somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রনি ভাই এগিয়ে চল, আমরা আছি তোমার সাথে....B-)

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রাস্তায় বের হলে মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার সহ বিভিন্ন যানবাহনে প্রায়শই উক্ত বাহনের মালিকের পেশার পরিচয় পাওয়া যায়। যেমন কোনটিতে লেখা থাকে চিকিৎসক, কোনটিতে পুলিশ, কোনটিতে আইনজীবী বা উকিল, আবার কোনটিতে সাংবাদিক। এর বাইরে দেখতে পাই বিভিন্ন সরকারী সেবা সংস্থার নাম যেমন, ঢাকা সিটি করপোরেশন, তিতাস গ্যাস, ডেসকো, ডেসা ইত্যাদি। মাঝে মধ্যে অবশ্য দামী গাড়ীতে জাতীয় সংসদ বা সংসদ সদস্য লেখাও চোখে পড়ে।
যাহোক, পেশার বিষয়টাতেই আসি। বাহনে মালিকের পরিচয় দেয়ার রেওয়াজ ঠিক কি কারণে সেটা আমার জানা নাই। তবে সাধারণ বুদ্ধিতে ধরে নিতে পারি, চিকিৎসক লেখা থাকলে কোন জরুরী প্রয়োজনে যেমন সড়ক দুর্ঘটনায় সেই ব্যক্তির সাহায্য নেয়া যেতে পারে বা তাকে অগ্রাধিকার দেয়ার প্রশ্ন আসতে পারে, পুলিশ লেখা থাকলে জরুরী আইনি সহায়তা নেয়া যেতে পারে। কিন্তু আইনজীবী বা উকিল এবং সাংবাদিক লেখার উদ্দেশ্য আমার কাছে স্পষ্ট নয়। কেননা,আমার ধারণা পুরো দুনিয়ায় এমন কোন আইনজীবী পাওয়া যাবে না যে কি না জরুরী প্রয়োজনে রাস্তাঘাটে কাউকে আইনি সহায়তা দিবে। আবার সাংবাদিক লেখা থাকলে পাবলিক তাকে ধরে এনে সংবাদ সংগ্রহ করতে বলবে এমন ঘটনাও মনে হয় ঘটে না।
আসলে গাড়ীতে মালিকের পেশা লেখার মূল উদ্দেশ্য কিন্তু ঠিক উল্টো যা সবাই জানে- আর তা হল অন্যদের কাছ থেকে সমীহ আদায়ের চেষ্টা। সহজ ভাষায়- আমি ওমুক, আমার কাছ থেকে দূরে থাকুন।
বাংলাদেশে ঠিক কি কারণে সাংবাদিকরা নিজেদের এলিট শ্রেণী দাবী করে তা আমার বুঝে আসে না। অন্য আর দশটা পেশার মত সাংবাদিকতাও একটা পেশা। কিন্তু মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণ এদের হাতে বলে এরা এমন ভাব নেয়- যেন দেশের বাপমা এরাই। আর প্রতিটি সরকারও দেখেছি সাংবাদিক সমাজকে তোয়াজ করে চলে। একজন প্রতিভাবান প্রকৌশলী কিংবা চিকিৎসক বা শিক্ষক যদি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বা নিহত হন তখন আমি অন্তত দেখি নাই সরকার কোন ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। কিন্তু সেই একইরকম দুর্ঘটনায় সাংবাদিক তকমাওয়ালা কেউ যদি আহত বা নিহত হন তবে দেশের পুরো মিডিয়ায় হায় হোসেন! হায় হোসেন! রব ওঠে। সরকারও দেখি বেশ গুরুত্ব সহকারে নিয়ে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে।
অথচ যদি নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে চিন্তা করা হয় তবে বাংলাদেশে সাংবাদিকতা পেশাটি পুলিশের মতই চরম দুর্নীতগ্রস্ত। প্রায় প্রতিটি সাংবাদিক, সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল কোন না কোন রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করে। এবং এই সাংবাদিক নামধারীদের একটা বিরাট অংশ হলুদ সাংবাদিকতা বা অপসাংবাদিকতায় লিপ্ত। পয়সার বিনিময়ে কাউকে ফাসিয়ে দেয়ার জন্য রিপোর্ট করা, কাউকে আবার অপরাধ থেকে রেহাই দেয়ার জন্য উল্টো রিপোর্ট করা, গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর ঘটনা অর্থের বিনিময়ে গায়েব করে দেয়া, অসহায় লোকজনকে পরিস্থিতির সুযোগে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, ব্ল্যাকমেইলিং ইত্যাদি নিত্যদিনের ঘটনা। যার কারণে সাধারণ মানুষ যে পরিমানে থানা-পুলিশ নিয়ে আতঙ্কে থাকে, ঠিক সেই রকম সাংবাদিক পরিচয় পেলেও আতঙ্কিত হয়। আমাদের কারখানার পাশেও তেমনি এক ‘সাংঘাতিক’ থাকে যে কি না প্রথমদিকে উল্টাপাল্টা রিপোর্টের ভয় দেখিয়ে টুপাইস ইনকামে ধান্ধা খুঁজেছিল। কিন্তু মালিকপক্ষের দৃঢ়তা বুঝতে পেরে আর সাহস পায় নাই।
আমি অবশ্য ঢালাওভাবে সমস্ত সাংবাদিকদের দুর্নীতগ্রস্ত বলছি না। এই দেশে অসংখ্য সৎ, নির্ভীক, দেশপ্রেমিক মানুষ সাংবাদিকতা বা গণমাধ্যমে জড়িত রয়েছেন। তবে তাঁরা অনেক সময় হুজুগের বাইরে যেতে পারেন না।
যে কারণে এই পোস্ট এবার সেই কথায় আসি। বাংলাদেশে দুর্নীতির মুকুটহীন সম্রাট যদি কাউকে বলতে হয় তবে তিনি হলেন সালমান এফ রহমান। এই সালমান এফ রহমান ও তার গং দুর্নীতি, বাটপারি, অর্থলোপাট, ধান্ধাবাজি, ধোঁকাবাজি বিষয়গুলোকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। যারা বেক্সিমকো গ্রুপ সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন তারা হয়ত জানেন, এই সালমান এফ রহমান এমন কোন ধোঁকাবাজির পথ বাদ রাখেননি যা দিয়ে সরকার ও জনগণের অর্থ লুট করা যায়। অর্থাৎ যে কারো নতুন পন্থায় অর্থ লোপাটের ঘটনা যদি জানতে পারেন তবে সাথে এটাও জেনে রাখবেন তিনি হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি। প্রথম ব্যক্তিটি অবশ্যই সালমান এফ রহমান তথা বেক্সিমকো গ্রুপ।
এই মুহূর্তে যদি সালমান এফ রহমানের কাছে দেশের মানুষ ও সরকার সমস্ত লুট করা অর্থ ফেরত চায়, তবে ঐ গুষ্টির চৌদ্দপুরুষ বেচে দিলেও শতকরা ১ ভাগ অর্থ আদায় হবে না।
তো এই সালমান এফ রহমান যদি একটি টিভি চ্যানেলের মালিক হন, তবে সেই চ্যানেল প্রতিষ্ঠায় অর্থের উৎস নিয়ে কোন সন্দেহ থাকার কথা নয়। আর সেই চ্যানেলের উদ্দেশ্য কি হতে পারে সেটাও আন্দাজ করা যেতে পারে। ঠিক যেরকম বসুন্ধরা গ্রুপের পত্রিকাগুলো ঐ গ্রুপের স্বার্থে আঘাত করেছে এমন বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দিনের পর দিন অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বিরতিহীনভাবে, ঠিক একইভাবে সালমান এফ রহমানের ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভিও ধীরে ধীরে মুখোশ খুলতে শুরু করেছে।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি গোলাম মওলা রনি এমপির অফিসের সামনে গিয়ে বসে আছে, তাকে ২৪ ঘন্টা ফলো করছে। কি উদ্দেশ্য- রনির দুর্নীতি অনুসন্ধান! এই কথা শুনলে মরা মানুষও হেসে উঠবে! আওয়ামী লীগের প্রায় আড়াই শত এমপির মধ্যে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি কিনা খুঁজে পেল গোলাম মওলা রনিকে! বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, আমলা, সরকারী কর্মকর্তাদের দুর্নীতির রেটিং করলে গোলাম মওলা রনিকে প্রথম হাজারে খুঁজে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ! এমনকি ঐ টিভির মালিক সালমান এফ রহমানের দুর্নীতির কাছে গোলাম মওলা রনি দুগ্ধপোষ্য শিশু! একেই বলে- চালুনি কয় সুঁই তোর পিছে ছ্যাদা!
দুর্নীতিবাজ এক লোকের টিভি চ্যানেলের রিপোর্টার ও ভাড়াটে লোকজন যদি মালিকের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য দেশের একজন সম্মানিত সংসদ সদস্যকে ২৪ ঘন্টা ফলো করে, অফিসের সামনে বসে থাকে, আবার বসে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করলে ধৃষ্টতাপূর্ণ জবাব দেয়, তবে গোলাম মওলা রনি কেন আসাদুজ্জামান নূর হলেও ঐ রিপোর্টারের পাছায় লাত্থি দিবেন!
কিন্তু গোলাম মওলা রনিকে নিয়ে শুরু হয়েছে মিডিয়া ট্রায়াল! সাংবাদিক সমাজ নামের এক অদ্ভুত প্রাণীগোষ্ঠী সবসময়ের মত হুক্কাহুয়া শুরু করছে! অথচ ঘটনার শুরু কিভাবে চিন্তা করলে তাদের এই হুক্কাহুয়া অবশ্যই অযৌক্তিক প্রমাণিত হবে! আমি গোলাম মওলা রনির পক্ষ নিচ্ছি না, আর একজন আওয়ামী এমপির পক্ষ নেয়ার কারণও নাই। কিন্তু এমপি রনির বিগত দিনের কর্মকান্ড পর্যালোচনা করলে তাকে আর যাই হোক কঠিন ধরণের খারাপ মানুষ মনে হয় নাই- যেটা হওয়াই স্বাভাবিক ছিল।
লেখার শুরুতে সাংবাদিকদের প্রতি বিষোদগারের কারণ ঐ একটাই। এরা নিজেদের অন্য গ্রহের প্রাণী ভাবে। এরা নিজেদের সমস্ত ভুলের উর্দ্ধে দেখাতে চায়। আসলে পুলিশ, আইনজীবীদের মতই এদের নির্দিষ্ট কোন চরিত্র নেই। এরা শুধুই- নুন খাই যার গুণ গাই তার!
সাধারণ মানুষ এত বোকা নয়। তাই যতই মিডিয়া হুক্কাহুয়া করুক না দল নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ এমপি রনির পক্ষেই থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৬
১৭টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×