বাসে উঠে ডান দিকের জানালা ঘেঁষা সিটে বসতে যেয়ে তার দিকে চোখ যায়। তিনি আমার উলটো দিকের সীটে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছেন।
প্রচন্ড গরমে পুরো বাস ঘেমে নেয়ে একাকার। কিছুক্ষনেই বাস লোকারন্যে পরিনত হয়।ইতিমধ্যে কয়েকটি হকার ডেইলি নিউজ পেপার হাতে, আর শিশুদের রকমারি খেলনার পসরা নিয়ে শোরগোল করতে লাগলো।
জানালা গলে ঢুকে পড়া তপ্ত রোদে মুখ রেখে পুরনো লোকগীতির করুন সুর ছডিয়ে ভাবলেশহীন তিনি গুনগুন করে চলেছেন “আমার গায়ে যত দু:খ সয়— বন্ধুয়ারে কর....। তার দু’গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়া অশ্রু দেখে কেউ কেউ ভ্রূ কুঁচকিয়ে তাকাচ্ছেও । বয়ে যাওয়া অশ্রু মুক্তোর দানা হয়ে তার গালে লেগে বুক পর্যন্ত সাদা শার্টে হাহাকার তুলছে।
এমন সকরুন দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে গরম বালিতে আমার পা জোড়া ডুবছে যেনো।নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসেও আক্রমন করতে থাকে বিরামহীন এক শূন্যতা।
মধ্য বয়স্ক একজন প্রেমিক পুরুষের করুন আকুতি নিয়ে সময়টা গুমোট আর অশরীরি হাহাকারে ছেয়ে যায়। বিরহী দহনে কাতর হৃদয় কষ্টে বুক ভারি হয়। চোখে জল আসে। ফেলে আসা স্মৃতি না পাওয়ার বেদনায় পরাভূত হয় মন।
মানুষ যা পায়, তা নিয়ে সুখী হয় খুব কম। হারিয়েছে যা--হাতের নাগালের বাহিরে যা সে যন্ত্রনায় কাতর হয়ে রয় ।
প্রত্যাখ্যান এতো পোড়ায় কেনো !!
আফসোস - আহা কেনো মানুষ এমন হয়?
রাবেয়া রাহীম
৩/মে/ ২০১৯
নিউইয়রক
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১৯ সকাল ৮:২২