলা ছিল, এখন বন্ধ তবে সামাজিক দুরত্বের যে উদ্দেশ্য দশ দিন ছুটি ছিল তা পুরোপুরি ব্যর্থ।
উদ্ভট কথা, মিথ্যা তথ্য দিয়ে এরা জাতিকে একটি চরম বিপদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, একজন দায়িত্বশীল কিভাবে বলতে পারে আমরা করোনার চাইতে শক্তিশালী!! মানুষ ভাইরাসের চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে? মানুষ পারে প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে যাতে আঘাত আসলে দ্রুত প্রতিঘাত দিয়ে তাকে দমিয়ে বা শেষ করা যায়। তিনি বলতে পারতেন, আমাদের প্রস্তুতি খুবই শক্তিশালী, বিশ্বের পরিস্থিতি আমরা নজর রাখছি সর্বদা আমরা সহজকে প্রতিরোধ করতে পারবো। আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী।
মিথ্যা তথ্য হতাশ করেছে জাতিকে, এই ভাইরাস চীনে থাকা অবস্থায় কিছু মানুষ দাবি তুললো, প্রস্তুতি নিন, তারা অন্য চিন্তায় মগ্ন, ইউরোপে আঘাত হানায় একটু চেতনা ফিরলো, বলল, যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে, যখন দোরগোড়ায় আসল কি রকম প্রস্তুতি দেখলাম আমরা? আইসোলেশন ওয়ার্ডে টয়লেট নেই, বেসিং ভাঙ্গা, ছাদের আস্তুর খুলে পড়ছে!! (খুলনায়) পিপিই সংকট, টেস্ট কিট দুই হাজার!! শুরু হল চারিদিকে খবর, চিকিৎসার পাচ্ছে না করোনা সন্দেহ রোগী, চিকিৎসাহীন মারা গেল করোনা সন্দেহ রোগী, এই যখন অবস্থা তখন বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্ন সামনে আসবেই।

২) নেতা হওয়ার প্রবনতা, নিজেকে জাহির করার প্রবল ইচ্ছা, প্রতিটি বাঙালী একক জন উচ্চ মানের রাজনীতিবিদ শুধু পকেটে অর্থ না থাকার কারণে অনেক নিজেকে জাহির করতে পারে না, আমি বাস্তব জীবন আর অনলাইনে বন্ধুদের বর্তমান অবস্থায় তাদের কাজকর্ম দেখে এটুকু উপলব্ধি করেছি পকেটে টাকা আর ভাল মানের একটি চাকরি হলেই নিজেকে যথেষ্ট জ্ঞানী ও সবজান্তা শমসের লেভেলে ভাবে (সবাই নয়, কিছু ব্যতিক্রম আছে) তারা এক হাজার টাকা দান করলে ছবি উঠাবে, জনসমাগম করে দান করবে যাতে নিজেকে নেতা নেতা মনে হয়। কিন্তু একবারও ভাবে না যে উদ্দেশ্য আজকের এই অবস্থা সেটা ব্যহত হচ্ছে কি না। এই রাষ্ট্র কেন পৃথিবী ও গোল্লায় যাক এদের লক্ষ্য নিজেকে জাহির করা।

৩) অতি পন্ডিতি, অতি আবেগ, সমন্বয়হীনতা আর উদাসীনতা, ফেসবুকে এসে একটি বিষয় উপলব্ধি করি এ দেশে মোটামুটি আমরা সবাই ইসলামী স্কলার! একটি উদাহরণ দিয়ে শুরু করি, চীনে যখন এই ভাইরাস শুরু হয় তখন একজন ব্যক্তি এটাকে চীনের উপর আল্লাহ গযব বলে উল্লেখ করে কারণ হিসাবে
তিনি চীনের প্রেসিডেন্টের নতুন করে কোরআন লেখার ঘোষণাকে যুক্তি দেখায়, জানেন তিনি কে? একজন অবসরপ্রাপ্ত বিডিআরের মহাপরিচালক!! যিনি রৌমারী যুদ্ধে জয়ী একজন চৌকস সমরনায়ক। এই অতি পন্ডিতি স্কলারদের কারণে বেশি সমস্যা হচ্ছে বর্তমানে।
অতি আবেগ, একটুতেই আমরা দ্রুত রিএ্যক্ট করি, কিছু সময় নিয়ে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে প্রচার করি ফলাফল বিশাল একটি অংশের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছায়ে যাচ্ছে।
সম্বনয়হীনতা, একটি সমস্যা শুরু হলে কখন খাদ্য ঘাটতি বিষয় মাথায় আসা উচিত কমপক্ষে এক সপ্তাহ! হয়তো দারিদ্র জনগোষ্ঠীর ১% জনগণ প্রথম দিন থেকে খাদ্য প্রয়োজন হয় যা সরকার খুব সহজে পূরণ করতে পারে কিন্তু দেখা গেল দশদিন শুরুর দিনই শুরু হল দানের দরিয়া, বরাবরই ছুটির মূল্য উদ্দেশ্য পন্ডুল!! এক সাথে ত্রাণ নিতে গিয়ে কাড়াকাড়ি, মারামারি চরম সমন্বয়হীনতা অথচ সেনাবাহিনী, প্রশাসনের লোক, পুলিশকে নিয়ে একটি বিশেষ টিম করে সহজে এলাকা ভিত্তিক সামাজিক দুরত্ব রেখে এই কাজটি করা যেত।
উদাসীনতা, আমাদের মধ্যে একটি গ্রুপ আছে চরম উদাসীন, বাস্তবতাকে মোটেই কেয়ার করে না, এদের সবার এক বাক্য কই সবই তো স্বাভাবিক আছে, কেন অযথা নিজেকে ঘরে বন্ধি রাখবো! গতকাল আর আজকের উদাহরণ দেই, আমি প্রতিদিন আসরের পরে দশ মিনিটের দোকানে যাই মূলত দুধ আনার জন্য, গতকাল গিয়ে দেখি একটি চায়ের দোকান খোলা! দিব্যি নিশ্চিন্তে সিগারেট ফুঁকছে দল বেঁধে!! আজ যেয়ে দেখি সব দোকান বন্ধ শুধু ঔষধের দোকান বাদে, একজনকে কারণ জিজ্ঞাসা করলাম বলল, সেনাবাহিনী আর পুলিশের প্যাদানিতে সব বন্ধ। সত্যিই অবাক করা জাতি আমরা
"পিঠে দু ঘা না পড়লে মনে হয় না আমরা মানুষ!!"
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১৫
৬টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×