ডাক্তারের কাছে রোগী গেলে খুব স্বাভাবিক ভাবে নির্ধারিত রোগের কিছু কিছু নির্ধারিত প্রশ্ন ডাক্তাররা করে এটা খুবই স্বাভাবিক রোগ নির্নয়ের জন্য। যেমন জ্বর হলে বা গলা ব্যাথা হলে, কোন ঠান্ডা কিছু খেয়েছেন কিনা? ঠান্ডা কোন স্থানে অনেকক্ষন ছিলেন কিনা এই টাইপের প্রশ্ন। কিন্তু সেখানে যদি ডাক্তারবাবু জিজ্ঞাস করেন আপনি আস্তিক না নাস্তিক? চার্চে, মসজিদে কিংবা সিনাগগে গেছেন কিনা? ধ্যান করার অভ্যাস আছে কিনা? এই সব প্রশ্ন। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আপনি কিছুটা হতচকিত হয়ে যাবেন। না এই সব প্রশ্ন এখন আমাদের দেশের মত অনুন্নত দেশে না, খোদ আমেরিকার এক শ্রেনীর ডাক্তার এই প্রশ্ন করা শুরু করছেন।
ধর্মচারন রোগীর ব্যাক্তিগত বিশ্বাস, সেখানে চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে এই প্রশ্ন আসলেই বিতর্কের জন্ম দেবে, এবং দিচ্ছে। চিকিৎসা, বিজ্ঞানের যে শাস্ত্র তা কেন ধর্মকে টেনে আনবে? বিজ্ঞানের মত প্রমানিত বিষয় কেন ধর্মের মত বিশ্বাসকে তার এখতিয়ারে প্রবেশের অনুমতি দেবে? বিষয়টা আসলেই গুরুতর। ধর্মের মত এমন অবৈজ্ঞানিক ব্যাপারকে বিজ্ঞানের মত এমন অভিজাত সমাজে প্রবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আসাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু এত বড় বুকের পাটা এই সব ডাক্তারের আসল কোথা থেকে? এই সাহস আসছে কিছু সমীক্ষা থেকে, দেখা গেছে, কোন এক নির্দিষ্ট বছর যারা নিয়মিত চার্চে গেছেন, তাদের মারা যাবার সংখ্যা যারা চার্চে যান না মানে নাস্তিক তাদের তুলনায় কম, আবার যারা ঈশ্বর নামক কোন এক কাল্পনিক (!) বিষয়ে বিশ্বাস করেন তাদের কোন রোগ ধরা পড়ার পরও তারা ঈশ্বর অবিশ্বাসীর তুলনায় ভালো থাকেন। এমন কি এইডস রোগীদের ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। এগুলো ডাক্তারি শাস্ত্রে যারা সমীক্ষা বা পরিসংখ্যান নিয়ে গবেষনা করেন তাদের মতামত, আমার মত অবার্চীনের বানানো কিছু না।
“মানুষের স্বাস্থ্যরক্ষায় ধর্মের প্রভাব নানা ভাবে পড়ছে” বলছেন পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং স্নায়ু বিজ্ঞানী নিউবার্গ। সাড়ে তিনশত পৃষ্ঠার এক বিরাট বই লেখেন সহকর্মী আর এক স্নায়ুবিজ্ঞান বিশারদ মার্ক রবার্ট ওয়াল্ডম্যান এর সাথে নাম “হাউ গড চেঞ্জেস ইয়োর ব্রেইনঃ ব্রেক থ্রু ফাইন্ডিংস ফ্রম আ লিভিং নিউরোসাইন্টিষ্ট”। ওদিকে স্বাস্থ্যবিজ্ঞানী নামের আর এক কলঙ্ক (!) ডিউক ইউনির্ভাসিটির সেন্টার ফর স্পিরিচ্যুয়ালিটি, থিওলজি এ্যান্ড হেলথ এর ডিরেক্টর হ্যারল্ড কোনিগ “মেডিসিন, রিলিজিয়ন এ্যান্ড হেলথ” বইতে রোগের জন্য ওষুধের পাশাপাশি কিভাবে আধ্যাত্মচিন্তার প্যাকেজ কি হবে তারও পরামর্শ তিনি দিয়েছেন।
নিউবার্গ এবং ওয়াল্ডম্যান লক্ষ্য করেন, যারা ১০-১৫ বছর ধরে ধ্যান বা ধর্ম কর্ম নিয়ে নিজেকে ব্যাস্ত রাখেন তাদের মস্তিস্কের ফ্রন্টাল লোব যারা ওসবের ধার ধারে না তাদের থেকে কিছুটা বড় হয়ে গেছে। যারা সাধন, ভজন, ঈশ্বরচিন্তা, নামায কালাম নিয়ে ব্যাস্ত থাকেন তাদের মস্তিস্কের থ্যালামাস অংশটা অবিশ্বাসীদের তুলনায় কিছুটা আলাদা। আপনি যদি একবার উনাদের লেখা “হাউ গড চেঞ্জেস ইয়োর ব্রেইন” বইটা এক নজর চোখ বুলান তবে সেখানে কিছু কেস ষ্টাডিও খুজে পাবেন। অত ডিটেইলসে গেলাম না।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে বিতর্কিত আবার কারো কারো মতে হাসির খোরাক আর একটি বিষয় প্রার্থনা বা ধ্যানে শুধু নিজের না অন্যেরও উপকার হয়, এনিয়ে অন লাইনে আপনি পক্ষে বিপক্ষে অনেক লেখা পাবেন। ১৯৯৮ সালে সানফ্রান্সিস্কো হাসপাতালের কার্ডিওলজিষ্ট র্যান্ডলফ বায়ার্ড দাবী করেন যেসব হাসপাতালে ভর্তি যে সব রোগীর জন্য তাদের পরিবার বা শুভাকাঙ্খীরা প্রার্থনা করছেন তারা ভালো থাকেন সেই সব রোগীদের তুলনায় যাদের জন্য কেউ প্রার্থনা করেনি। অপরদিকে ২০০৫ সালে হার্ভার্ড ভার্সিটির বিজ্ঞানী হারবার্ট বেনসন এই সমীক্ষার বিপরীতে দেখান প্রার্থনার সেবা পাওয়া সত্ত্বেও ৫২% বাইপাস পেসেন্টের জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে আর যাদের জন্য কেউ প্রার্থনা করেনি তাদের ক্ষেত্রে এই জটিলতা ৫১%। বোজেন অবস্থা।
টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রবার্ট হ্যামার ১৫ বছর গবেষনার পর দেখিয়েছেন ধর্মচারনের সাথে যারা জড়িত একটা নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে তাদের মারা যাবার সম্ভাবনা যারা ধর্মের বিরুদ্ধচারন করে তাদের তুলনায় কম। ইউনিভার্সিটি অভ পিটসবার্গ মেডিকেল সেন্টারের সার্জন ড্যানিয়েল হল লক্ষ্য করেন চার্চ গামী মানুষের আয়ু অধার্মিকদের তুলনায় দু’ তিন বছর বেশী। এর বিপরীতে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের মনোবিজ্ঞানের প্রফেসর অধ্যাপক রিচার্ড স্লোয়ান তার লেখা “ব্লাইন্ড ফেইথঃ দ্য আনহোলি এ্যালাইন্স অব রিলিজিয়ন এ্যান্ড মেডিসিন” বইতে রীতিমত প্রতিবাদ করছনে উপরোক্ত গবেষনার, তিনি মনে করেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের আতাতটি রীতিমত অশুভ। তার ঘোষনা “বিজ্ঞান অলৌকিক কিছু নিয়ে মাথা ঘামায় না।”
এ কথা আপনাকে মনে রাখতে হবে এই যে বিতর্ক এটা কিন্তু চিকিৎসার সাথে বিজ্ঞানের দ্বন্দ্ব না, এটা অনেক আগে থেকে বিজ্ঞান এবং ধর্মের সংঘাত। মানুষের চিন্তা জগত এক সুপ্রাচীন ব্যাপার (কিছুদিন আগে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম ধর্ম ও বিজ্ঞান আসলেই কি সাংঘর্ষিক যারা দেখেন নি সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন)। বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের সংঘাত মোটামুটি শুরু হয় সপ্তদশ শতকে আধুনিক বিজ্ঞানের সুচনাপর্ব থেকে। সপ্তদশ শতকের আগে অল্প কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা বাদ দিলে বিজ্ঞান এবং ধর্ম কিন্তু সহবস্থানে ছিল। নতুন বিজ্ঞানের জন্ম যাদের হাতে তারা বিশ্বাস করতেন প্রকৃত পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে তারা স্রষ্টার সৃষ্টিকে অবলোকন করছেন। এর শ্রেষ্ঠ উদাহরন আইজ্যাক নিউটন। যিনি বুজতে পেরেছিলেন এক গূঢ় সত্য। যে নিয়মে আপেল গাছ থেকে পড়ে সেই একই নিয়মে চাঁদ পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে। অর্থ্যাৎ স্বর্গ মর্ত্যে একই নিয়মের অনুশাসন।
কিন্তু ওই যে আকর্ষন বল, যা গাছের আপেলের ওপর কিংবা চাঁদের ওপর তার ব্যাখ্যা কি? কোন আকর্ষন বেধে রেখেছে বিশ্ব মহাবিশ্বকে? আকর্ষন ভিন্ন কে কোথায় ছিটকে চলে যেত তার ঠিক ছিল না। সব কিছু যাতে থাকে যথাযথ স্থানে তার জন্যই এই আকর্ষন বল, তাই সৃষ্টিকর্তার বিধান হিসাবে হাজির এই আকর্ষন বল। দু হাজার বছর আগে প্লেটোও একই মত দ্ধারা চালিত হতেন। তাদের জবাব ছিল তাদের আবিস্কারের এই ব্যাখ্যার শেষ কথা ঈশ্বরের অভিপ্রায় এরকম তাই এভাবে চলছে, তারা শুধু ব্যাপারটা অবলোকন করছে। কি বলবেন একে? এব্যাপারে নোবেলজয়ী পদার্থ বিজ্ঞানী ষ্টিভেন ওয়েনবার্গের দারুন এক প্রবন্ধ আছে বিজ্ঞান এবং ধর্মের দ্বন্দ্ব নিয়ে কিন্তু এত বিশাল ব্যাপার যা এই লেখায় আলোচনা আনলে সেক্ষেত্রে এই লেখা বিশ পৃষ্টা হয়ে যাবে তাই তার সে প্রবন্ধ অন্য কোন দিন লেখার ইচ্ছা আছে।
বিজ্ঞান এবং ধর্মের মাঝে কি সমন্বয় সাধন সম্ভব? এই ধারার বিজ্ঞানীদের মাঝে অনেকেই মারাত্মক ঈশ্বর বিশ্বাসী, এরা নিজেদের গবেষনা এবং ঈশ্বর বিশ্বাসে কোন ফারাক দেখেনা, এদের যুক্তি অনুযায়ী ঈশ্বর মানুষের কাছে নিজের রহস্য উন্মোচন করেন বিজ্ঞানের মাধ্যমে। যে সব বিজ্ঞানীরা এই ধারনার বশবর্তী তাদের দুজনার নাম উল্লেখ্য করি একজন হিউম্যান জিনোম প্রজেক্টের প্রাক্তন কর্নধার ফ্রান্সিস কলিনস এবং ব্রিটিশ পদার্থবিদ জন পোলিংকর্ন।
১৯৯০ এর দশকে যে আড়াই হাজার বিজ্ঞানী মানুষের জেনোম ম্যাপ তৈরীর কাজে ব্যাস্ত ছিলেন তাদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কলিনস। কলিনসের লেখা “দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ অভ গডঃ আ সায়েন্টিষ্ট প্রেজেন্ট এভিডেন্স ফর বিলিভ” এক অসাধারন ভাবনার বই। ডি এন এর মাঝে কোটি কোটি রাসায়নিক অনুর সুশৃঙ্খল বিন্যাসকে পরীক্ষা করতে করতে মুগ্ধ কলিনস দেখেন ডি এন এ পর্যায়ে মানুষ এবং শিম্পাঞ্জীর মিল ৯৮.৪% আবার কোন একটা বিশেষ জিনের বেলায় ইদুরের সাথে মানুষের মিল ৯০%। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে বিবর্তন মিথ্যা না। প্রানী রাজ্যে ইদুর, শিম্পাঞ্জী বা মানুষ সে হিসাবে আত্মীয় কথাটা আপনার যতই অপছন্দ হোক না কেন।
এখানেই কলিংসের মত বিজ্ঞানীর মতামত চলে আসে, তার মতে এটা বলা যায় না যে বিবর্তন প্রক্রিয়াটি ঈশ্বরের প্ল্যান না, নেহাত উদ্দেশ্য বিহীন এক প্রাকৃতিক ঘটনা। তিনি বলতে চান মানুষের আবির্ভাবের মুলে বিবর্তন কাজ করছে ঠিকই তবে সে প্রক্রিয়া এগিয়েছে ঈশ্বরের ইচ্ছায়। শুধু বিবর্তন না এই মহাবিশ্বে প্রানের আবির্ভাব তাও ঈশ্বরের ইচ্ছায়, কিভাবে? মহাবিশ্বের চরিত্র এক চুল আলাদা হলে আজ প্রানের দেখা মিলত না। ব্রক্ষ্মান্ডের চরিত্র নির্ধারন করে যতগুলো জিনিস তার মধ্যে একটা হল গ্রাভিটেশনাল কনষ্ট্যান্ট বা মহাকর্ষীয় ধ্রুবক।
এই মহাকর্ষীয় ধ্রুবক একটা সংখ্যা, যা ঠিক করে দুটো বস্তুর মাঝে আকর্ষন বলের পরিমান। গবেষকরা হিসাব করে দেখিয়েছেন ঐ গ্রাভিটেশনাল কনষ্ট্যান্ট বা মহাকর্ষীয় ধ্রুবক যদি ১০০,০০০,০০০,০০০,০০০ ভাগের ১ ভাগও বেশী হত এখানকার থেকে তবে মহাকর্ষ বল এত বেশী হত যে বিগ ব্যাং এর পর আস্তে আস্তে গ্যালাক্সি, গ্রহ, নক্ষত্র তৈরীর বদলে সব কিছু আবার দলা পাকিয়ে যেত। তাহলে কোথায় থাকত এই মিল্কি ওয়ে, কোথায় থাকত সৌর মন্ডল, কোথায় থাকত পৃথিবী আর তার মাঝে হেটে বেড়ানো প্রানী!!! কলিনস মনে করেন মহাবিশ্বে জীবের আবির্ভাব ঘটানোর জন্য এই গ্রাভিটেশনাল কনষ্ট্যান্ট এর মান বেধে দিয়েছেন ঈশ্বর। (বর্তমানে কলিংস আমেরিকার director of National Institutes of Health। করোনা ভাইরাস নিয়ে ওয়াশিংটন পোষ্টে তার সাক্ষাতকারটি দেখে আসুন How NIH chief Francis Collins is trying to get people of faith to wake up to coronavirus realities ভাবছি এই সাক্ষাৎকার বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা তো দুরে থাক কোন হুজুরও দেবার সাহস রাখে নাকি?)
লেখা অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে আর বাড়াব না, ইচ্ছা ছিল পোলকিংহর্নকে নিয়ে দু লাইন লিখব কিন্তু সে দু লাইন লিখতে গেলে আরো দু পৃষ্ঠা লেখা হয়ে যাবে কারন এগুলো আমার খুব প্রিয় বিষয়। তাই যে বিজ্ঞানের উদ্ভব হয়েছে ধর্মের মাঝ থেকে, এক পর্যায়ে সেই ধর্ম এবং বিজ্ঞানের মাঝে ঝগড়া বেধে গেল (এই ঝগড়া কিন্তু আদতে এই দুইয়ের মাঝে বাধেনি, বাধিয়েছে সৃষ্টির সব থেকে কমপ্লিকেটেড নমুনা মানুষ নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য), সেই ঝগড়ার মাঝেও তারা পাশাপাশি হেটে চলেছে, বিজ্ঞান নিত্য আবিস্কার করে নিজেদের উৎসের সন্ধানে এগিয়ে যাচ্ছে। যতই এগিয়ে যাচ্ছে ততই প্রশ্ন উঠছে বিজ্ঞান আর ধর্ম কি সাংঘার্ষিক নাকি পরিপুরক। ভাবুন না একটু। কারন বিজ্ঞানই ভাবার ক্ষেত্রটি প্রস্তত করে দিচ্ছে।
কাঠ মোল্লার ধর্ম যেমন ধর্মকে রিপ্রেজেন্ট করে না, তেমনি দুই লাইন ডারউইন পরে ধর্মকে অবজ্ঞা করার মধ্যে বিজয় নিহিত না, নিজের জ্ঞানের পরিধিকে বিস্তৃত করে ভাবনার রাজ্যকে মুক্ত করে ভাবনার মধ্যেই সমস্যার সমাধান। হয়ত সেটা আসতে আরো অনেক সময় লাগবে, লাগুক না অসুবিধা কি আমার ভাবনায়?
ছবিঃ অন্তর্জাল। সূত্রঃ দ্যা ল্যাঙ্গুয়েজ অভ গড, পথিক গুহের এক বিশ্ব দুই জানালা, উপরে যে সব বইর নাম দেয়া আছে, তার কিছু বই বা অংশ অনলাইন দিয়ে পড়তে পারেন এছাড়া অন লাইনের কিছু প্রবন্ধ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:২৩