১) প্রয়াত ড: আনিসুজ্জামান সাহেবের বাবা এ টি এম মোয়াজ্জেম একজন প্যাথিক চিকিৎসক ছিলেন।
২) তাঁর মা সৈয়দা খাতুন ছিলেন গৃহিণী।
৩) ৬ ভাই-বোনের মাঝে ড: আনিসুজ্জামান ছিলেন ৫ম।
৪) তাঁর পিতামহ শেখ আব্দুর রহিম ছিলেন গ্রন্থকার এবং সাংবাদিক। শেখ রহিম বাঙালী মুসলমানদের মাঝে প্রথম হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সাঃ )-এর জীবনী লিখেছিলেন।
৫) ১৯৫০ সালের মন্বন্তরের সময়ে ড: আনিসুজ্জামান কলকাতা ছিলেন। সেখানে সাড়ে ১০ বছর থাকাকালীন এই দূর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করেন এই শিক্ষাবীদ।
৬) ১৯৪৬ সালে উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়ে তাঁর সামনে দু'টি হত্যাকান্ড ঘটেছিলো। এই দু'টি হত্যাকান্ড অধ্যাপকের মনে আমূল পরিবর্তন ঘটায়। তিনি নিজের মাঝ থেকে সাম্প্রদায়িকতা মুছে ফেলে মানুষকে মানুষ হিসেবে চেনা শুরু করেন।
৭) ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পরে তাঁর পরিবার খুলনায় চলে আসে।
৮) ড: আনিসুজ্জামান ৬ বছর বয়সে কলকাতার একটি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হোন। এর আগে পর্যন্ত তিনি নিজের মেঝ বোনের কাছে বাসায় পড়া-লেখা শিখতেন।
১০) অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ছিলেন ঢাকার প্রিয়নাথ হাই স্কুলের (পরে যার নাম হয় নবাবপুর গভঃ হাই স্কুল) সর্বশেষ ব্যাচের একজন ছাত্র।
১১) মেট্রিক পরিক্ষার আগেই ড: আনিসুজ্জামান ঠিক করে ফেলেছিলেন বড় হয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যে পড়া-লেখা করে অধ্যাপনা করবেন। সেজন্যে, ১৯৫১ - ১৯৫২ সালে পর্যন্ত জগন্নাথ কলেজে 'স্পেশাল বেঙ্গলি' বিষয়ে ভর্তি হোন।
১২) জগন্নাথ কলেজে পড়ার সময়েই তিনি পূর্ব পাকিস্তান যুব লীগের সাথে যুক্ত হোন।
১৩) ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন সমর্থন করা প্রথম বইটি তাঁরই লেখা। বইটি'র নাম 'রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন কি এবং কেন'। বইটি প্রকাশিত হওয়ার সময়ে ড: আনিসুজ্জামানের নাম ছিলো না। পূর্ব পাকিস্তান যুব লীগের নামেই এটি বের হয়।
১৪) ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে বি,এ (অনার্স) ক্লাসে ভর্তি হোন তিনি।
১৫) ১৯৫৬ সালে অনার্স পরীক্ষায় এক জনই প্রথম শ্রেণী লাভ করে। আর, সেই ব্যক্তিটি তিনি ছিলেন ড: আনিসুজ্জামান। মাস্টার্সেও প্রথম বিভাগে প্রথম হোন।
১৬) ১৯৫৪ সালের পূর্ব পাকিস্তানের সাহিত্য সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের একজন ছিলেন ড: আনিসুজ্জামান।
১৭) ১৯৫৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলা একাডেমী'র প্রথম গবেষণা বৃত্তি লাভ করে পি,এইচ,ডি ডিগ্রী শুরু করেন।
১৮) ১৯৫৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে যোগদান করেন।
১৯) ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
২০) ১৯৬২ সালে পি,এইচ,ডি ডিগ্রী লাভ করেন।
২১) ১৯৬৪ সালে ফুলব্রাইট এডভান্সড ফেলোশিপ নিয়ে নিয়ে আমেরিকার শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি 'ইয়াং বেঙ্গল আন্দোলন' নিয়ে গবেষণা করেছিলেন।
২২) ১৯৮৫ সালের আগস্ট মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার যোগদান করেন।
২৩) স্বাধীনতার সময়ে ড: আনিসুজ্জামান কলকাতায় 'বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি' গঠন করেন। এই সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। এই সমিতি থেকে শরণার্থী শিক্ষকরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মুক্তিযুদ্ধে পক্ষে প্রচারাভিযান চালান। শরণার্থী শিবিরগুলোতে স্কুলও পরিচালনা করা হয় এই সমিতি থেকে।
২৪) স্বাধীনতা সময়ে বাংলাদেশ সরকার যখন পরিকল্পনা সেল গঠন করেন, সেখানকার একজন সদস্য ছিলেন তিনি।
তথ্যসূত্রঃ প্রয়াত প্রফেসর ড: আনিসুজ্জামানের একটি সাক্ষাৎকার থেকে
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৯:০৭