somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান রক্ষায় এগিয়ে আসুন!

০৬ ই মে, ২০২১ সকাল ৭:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রমনা মাঠে (রেসকোর্স ময়দানে) নারকেলের চারা রোপণের মাধ্যমে একটি উদ্যানের জন্ম দিয়ে তার নামকরণ করেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। যা সবুজ সমারোহ গাছগাছালির ছায়াঢাকা পাখিডাকা প্রাণোচ্ছল ইতিহাস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বর্তমান ও আগামি প্রজন্মের জন্য। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এতদিন পর্যন্ত নগরীর কোটি কোটি মানুষের ফুসফুস সচল রাখার গুরুদায়িত্ব পালন করে এসেছে। কিন্তু এখন সে বড়ো অসহায়। আমাদের উচিত তার পাশে দাঁড়ানো।

সম্প্রতি রেস্টুরেন্ট তৈরির নামে শত-শতাব্দীর সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই শতাধিক পুরনো গাছগুলো কেটে উজাড় করছে গণপূর্ত অধিদফতর। হাজারো সমস্যার বোঝা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে থাকা ঢাকা শহরকে সবুজ ও সতেজতাহীন করার লক্ষ্যে গণপূর্ত অধিদফতর যে নিধনযজ্ঞ চালু করেছে তা আমাদের ঢাকা শহরকে মানুষের বসবাসের অবশিষ্ট উপযোগিতা হারাতে বাধ্য করবে। জাতীয় স্বাধীনতা জাদুঘরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তৈরিকালে যদি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সৌন্দর্যের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকা যায়, তবে এই তুচ্ছ রেস্টুরেন্টের জন্য কেন কোটি কোটি মানুষের আশ্রয়স্থলকে নষ্ট করা হবে? ভোগবাদীদের রেস্টুরেন্টের প্রয়োজনীয়তা কি বঙ্গবন্ধুর হাতে তৈরি সবুজের মালাগাঁথা সোহরাওয়ার্দীর সৌন্দর্য্য উপেক্ষা করার মতো শক্তিধর? নিয়মানুযায়ী যেখানে আমাদের রাজধানীর জন্য প্রয়োজনীয় ২৫ ভাগ বনভূমিও নেই, সেখানে আমরা কোন যুক্তিতে বনভূমি নিধনে এত আগ্রাসী?



দ্য ইকোনমিস্টের তালিকায় থাকা বসবাসের অযোগ্য এই ঢাকা শহরের সমস্যার কোনো শেষ নেই। সমস্যার সমাধান না করে বরং সমস্যা বৃদ্ধিতেই ব্যস্ত নগর প্রতিনিধিরা। গবেষণায় দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকার প্রধান সমস্যাগুলো মধ্যে দুটি হচ্ছে, এক. সংস্কৃতি ও পরিবেশ। দুই. অবকাঠামো। এই দুটি সমস্যার ভেতর আরো যে সমস্যাগুলো লুকিয়ে রয়েছে তা হলো, জলবায়ু ও তাপমাত্রা, দুর্নীতির মাত্রা, সামাজিক বা ধর্মীয় প্রতিবন্ধকতা, খেলাধুলার সুযোগ, খাদ্য ও পানীয় দ্রব্য, ভোগ্যপণ্য ও সেবা, সড়ক-পরিবহন ব্যবস্থা, গৃহায়ন, জ্বালানী, পানি এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। এত সব সমস্যা নিয়ে খুঁড়িয়ে চলা এই নগরকে যেখানে মানুষের বসবাসের উপযোগী করার লক্ষ্যে নাগরিকদের নিয়ে যৌথভাবে কাজ করে যাওয়া প্রয়োজন সেখানে সবুজ সমারোহ ধ্বংসকারী এমন কর্মকাণ্ড কখনোই সুস্থ বিবেকের মানুষ মেনে নেওয়ার নয়। তাছাড়া হরিজনদের মতো যারা এই বাংলার এলিট বাঙালিদের ব্যবহার পেয়ে তিক্ত হয়ে আছেন সেই সব মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য ধীরে ধীরে সেই শীতলাশ্রয়ের জায়গাটুকুও খোওয়া যাবে নিশ্চিত।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই অপকর্মের বিরুদ্ধে আয়োজন করেছে শিল্প প্রদর্শনীর। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে কেবল একটি শ্রেণিই নয়। সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। দেশের নতুন প্রজন্ম, পরবর্তী প্রজন্ম যেন এই সবুজ সমারোহ গাছগাছালির ছায়াঢাকা পাখিডাকা পরিবেশ থেকে বঞ্চিত না হয়। সে লক্ষ্যে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এই নিধনযজ্ঞের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া আবশ্যক। জানতে পারলাম, সরকারি গণপূর্ত অধিদফতরের মাধ্যমে নিধনযজ্ঞ নাকি এখন রাতের অন্ধকারে ঘটানো হচ্ছে! একটুও কি বুঝতে পারছেন, তারা ধ্বংসের জন্য কী পরিমাণ মরিয়া হয়ে উঠেছে! আমাদের এখনই সময় রুখে দাঁড়ানোর। না হয় আমরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বিবেকহীনতার উপাধি নিয়ে বেঁচে থাকবো।

আসুন, আর নত না করি শির। নিজের জন্য, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কিছু একটা করি। আমাদের এক একজনের স্বল্প চেষ্টাই যৌথভাবে বৃহদাকার লাভ করবে।

(অনুরোধ থাকবে ব্লগারদের নিকট: দয়া করে বলুন, এই সবুজ সমারোহে ঘেরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সৌন্দর্য্য ফিরিয়ে আনতে আমাদের কোন কাজগুলো করা আবশ্যক বলে আপনি মনে করে!)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০২১ রাত ৯:০২
৩৭টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×