{লেখাটি ফেসবুক থেকে নেয়া এ লেখায় আমার কোন ক্রেডিট নেই}
পৃথিবীতে সাত জন মাত্র ব্যাক্তি আছেন যারা একসঙ্গে নোবেল, আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল এওয়ার্ড এবং কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল এই তিনটি পুরষ্কার পেয়েছেন। এরা হলেন নেলসন ম্যান্ডেলা, মারটিন লুথার কিং, মাদার তেরেসা সহ আরও ৪ জন। আর এদের মধ্যে সপ্তম ব্যাক্তিটি হচ্ছেন আমাদের ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস!
Fortune Magazine এ সারা বিশ্বের টপ ১২ জন উদ্যোক্তার লিস্ট তৈরি করলেন, সেখানে বিল গেটস আছেন, স্টিভ জবস আছেন। আর আছেন আমাদের ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস।
জানলে অবাক হবেন জাপানের সিনিয়র হাই স্কুলের ইংরেজি টেক্সট বইতে আমাদের ডক্টর ইউনুসকে নিয়ে একটা চ্যাপ্টার আছে। সব স্কুল ছাত্রছাত্রীরা ওনাকে চেনেন। আমরা যেমন ছোটবেলায় ফুটবলার পেলে-র গল্প পড়েছি, যে কালো মানিক ফুটবলের যাদুকর কিংবা মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর গল্প পড়েছি- এমন। একবার পত্রিকায় প্রফেসর ইউনুসের জাপানে আগমন বার্তা শুনে যোগাযোগ করলেন জাপানের ক্রাউন প্রিন্সেস মাসাকো সামার অ্যাসিস্ট্যান্ট। মাসাকো সামার বাবা প্রফেসর হিসাশি অওয়াদা একসময় প্রফেসর ইউনুসের সাথে জাতিসঙ্ঘের বোর্ড মেম্বার ছিলেন। নিজের বাবার কাছেই প্রফেসর ইউনুসের গল্প শুনেছিলেন। ক্রাউন প্রিন্স নারুহিতো প্রফেসর ইউনুসকে আমন্ত্রণ জানালেন অন্দরমহলের একটা রাজ রুমে। যেখানে অনেক ভি,আই,পিদের ও অ্যাক্সেস নেই!
মামলা অথবা ওয়ারেন্ট জারী হওয়া ছাড়া প্রফেসর ইউনুসকে নিয়ে এই দেশের মিডিয়ায় কোন সংবাদ হয় না।কিন্তু বিশ্বের যেকোন দেশে প্রফেসর ইউনুস সেমিনার করলে,বক্তব্য রাখলে সে নিউজ ওদের মিডিয়ায় প্রাইম টাইমের হেড নিউজ হয়।
আহা আমাদের দূর্ভাগ্য! আমরা জাতি হিসাবে কত অভাগা ,জাতি হিসাবে কত হীনমন্য। প্রয়াত লেখক হুমায়ন আহমেদ লিখেছিলেন, "অধ্যাপক ইউনূস যখন নোবেল পুরস্কার পান, তখন আমি নাটকের একটা ছোট্ট দল নিয়ে কাঠমান্ডুর হোটেল এভারেস্টে থাকি। হোটেলের লবিতে বসে চা খাচ্ছি, হঠাৎ আমার ইউনিটের একজন চেঁচাতে চেঁচাতে ছুটে এল। সে বলছে, ‘স্যার, আমরা নোবেল পুরস্কার পেয়েছি। স্যার, আমরা নোবেল পুরস্কার পেয়েছি।’ সে বলেনি অধ্যাপক ইউনূস নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। সে বলেছে আমরা পেয়েছি। অধ্যাপক ইউনূসের এই অর্জন হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের অর্জন। আমার মনে আছে, এই আনন্দ সংবাদ শোনার পর আমি শুটিং বাতিল করে উৎসবের আয়োজন করি। হুমায়ন আহমেদ আমাদের মাঝে নেই। আর দুঃখের বিষয় নিজ দেশে সেই ড: ইউনুসের মুল্যায়ন আজ ভিন্নভাবে হয় আমরা দু-একটা চুবানি দিয়ে দিতেও দ্বিধাবোধ করি না।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:৪৯