কলেজে ক্লাস নেয়া অবস্তায় দেখলাম আমার চেয়ে ছাত্রের ক্লাসের সুন্দরী মেয়ে নুরজাহানের দিকে খেয়াল বেশী । আমি সাইকোলজি পড়াতে এসে খুব ভাল করে দেখলাম সব কলেজে উঠার পড় লিখা পড়ার চেয়ে প্রেমে বেশী মনযোগী ।
ঠিক তিন দিন পড়ে আমি ক্লাসে সবাই কে বললাম- একটা পরীক্ষা নিতে চাই ।
দেখি কে ভাল লিখে । সবাই ভালবাসার জন্য একটা চিঠি লিখ । দেখি ভালবাসা লিখে প্রকাশ কর ।
যাই হউক ৩০ মিনিট পড়ে সবাই লিখা জমা দিল । আমি খাতা গুলো নিয়ে বাসায় চলে আসলাম । ছাত্র ছাত্রীদের প্রেমের চিঠি পড়ে আমি বুঝতে পাড়লাম দিল্লির লাড্ডু কেন এত মজা । আর যাই হউক প্রেমের জন্য বাঙালির কবি যে নোবেল পুরুস্কার পেয়েছে গীতাঞ্জলী লিখা না হলে বুঝতাম না।।
একটা চিঠি পড়ে আমি তো নিজেই অবাক ।
লিখেছে প্রিয় স্যার
আমি প্রেমের ফসল , জন্মের পড়ে বাবাকে দেখিনি , মায়ের আত্তহত্যা দেখেছি ।
আমার বাবা আমার সামনে দিয়ে যায় , আমাকে দেখলে নাক বাকা করে ।
বাবার শরীরের গন্ধ আমি পাই । যদি আমার বাবা জায়গায় আমার আপন মামার নাম লিখা তবু কেন জানি বাবা কে বাবা ডাকতে ইচ্ছা করে ।
বাকি লিখটা আমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে । আমি সারারাত ঘুমাতে পাড়ি নাই ।
পড়ের দিন ক্লাসে সবাই কে বললাম - সবাই প্রেমের চিঠি লিখেছ । তোমাদের প্রেমের চিঠিতে দেশ প্রেম নাই । পিতা মাতার প্রেম নাই । সমাজের প্রেম নাই । ছোটেদের প্রতিপ্রেম নাই , বড়দের প্রতি প্রেম নাই । প্রেম শুধু নার আর নারীর একে অন্য কে ভাল লাগা না। তোমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার ।
সবাই খুব লজ্জা পেল । বাবার জন্য এত কষ্ট সেই চিঠি টা ক্লাসের সব চেয়ে সুন্দর মেয়েটার । আমি নুর জাহান কে ১০ বই উপহার দিয়ে বললাম মা তোমার চিঠি
প্রতিটা বাবার জন্য এক বড় পাওনা । ক্লাসের সবার সামনে সেই চিঠি পড়তে পাড়লাম না। কিন্তু অন্তরে গেথে রেখেছি । আমি নুর জাহান কে তার পড় থেকে মা বলে ডাকতাম । ১৯৯৬ সাল ওর বিয়েতে আমি উকিল বাবা হই ।
আল্লাহ মানুষ কে কোথায় নেয় । নুর জাহানের সেই বাবা আজ নুর জাহানের কাছে ।। তার জন্মদাতা বাবা কে শেষ বয়সে সবাই যখন দূর দূর করছে তখন নুর জাহান তার কাছে নিয়ে আসে ।। জগতে শিখার অনেক কিছু আছে ।।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:১১