অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড এর সিনেটর Fraser Anning বলেছেন, "Muslims may have been the victims today, usually, they are the perpetrators." 'Perpetrators' এই ইংরেজি শব্দের অর্থ হল - a person who carries out a harmful, illegal, or immoral act. তিনি আরো বলেছেন, "The real cause of bloodshed on New Zealand streets today is the immigration program which allowed Muslim fanatics to migrate to New Zealand in the first place." Muslim fanatic! এই fanatic শব্দটার অর্থটাও বেশ মারাত্মক! a person filled with excessive and single-minded zeal, especially for an extreme religious or political cause.
সিনেটর ইনিয়ে বিনিয়ে দোষ মুসলিমদেরই দিলেন। যে খুন করেছে সে ভুল করেছে, কিন্তু এর জন্য দায়ী খুন হওয়া মুসলিমরাই! কি সহজ স্বাভাবিক উক্তি অস্ট্রেলিয় এ সিনেটরের!
অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি শ্বেত সন্ত্রাসবাদকে উদীয়মান বা আসন্ন কোনো হুমকি হিসেবে দেখেন না। হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকরা ট্রাম্পের কাছে জানতে চান- তিনি শ্বেত সন্ত্রাসবাদকে উদীয়মান হুমকি হিসেবে দেখেন কিনা। জবাবে ট্রাম্প বলেন, “সত্যিই আমি মনে করি, এরা সংখ্যায় খুবই অল্প কিছু মানুষ, যাদের মারাত্মক সমস্যা আছে।”
অথচ হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারান্টের ইউরোপীয় খৃষ্টান জঙ্গী সংঘচন ব্লাক সানের সদস্য। ব্লাক সান মুলত উগ্রবাদী খৃষ্টান জঙ্গী সংগঠন। যারা ইউরোপে ভিবিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত রয়েছে। তারা মুলত ইউরোপ থেকে মুসলমানদের বিতাড়িত করতে চায় এবং এই সব সন্ত্রাসী হামলা করে মুসলিমদের ভয় দেখিয়ে ইউরোপের বাহিরে বের করতে চায়। এছাড়াও নানাভাবে খৃষ্টান সম্প্রদায়কে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়াতে উৎসাহিত করতে চায় যেন ইউরোপ থেকে মুসলমানদের বিতাড়িত করতে পারে।
ট্রাম্পের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন আমেরিকার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিবাসন নীতির কারণে পশ্চিমা বিশ্বে উগ্র ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলো ও শ্বেত-বর্ণবাদীরা উৎসাহিত হয়েছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা আরো বলছেন, আমেরিকায় উগ্র চরমপন্থা বাড়ছে এবং দেশের ভেতরে ও বাইরে চরমপন্থিদের হামলার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায় নিতে হবে। তারা এও বলছেন যে, ট্রাম্পের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে নিজেই শ্বেতবর্ণবাদের প্রতীক হয়ে দেখা দিয়েছিলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি খুনি ব্রেনটন ট্যারান্টের গভীর আকর্ষণ রয়েছে। নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলার আগে প্রকাশিত খুনি ট্যারান্টের ইশতেহার বিশ্লেষণ করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন বিশ্লেষকেরা। ওই ইশতেহারে সে নিজেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করে লিখেছে, পুনরুজ্জীবিত শ্বেতাঙ্গ পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে আমি অবশ্যই ট্রাম্পের সমর্থক।
আমেরিকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুসলিম দেশ এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ইসলাম বিদ্বেষী নানা বক্তব্য ও পদক্ষেপের কারণে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বেই মুসলমানদের বিরুদ্ধে হামলা বেড়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন। এ সম্পর্কে ব্রিটিশ সাংবাদিক ইভোন রিডলি লিখেছেন, নিউজিল্যান্ডে যা ঘটেছে সেজন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে ইসলাম বিদ্বেষী যে প্রচারণা শুরু করেছেন তাকে অবশ্যই দায়ী করতে হবে।
গতকাল (শুক্রবার) নিউজ্যিলান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে ব্রেন্টন টেরেন্ট নামে এক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ৪৯ জন মুসল্লিকে হত্যা করে। তবে বাইরে গাড়িতে তার কয়েকজন সহযোগী ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গাড়ির ভেতরে থাকা সহযোগীদের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং শুধু ব্রেন্টনকে তুলে ধরা হচ্ছে। এতে শ্বেত-সন্ত্রাসবাদীদের সংগঠিত অবস্থা আড়ালের চেষ্টা চলছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:৫৩