জনশ্রুতি আছে যে, যার কোন পীর নাই তার পীর নাকি ইবলিস শয়তান। দ্বীনের চর্চার জন্য, দোজাহানের অশেষ নেকি হাসিলের জন্য পীর ধরা নাকি নিতান্তই আবশ্যক। হক্কানী আলেম ওলামাদের মতেও পীর ধরার আবশ্যকতা আছে। তবে হ্যাঁ, শর্ত হলো খাঁটি পীর হতে হবে।
আল্লাহর জমিনে পীর, অলিআল্লাহ গন যদি না থাকতেন তাহলে তামাম পৃথিবী এতদিনে ধ্বংস হয়ে যেত, একদম খাঁটি কথা। কিন্তু বর্তমান সময়ের কবর পূজারী, শিরক- বেদআতী ভণ্ড পীরদের সে পাল্লায় মাপা যায় না। খাঁটি পীর ধরা সাধারণ মানুষের কাজ নয়, আমি মনে করি, এটি হাই সেনসিটিভ ও হাই থটের ব্যাপার। কোরআন, হাদিসে যাদের অগাধ জ্ঞান, যারা শরিয়তকে জানেন, মানেন ও হৃদয়ে লালন করেন এবং তদানুযায়ি আমলও করেন, অর্থাৎ সর্বোপরি যাদেরকে ধোঁকা দেয়া কঠিন তারাই খুজুক না খাঁটি পীর!
সাধারণ মানুষের যেখানে তাওহীদে গরল, তকদীরে সংশয়, দ্বীনের এলেমও যাচ্ছে-তাই, এমন লোককে খাঁটি পীরের তালাশে পাঠানো কতটা যুক্তিসংগত তা প্রশ্নসাপেক্ষ। আর যেখানে ভণ্ড মাজার পূজারীরা ওত পেতে আছে সাধারণ মুসলমানদের ঈমান হরন করার জন্য। সুতরাং ভেজালের এই দিনে খাঁটি পীরের সন্ধানে গিয়ে বেচারার আম ছালা দুটোই হারানোর প্রবল সম্ভাবনা। তার চেয়ে মক্তব, মাদরাসা ও আলেমদের সান্নিদ্ধে গিয়ে কোরআন হাদিসের চর্চা তথা শুদ্ধ ইসলাম চর্চা করাটাই অধিকতর সমীচীন বলে মনে করি।পীরতন্ত্রের ব্যাপারে আরও কিছু প্রশ্ন থেকে যায়, যেমন খাঁটি পীর বা ভণ্ড পীর যাই হোক না কেন, সব পীরের খেলাফত কেন বংশানুক্রমিক চলমান থাকে?
এখন প্রশ্ন হলো পীরতন্ত্রের যে সিলসিলা তা রাজতন্ত্র কিংবা পুরোহিত তন্ত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নয় কি? মহান আল্লাহ ও রাসুল (স) এর প্রতি অনুগত থেকে পরিশুদ্ধ ইসলাম চর্চা করলেও কি পীরে কেবলার হাতে বাইআত হওয়া জরুরী? পরিপূর্ণ জীবন বিধান ইসলামে কি কোরআন- হাদিসের বাইরে কোন অপ্রকাশ্য এলেম রয়েছে? তথাকথিত পীর বাবারা কিন্তু সেই অপ্রকাশ্য এলেম যাকে বলে বাতেনি এলেম বা মারেফাতি তত্ত্ব বিলানোর জন্য মুরিদানদের প্রলুব্ধ করেন।